ওয়েব ডেস্ক: ভারত–পাকিস্তান সংঘাতকে (India-Pakistan Conflict) কাজে লাগিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে চেয়েছিল চীন (China)! সম্প্রতি ইউএসসিসি-র বার্ষিক রিপোর্টে (USSC Annual Report) উঠে এসেছে এই ভয়ঙ্কর তথ্য। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মে মাসে দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে সামরিকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল জিনপিংয়ের দেশ। এই সময় চীন নাকি অনেক আধুনিক যুদ্ধযান, মিসাইল এবং গোয়ান্দা প্রযুক্তির ‘রিয়েল-টাইম’ পরীক্ষা চালিয়েছে।
সেই সময় ভারত যখন পাল্টা হামলা চালায়, তখন পাকিস্তান যে চীনা অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্যের উপর নির্ভর করেছিল, সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে রিপোর্টে। যদিও পাকিস্তান এসবকে বরাবরের মতোই অস্বীকার করেছে এবং চীনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এখন একনজরে দেখে নিন, ইউএসসিসি-র বার্ষিক রিপোর্টে কী বলা হয়েছে, যাতে ভারত-পাক সংঘাতে চীনের ‘প্রক্সি ওয়ার’ চালানোর ছবিটা স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইজরায়েলের এয়ার স্ট্রাইকে গাজায় মৃত্যুমিছিল! কী ভয়াবহ অবস্থা দেখুন
- USSC-র রিপোর্ট দাবি করেছে, ভারত-পাক সংঘাতকে চীন নিজেদের আধুনিক অস্ত্র, রাডার, নজরদারি ও ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমের বাস্তব যুদ্ধ-পরীক্ষার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী নিজেদের অস্ত্র বিক্রির পথকেও প্রশস্ত করেছে। তথ্য বলছে, ২১০৯ এবং ২০২৩-এর মধ্যে পাকিস্তান যেসব অস্ত্র কিনেছিল, তার ৮২ শতাংশই এসেছিল বেজিং থেকে।
- ভারতীয় সেনার দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে ভারতের সামরিক অবস্থান সংক্রান্ত ‘রিয়েল-টাইম’ তথ্য দিচ্ছিল চীন, যেটিকে একপ্রকার মান্যতা দিয়েছে USSC-র রিপোর্ট।
- ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ব্যবহৃত HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, PL-15 এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল, J-10 যুদ্ধবিমান আসলে চীনের তৈরি। USCC-র দাবি, এই তিনটি অস্ত্র ও প্রযুক্তি প্রথমবারের জন্য সক্রিয় যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে এই সময়েই।
- এই সংঘাতের আগে পাকিস্তান ও চীন একত্রে একাধিক সামরিক মহড়া করেছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর–ডিসেম্বরে Warrior-VIII ছিল দুই দেশের যৌথ সন্ত্রাসবাদবিরোধী মহড়া। এরপর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীনের PLA Navy-র সঙ্গে পাকিস্তানের AMAN-এর যৌথ নৌ-মহড়া হয়। রিপোর্ট বলছে, এগুলি সংঘাতের আগে চীনের সুপরিকল্পিত সামরিক প্রস্তুতিরই ইঙ্গিত।
- শুধু সংঘাতের আগেই নয়, সংঘাতের পরেও পাকিস্তানের কাছে বিশাল ডিফেন্স ডিলের প্রস্তাব আসে চীনের তরফে। USSC রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫-এর জুনে চীন পাকিস্তানকে ৪০টি J-35 ফিফথ-জেনারেশন জেট, KJ-500 AEW&C বিমান এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর সংঘাতের পরপরই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেটে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা যায়, যা দুই দেশের সামরিক আঁতাতকে স্পষ্ট করে।
- ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পর চীনা দূতাবাসগুলি প্রকাশ্যে চীনা অস্ত্র ব্যবহারের সাফল্য প্রচার করেছে এবং পাকিস্তান চীনা অস্ত্র দিয়ে ভারতীয় ‘রাফাল’ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবিও করেছে প্রকাশ্যে। এতে বিভিন্ন এআই ছবি এবং গেমের ছবির ব্যবহার হয়েছে, যেগুলির সঙ্গে চীনের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
- USCC বলছে, চীনা কর্মকর্তারা ইন্দোনেশিয়াকে রাফাল যুদ্ধবিমান না কিনতে রাজি করিয়েছেন, যাতে নিজেদের J-35 যুদ্ধবিমান বিক্রির পথ প্রশস্ত হয়।
- রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, চীন বিশ্বব্যাপী অস্ত্র রফতানি বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে ভারত-পাক সংঘাতকে ব্যবহার করেছে।
দেখুন আরও খবর:







