নয়া দিল্লি: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর (Delhi Assembly Election) মাত্র কয়েকদিন আগে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর দিল্লির বর্তমান সরকার এবং আম আদমি পার্টি (আপ)-এর নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে দিল্লির নাগরিকদের মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং দাবি করেছেন যে, এই পরিস্থিতি ভারতের রাজধানী হিসেবে দিল্লির মর্যাদার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জয়শঙ্করের এমন মন্তব্য নির্বাচনী আবহকে আরও উত্তপ্ত করেছে এবং রাজনৈতিক মহলে জোরালো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
দিল্লির বর্তমান সরকার এবং বিশেষত আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে জয়শঙ্কর অভিযোগ করেছেন যে, দিল্লির নাগরিকরা ন্যূনতম মৌলিক পরিষেবা যেমন ঘর, রান্নার গ্যাস, পানীয় জল ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। তিনি বলেন, “আমি যখন বিদেশে যাই, তখন লজ্জা লাগে বলতে যে দিল্লির নাগরিকরা এসব পরিষেবা পাচ্ছেন না।” জয়শঙ্করের এই মন্তব্য তাঁর বিদেশি মঞ্চে দেশের শোচনীয় অবস্থা তুলে ধরার প্রসঙ্গে এসেছে। তাঁর মতে, দিল্লির নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, যা ভারতীয় জনগণের জন্য একটি গভীর দুঃখের বিষয়।
আরও পড়ুন: ভোট ৫ ফেব্রুয়ারি, স্বাধীন পর্যবেক্ষকের দাবিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি কেজরির
জয়শঙ্কর আরও অভিযোগ করেন, “দিল্লি সারা দেশে উন্নয়নের মডেল হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু গত ১০ বছরে দিল্লি প্রকৃতপক্ষে উন্নয়ন না হয়ে আরও পিছিয়ে পড়েছে।” তাঁর মতে, আপ সরকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলে দিল্লির সাধারণ মানুষ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি দেশের শীর্ষ নগরীর কাছে উন্নয়ন ও পরিষেবার মানের ক্ষেত্রে আরও ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা করেছিলেন, কিন্তু তা দেখা যাচ্ছে না।
বিজেপি নেতারা জয়শঙ্করের মন্তব্যকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছেন এবং দিল্লি সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, আপ সরকারের অধীনে দিল্লি নাগরিকদের মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের অবহেলা চলছে। অপরদিকে, আম আদমি পার্টি এই মন্তব্যগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে এবং তাদের সরকারের সাফল্য তুলে ধরেছে। আপ নেতাদের দাবি, তাঁদের সরকার দিল্লির উন্নয়নে অবদান রেখেছে এবং নাগরিকদের সুবিধার জন্য নানান প্রকল্প শুরু করেছে।
জয়শঙ্করের এমন মন্তব্য দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক উত্তাপ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের সময় এই ধরনের সমালোচনায় ভোটারদের মনোভাব প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন, যেখানে ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। এই নির্বাচনে জয় পেতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের অবস্থান ও রাজনীতি তুলে ধরছে। নির্বাচনের ফলাফল দিল্লির ভবিষ্যৎ রাজনীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দেখুন আরও খবর: