কলকাতা: বিশ্ব জয় করেছে ভারতীয় মেয়েরা। গোটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে ত্রিকেট শুরু মাত্র ছেলেদের খেলা নয়, সকলের খেলা। বিশেষ করে রবিবার হরমনপ্রীত, স্মৃতি মন্ধানাদের বিশ্বজয়ের পর ক্রিকেট আক্ষরিক অর্থেই এ দেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের খেলা। দীপ্তি শর্মার বলে ফাইনালের শেষ ক্যাচটি নিয়েছেন হরমনপ্রীত। এই কৃতিত্ব হয়তো অধিনায়কেরই প্রাপ্য ছিল। এই জয়ের কৃতিত্ব সদ্য বিশ্বজয়ী হরমনপ্রীত কৌরদের (Harmanpreet Kaur) হেডস্যেরও, অমল মুজুমদারের (Amol Muzumdar)।

মহিলাদের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নজির গড়েছে ভারত। এই প্রথম বিশ্বকাপ জিতল ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল (2025 Women’s Cricket World Cup)। ভারতের মহিলা বিগ্রেডের ভারতীয় মহিলা দলের কোচ অমল মুজুমদার (Amol Muzumdar)। চ্যাম্পিয়ন হয়েই গুরুকে শ্রদ্ধা জানালেন ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত। পা ছুঁলেন হরমনপ্রীত আবেগে ভাসছেন। নিজের খেলোয়াড় জীবনে ছিলেন ধুন্ধুমার ব্যাটার, কিন্তু সুযোগ মেলেনি ভারতীয় টিমে। দেশকে চ্যাম্পিয়ান করে তৃপ্তি অমলের। স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল ঝুলন গোস্বামী-র আমলেই সেই স্বপ্ন পূরণ হল হরমনপ্রীতের আমলেই। বিশ্বজয় করে সেই ঝুলনের হাতে ট্রফি তুলে দিলেন হরমনপ্রীত। আনন্দে আবেগে ভাসছে সারা দেশ।

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ট্রফি জড়িয়ে ঘুম বীরাঙ্গনাদের, ছবিতে দিলেন বড় বার্তাও
অমল মজুমদার ক্রিকেটের হাতেখড়ি নেন কিংবদন্তি কোচ রমা কান্ত আচরেকরের কাছে, যাঁর হাত ধরে বিশ্ব চিনেছিল সচিন তেন্ডুলকরকে। তাঁর কেরিয়ার শুরু হয় রঞ্জি ট্রফিতে।অভিষেক ম্যাচেই তিনি হাঁকান ২৬০ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়া ইনিংস। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১১ হাজারের বেশি রান করা অমল মজুমদার কখনও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি। তার কারণ, ভারতের মিডল অর্ডারে ছিলো তখন রাহুল দ্রাবিড়-ভিভিএক্স লক্ষ্মণের মতো ক্রিকেটাররা। যাদের ভিড়ে কখনও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারেননি অমল। অমল মজুমদারের ক্যারিয়ারে ১৭১টি প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ, ১১,১৬৭ রান এবং ৩০টি সেঞ্চুরি রয়েছে। তবুও তিনি কখনও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাননি। সেই অমলের তত্ত্বাবধানে হরমনপ্রীত, দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষ, স্মৃতিরা বিশ্বকাপ জয় করল।

হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন দল রবিবার নভি মুম্বইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস লেখে। তৃতীয় বার ফাইনালে পৌঁছে এ বারই প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল ভারত। বিশ্বজয়ের মূল কারিগর হওয়ার কৃতিত্ব যাঁকে বার বার দিয়েছেন হরমনপ্রীতেরা। মাঠে যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল জয় উদ্যাপন করছিল, তখন অমলের চোখেও জল। জয়ের পরেই অমলের দিকে ছুটে যান হরমন। মাথা নত করে পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন কোচকে। এর পর অমল তাঁকে তুলে নিয়ে আলিঙ্গন করেন। গুরু-শিষ্য— দু’জনের মুখেই জয়ের চওড়া হাসি।
অন্য খবর দেখুন







