ওয়েব ডেস্ক: বিহারের ভোটে (Bihar Assembly Election Results)। কাজ করে গেল নীতীশ ম্যাজিক। জেডিইউ, আরজেডির মতো আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে পিছনে রেখে বিহারে এখন সবথেকে এগিয়ে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত ভোট গণনার যা আভাস, তাতে বড় জয়ের পথে এগোচ্ছে বিজেপি এবং জেডিইউয়ের শাসক জোট। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যত আসন প্রয়োজন, তার চেয়েও অনেক বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে শাসক জোট। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিহারে ১৯০ আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ জোট। বিরোধীদের মহাগঠবন্ধন এগিয়ে আছে ৪৯টি আসনে। গণনাপর্বের শুরুর দিকে প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি কয়েকটি আসনে এগিয়ে থাকলেও এখন আবার পিছিয়ে পড়েছে তারা।
অমিত শাহের দেওয়া পূর্বাভাসও পিছনে ফেলে আরও বড় জয়ের দিকে ধেয়ে চলেছে এনডিএ। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এনডিএ “১৬০টির বেশি আসন” পেতে চলেছে। কিন্তু গণনার ট্রেন্ডে দেখা যাচ্ছে, জোট পৌঁছে গিয়েছে ১৯০ আসনে। বিহারে আরও একবার প্রত্যাবর্তন হতে চলেছে এনডিএর। সব ঠিক থাকলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে বসতে চলছেন নীতীশ কুমার। পাটনার রাস্তায় নজর কাড়ল নতুন এক পোস্টার, ‘বিহার কা মতলব নীতীশ কুমার’ (Nitish Kumar)। আরও একবার ভোট, আরও একবার হার— এই শব্দবন্ধই যেন রাহুল গান্ধীর নামের সঙ্গে বেমানানভাবে সেঁটে গিয়েছে। অন্তত এমনটাই বিদ্রূপের সুরে দাবি করলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য।
আরও পড়ুন: বিহারের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে কে এগিয়ে? কে পিছিয়ে?
ভোটের গণনা চলছে বেলা বাড়তে বিহারের রাজনীতির ছবিটা এক্কেবারে স্পষ্ট। প্রসঙ্গত, বিহারের নির্বাচনী প্রটারে বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে মোদি বলেছিলেন, “বিহারের মানুষ ‘জঙ্গল রাজ’-এর সেই দিনগুলো কখনও ভুলতে পারবে না—পরবর্তী একশো বছরেও না। কীভাবে বিহার একসময় অপরাধ, নকশালবাদ ও দুর্নীতির আঁতুড়ঘর ছিল তাও বক্তব্যে তুলে ধরেছিলেন নমো। মোদি বলেছিলেন, “এনডিএ সরকার মহিলাদের সম্মান ও ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছে। নীতীশজী এবং এনডিএ সরকার বিহারকে জঙ্গল রাজ থেকে বের করে এনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। শুক্রবার গণনা শুরু হতেই ফলাফল খানিক সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, মহিলাদের ক্ষমতায়নকে হাতিয়ার করেই বিহারে জয়ের পথে নীতীশ।বিরাট ব্যবধানে জয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতে শুরু করেছে NDA।
ট্রেন্ড যেদিকে এগোচ্ছে তাতে উচ্ছ্বসিত বিজেপি সাংসদ দীপক প্রসাদ। তিনি জানালেন, “টাইগার এখনও বেঁচে আছে। ফলাফলে তা প্রমাণিত। এটা বিহারের মানুষের বিজয়। পরিষ্কার, এখানে ফের ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রতি মানুষের অগাধ আস্থা রয়েছে। বিজেপি–এনডিএ-র কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। উন্নয়নের গতি আরও বাড়বে। উন্নয়নের পথে ভরসা রেখেছে বিহার।” জেডিইউয়ের তরফে এক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘নীতীশ কুমার জঙ্গলরাজ, দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং বিরোধী দলের অহংকারকে বিহারের বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটিই সুশাসনের প্রকৃত প্রভাব, এটাই বিহারের আত্মবিশ্বাস।’
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে বিহারে প্রথম দফায় ভোট দিয়েছেন ৬৫.০৮ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ভোট দিয়েছেন ৬৮.৭৬ শতাংশ। দু’দফা মিলিয়ে বিহারে মোট ভোটদানের হার ৬৬.৯১ শতাংশ। যা গতবারের তুলনায় ৯.৬২ শতাংশ বেশি। অতীতে কখনই এই হারে বিহারের মানুষ ভোট দেননি। এর আগে বিহারে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছিল ২০০০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, ৬২.৫৭ শতাংশ। ১৯৯৮ সালের লোকসভা ভোটে বিহারে ভোট দিয়েছিলেন ৬৪.৬০ শতাংশ ভোটার। ঐতিহ্য বজায় রেখে এবারেও বিহারে পুরুষদের অনুপাতে মহিলারা বেশি সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন। প্রায় ৭১.৬ শতাংশ।
দেখুন ভিডিও







