জলপাইগুড়ি: জল্পেশ মেলায় ( Jalpesh Fair )হঠাৎ করেই দোকান বন্ধ! মেলায় কেন বিক্ষোভে নামলেন ব্যবসায়ীরা? জলপাইগুড়ি ( Jalpaiguri )জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন এই ঐতিহ্যবাহী মেলায় এবার এমন ঘটনা কেন ঘটল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। অব্যবস্থাপনা ও অতিরিক্ত খাজনার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা, যার জেরে মেলার অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনেই শুরু হয় বিক্ষোভ ( Protest )।
জল্পেশ মেলার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, মেলা কমিটি প্রয়োজনীয় পরিষেবা না দিয়েই অতিরিক্ত খাজনা নিচ্ছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, “মেলায় মহিলাদের শৌচাগার-সহ মৌলিক পরিষেবাগুলি নেই। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দোকানের জায়গার ভাড়া অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে। আমাদের বিক্রিও নেই, ফলে এত টাকা কোথা থেকে দেব!” ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মেলা কমিটির চাপেই তাঁদের ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার বড় বদল! তিন জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস
জল্পেশ মেলায় দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন পরিমল মণ্ডল। তিনি বলেন, “গত বছর ১,৫৫০ টাকার জায়গার দাম এবার চাওয়া হচ্ছে ৫,৪০০ টাকা! এত বেশি খাজনার চাপে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীরা নাজেহাল। বাধ্য হয়েই আমরা মেলা বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছি।” অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও একই সুরে কথা বলেন, তাঁদের দাবি, এত টাকা দিয়ে ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়।
মেলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ময়নাগুড়ির বিডিও এবং থানার আইসি। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মণ জানান, “বিক্ষোভের কারণ খতিয়ে দেখা হবে। ইজারাদার যদি অতিরিক্ত খাজনা নিয়ে থাকেন, তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক রৌনক আগরওয়াল বলেন, “স্থানীয় কিছু মানুষের উস্কানিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হবে।”
ইজারাদারের পাল্টা দাবি, কারসাজির অভিযোগ
জল্পেশ মেলা কমিটির ইজারাদার সত্যেন্দ্রনাথ শর্মার পাল্টা দাবি, “মেলায় কোনও সমস্যা নেই। জেলা পরিষদের নির্ধারিত মূল্যেই দোকানের জায়গার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি ব্যবসায়ীদের উস্কানি দিয়ে মেলার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।” শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ থামে এবং মেলা আগের মতোই চলতে থাকে।
জল্পেশ মেলা শুরু হয়েছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি। এবছর মেলার বরাত দেওয়া হয়েছে ২৭ লক্ষ টাকায়, যা দোকানের জায়গার খাজনা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই বিক্ষোভের পর মেলার পরিবেশ স্বাভাবিক হতে কতদিন সময় লাগবে, তা সময়ই বলবে।
দেখুন আরও খবর: