কলকাতা: জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গে শীতের প্রকোপ চরমে পৌঁছেছে। কলকাতায় শনিবার মরশুমের শীতলতম দিন হিসেবে তাপমাত্রা নেমেছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় শীতের তীব্রতা বজায় থাকবে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায়, যেখানে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কলকাতার মতো শহরে শীতের এমন রূপ বিরল, যা শীতপ্রেমীদের জন্য বাড়তি আনন্দের হলেও দিনমজুর ও পথবাসীদের জন্য তা চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং আশেপাশের এলাকাগুলিতে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে। সেখানকার বাসিন্দাদের আরও বেশি গরম পোশাক এবং পর্যাপ্ত সতর্কতার প্রয়োজন পড়ছে। এই এলাকাগুলিতে শীতের প্রকোপে পর্যটকদের আনাগোনা কিছুটা কমলেও, যারা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এটি এক বিরল অভিজ্ঞতা হতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রশ্নের মুখে চিকিৎসক শান্তনু সেনের ডিগ্রি! কী বলছেন প্রাক্তন সাংসদ?
দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার ওঠানামা লক্ষ্য করা গেলেও শীতের আমেজ থেকে রেহাই মিলছে না। রবিবারের পর থেকে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও, সপ্তাহের শেষের দিকে তা আবার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং কলকাতার মতো এলাকাগুলিতে শীতের অনুভূতি বেশ জোরালোভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার মতো কিছু এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে, যা শীতের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
আবহাওয়া দফতরের মতে, এই ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে কৃষি ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে। তাই কৃষকদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে শস্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমানো যায়। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় সাবধানে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত যারা অফিস বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বেরোচ্ছেন, তাদের গরম পোশাক এবং অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
শীতের এই তীব্রতা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য একদিকে আনন্দ, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জ বয়ে আনছে। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও, শীতজনিত অসুস্থতা এবং দৈনন্দিন জীবনের ব্যাঘাত এড়াতে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য এই সময়ে সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আবহাওয়ার আরও আপডেট পেতে নিয়মিত খবর অনুসরণ করার পরামর্শ দিচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
দেখুন আরও খবর: