ওয়েব ডেস্ক: ওঁদের জীবনের কি কোনও দাম নেই? পেটের দায়ে কাজে আসেন। মাটির তলায় নালা পরিষ্কার (Clear) করতে পাঠানো হয়েছিল কোনও নিরাপত্তা (security) ব্যবস্থা ছাড়াই। চেন্নাইয়ে (Chennai) শ্রীধর (Sridhar) নামে ওই সাফাইকর্মীর ২০০০ সালে নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছিল নালা থেকে। তাঁর মৃত্যুর ২৪ বছর পর নিকটজনকে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের (Compensation) নির্দেশ মাদ্রাজ হাইকোর্টের (Madras High Court)। সমাজের অসংবেদনশীল ঘটনায় চর্চায় এল হতভাগ্য মানুষগুলোর সুরক্ষাহীন কাজ। আদালতের নির্দেশ, এমন মৃত্যু অসংবেদনশীল সমাজের নরহত্যার চেয়ে কিছু কম নয়। এই ‘প্রথা’ চালু রাখার অর্থ মানবাধিকারের চূড়ান্ত অবমাননা। এমন অভিমত দিয়ে সমাজের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৃতের পরিবারেরর কাছে এমন কাজ করানোর জন্য ক্ষমা চেয়ে চিঠি লেখার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ডি ভারত চক্রবর্তী।
২৪ বছর আগে চেন্নাই মেট্রোপলিটন ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড সিউয়ারেজ বোর্ডের জন্য মাটির নীচে নালা সাফাই করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ২২ বছরের যুবকের। সেই ঘটনার জেরে হওয়া মামলায় ক্ষতিপূরণের টাকা চিঠির সঙ্গে ডিমান্ড ড্রাফট সহ পাঠাতে নির্দেশ।
আরও পড়ুন: ২৫ বছর জেলে থাকা বন্দিকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট
আদালতের বক্তব্য, নগরবাসী তাঁদের যাবতীয় বর্জ্য নালায় ফেলছেন। আর সেই নালা সাফাই করতে হতভাগ্যদের কাজে লাগানো হচ্ছে। যা সংবেদনশীলতাহীন সমাজের দ্বারা নরহত্যার চেয়ে কিছু কম নয়। শরীরের রক্তবাহী নালিকাগুলিকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যে চেষ্টা আমরা চালাই, সেই একই প্রচেষ্টা কেন সমাজের বর্জ্যবাহী নালাগুলির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না! আর কত প্রাণের বিনিময় সমাজের সেই বোধ হবে? ওই যুবকের যখন মৃত্যু হয়, তখন দেশে চালু ছিল ১৯৯৩ সালের এমপ্লয়মেন্ট অফ ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জার্স এন্ড কনস্ট্রাকশন অফ ড্রাই ল্যাট্রিন্স(প্রহিবিশন) আইন। মন্তব্য বিচারপতির। ২০০০ সালে ওই পুরসভার এক ঠিকাদারের হয়ে নালা সাফাই করতে নেমে সন্তানের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে পিতা কান্নাইয়ান ২০০২ সালে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ডেপুটি কমিশনার অফ লেবারের কাছে আবেদন করেন । ২০০৭ সালে আবেদনকারীর অনুপস্থিতির কারণে আবেদন খারিজ হয়। ২০০৮ সালে আবেদন গৃহীত। কিন্তু ওই বছরেই একই কারণে আবেদন খারিজ। ২০০৯ সালে ফের আবেদন। কিন্তু দেরির কারণে আবেদন বাতিল। অগত্যা ২০১০ সালে মামলা হাইকোর্টে। কিন্তু সেখানে ১৪ বছর হিমঘরে পড়ে থাকে সেই আবেদন। এই দেরির কারণেও ক্ষুব্ধ ও হতাশ আদালত।
দেখুন অন্য খবর: