ওয়েব ডেস্ক: আজ মহাষষ্ঠী। মাটির প্রতীমা নয় রানী ভবানীর আমলে প্রতিষ্ঠিত কষ্টিপাথরের মূর্তিতেই দীর্ঘ ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে পুজিত হন মা দুর্গা। কষ্টিপাথরের মূর্তিতে দুর্গা পুজো নিয়ে এখনও মানুষের মনে রয়েছে অনেক গল্প কথা, এই পুজোকে কেন্দ্র করে আবেগে ভাসে নদীয়ার করিমপুরের দোগাছি গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় সেই সময় অধুনা নদীয়ার দোগাছি গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে মাছ ধরার সময় জনৈক ধীবর রাজবল্লভ দাসের মাছ ধরার জালে কষ্টিপাথররের দুটি মুর্তি উঠে আসে। তার একটি দশোভূজা মহিষমর্দিনী অপরটি বিষ্ণুমূর্তি।
কথিত আছে দেবী স্বপ্নাদেশ করলে ধীবর রাজবল্লভ সু-পণ্ডিত দ্বারা মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় অর্ধবঙ্গেশ্বরী হলেন মাতা রানীভবানী। তার কাছে এলাকার মানুষ কষ্টি পাথরর মূর্তির কথা জানালে তিনি তার সত্যাসত্য যাচাই করে দোগাছি গ্রামে বিষ্ণুপুরের ঘরানার ধাঁচে ছোট্ট বাংলা ইট দিয়ে অপূর্ব টেরাকোটা মন্দির তৈরি করে মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু তাই নয় দুর্গাপূজার উৎসব উপলক্ষে রাজকোষ থেকে পুজোর খরচের জন্য টাকা পাঠাতেন। সেইসঙ্গে মন্দির সংস্কার ইত্যাদি নানা খরচের জন্য একশ বিঘা জমিও দান করেছিলেন। বর্তমানে মন্দির এলাকায় দুই কাঠা জমি ছাড়া বাকি সব জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। অতীতে এই পুজো ঘিরে বিশাল মেলা বসতো, মায়ের মহিমার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসতেন। কথিত আছে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই পুজার নাম রাজবল্লভী পুজা নামে খ্যাতি লাভ করেছে এলাকায়। মুল মন্দির কালের পতনের সঙ্গে সঙ্গে অবলুপ্ত।
আরও পড়ুন: বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা পেয়েছে নদিয়ার এই পুজো মণ্ডপ
জানা গিয়েছে, বাংলা ১৩০৪ সালে প্রবল ভূমিকম্পে মুল মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়। স্থানীয় মানুষরা একটি ঘরে মূর্তি দুটিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দির ভেঙে যাওয়ার কারণে বাংলার ১৪২১ সালে এলাকার মানুষের সংগৃহীত অর্থে নতুন করে মন্দির তৈরি করে নতুন উদ্যোমে পুজো শুরু করেন। প্রত্যেকদিন নিয়ম করে এই মূর্তিতে পুজো হলেও দুর্গাপূজার সময় সমস্ত রিতি মেনে হওয়া পুজো আলাদা মাত্রা পায়। এই পুজো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় যেমন অসংখ্য মানুষ।
দেখুন খবর: