ওয়েব ডেস্ক: একটি গড়পড়তা ক্লাসরুম। মুহূর্তের মধ্যেই যুগলবন্দির রঙিন ক্যানভাসে পরিণত হল জীবনের ক্লাসরুম। টিচার স্টুডেন্টের (Teacher Student Marriage) চিরাচরিত সম্পর্ক বাঁধা পড়লে একত্রবাসের সমীকরণে। চক,ডাস্টার, বেঞ্চ, শ্রেণীকক্ষের দেওয়ালগুলোকে সাক্ষী রেখে কয়েকজন ছাত্রী মোবাইলে এক বিশেষ মুহূর্তের ছবি তুলতে উদ্যত। সামনে দাঁড়িয়ে তাঁদের গুরুমা তথা বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপিকা। না, গুরুগম্ভীর শিক্ষিকার সামনে শ্রদ্ধায়, শিষ্টাচারে মাথা নোয়াতে হয়নি ছাত্রীদের। তাঁদের সামনে লাজে রাঙা শিক্ষিকা নব পরিণীতার সাজে দাঁড়িয়ে। যাঁর চোখে মুখে স্বপ্নের রঙ ঠিকরে বেরোচ্ছে। ঠিক বিয়ের পিঁড়িতে বসা প্রতিটা কনের মতোই। পাশেই দাঁড়িয়ে ওই শিক্ষিকার স্নেহের ছাত্র। কিন্তু তাঁর গলায় বরমাল্য। দেখে মনে হচ্ছে মুখে সদ্যকৈশোর উত্তীর্ণ হওয়ার নির্মল হাসি। বয়সের মতো উচ্চতাতেও শিক্ষিকাটি তাঁর চেয়ে লম্বা। সেই শিক্ষিকাকে সবার সামনে সিঁদুর পরিয়ে দিলেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রটি (First year Student)। শ্রেণীকক্ষ পরিণত হল জীবনের ক্লাসরুমে। খানিকটা মাথা নীচু করে সিঁদুর পরবার সময় আবেশে ক্ষণিকের জন্য চোখ বন্ধ করে ফেললেন টিচার। উপস্থিত ছাত্রীরা নব আনন্দের উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন। করতালিতে মুখরিত দুই অসম বয়সের জীবন কাহিনী (Life Story)। বয়স বাধা মানল না। এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থাকল রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের প্রচারের জন্য খ্যাত নদীয়া। ম্যাকাউট বা রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Makaut) হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের ওই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল (Video Viral)।
সম্প্রতি খবরের শিরোনামে এসেছিল করোনার সময় এক অভিনেতা নাচ শিখতে গিয়ে শিক্ষিকার প্রেমে পরেন। এবং তাঁর সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। ইদানীংকালে সমাজের নিয়মের বেড়া ভেঙে অনেকে ধরনের বিয়ের ঘটনাই খবরের শিরোনামে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে সম্পর্কের সমীকরণও। তবে গুরুমা ও শিষ্যের এই সম্পর্ককে অনেকেই ভালো চোখে দেখেননি। বিশেষ করে পঠন পাঠনের পাঠভবনে ওই ঘটনাতে ভ্রু কুঁচকেছে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের। ইন্টারনেটে ভাইরাল ওই ভিডিও (যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি কলকাতা টিভি ডিজিটাল)। ঘটনায় নড়চড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। ওই বিভাগীয় প্রধানকে শোকজ করা হয়েছে। তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তবে ছাত্রটির বিষয়ে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: ‘রান্নার জিনিয়াস’ বেলা দের চরিত্রে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
মঙ্গলবার অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগে ওই ঘটনা ঘটেছে। ম্যাকাউটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই মহিলা অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ওই অধ্যাপিকা পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি বিবাহিত। বিয়ে খুব মূল্যবান জিনিস। এটা নিছকই মজার। অন্য অনুষ্ঠানের মধ্যেও এটা করা হয়েছে। সেটার ভিডিও কেউ তুলে ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে যদি এটা বিয়ে বিয়ে খেলা হয়ে থাকে তাহলে সাদা কাগজে নিজেদেরকে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে লেখা হল কেন? আপাতত ওই অধ্যাপিকাকে ক্লাসে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
দেখুন অন্য খবর: