ওয়েব ডেস্ক: ঢাকার (Dhaka) ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি (Sheikh Mujibur House) আজ যেন এক জীবন্ত ধ্বংসস্তূপ। ভেঙে পড়া বাড়িটির ইট-পাথর, লোহার কাঠামো—সবকিছুই যেন এক বিপর্যস্ত ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। একসময় যেখানে বাংলাদেশ (Bangladesh) গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হত, আজ সেই বাড়ি থেকেই কেউ কেটে নিয়ে যাচ্ছে লোহার রড, কেউ নিয়ে যাচ্ছে ভাঙা দরজা-জানালা, কেউবা ব্যাগভর্তি লোহার টুকরো। এ যেন লুটতরাজের পুনরাবৃত্তি। বাংলাদেশের এক শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর ছবি।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এক ব্যক্তি প্রায় ছয় কেজি লোহার রড কেটে নিয়ে গেছেন, যেগুলি তিনি বাজারে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, এই টাকায় পরিবারের সদস্যদের একটু ভালো খাবার কিনে দেবেন। আরেকজন মহিলা একটি ব্যাগে লোহার টুকরো সংগ্রহ করেছেন, যা দোকানে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে সম্পূর্ণ অক্ষত ইটও নিয়ে যাচ্ছেন।
আরও খবর: শেখ মুজিবের বাড়ি ধ্বংসকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে কটাক্ষ ভারতের
তবে শুধু বাড়িই নয়, লুটপাটের শিকার হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরও। প্রতিবেদন অনুসারে, ছ’তলা বিশিষ্ট এই ভবনেও বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়ে এবং মূল্যবান বইসহ বিভিন্ন স্মারক চুরি করে নিয়ে যায়। কার্টনে করে বই নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। এই বইগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে লেখা বিভিন্ন চিঠি, দুর্লভ নথিপত্র, এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের লেখা বইও ছিল বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার জন্য প্রথমে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সাম্প্রতিক ভাষণকে দোষারোপ করা হলেও, পরে মহম্মদ ইউনুসের (Mohammed Yunus) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের অপচেষ্টা শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’’ আরও জানানো হয়, ‘‘যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিচারের আওতায় আনা হবে।’’ কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই কড়া বার্তা সত্ত্বেও ৩২ নম্বর থেকে লুটপাট থামেনি।
দেখুন আরও খবর: