Friday, November 14, 2025
HomeScrollAajke | CAA আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার অন্ধকারে, দায় নেবে বিজেপি?
Aajke

Aajke | CAA আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার অন্ধকারে, দায় নেবে বিজেপি?

মতুয়াদের ভিতরও SIR নিয়ে কিন্তু দুশ্চিন্তার ঝড় বইছে

CAA SIR, ভোটের কারবার! বিজেপি (BJP)-বিরোধীরা তো একথাই বলে চলেছেন সেই কবে থেকে। আর এই নিয়ে আগুনও ছড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। এই দেখুন না, SIR লাগু হবে এই ঘোযণার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে আত্মহত্যার ঘটনা। দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ বাদ নেই কেউ। বিজেপি যাকে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বলে, সেই মতুয়াদের ভিতরও SIR নিয়ে কিন্তু দুশ্চিন্তার ঝড় বইছে। যে ঝড় আছড়ে পড়তে পারে বঙ্গবিজেপিরই নেতাদের উপর। কান টানলে মাথা আসে, সেরকমই SIR টানলে CAA-ও এসে পড়ছে। হ্যাঁ, SIR নিয়ে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলা খারি়জ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কী নিয়ে হয়েছিল মামলাটা? CAA বা নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর নথি যেন SIR-এর ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হয়- এই আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল একটি সংগঠন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয় আবেদন করলেই কিন্তু নাগরিকত্বের অধিকার জন্মায় না। যারা আবেদন জানিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের ইস্যু আলাদা। একেক জনের একেক রকম সমস্যা। ফলে জনস্বার্থ মামলায় কমন ইন্টারেস্টের ইস্যুতে তার বিচার করা সম্ভব নয়। এর ফলে কিন্তু হাজার হাজার মানুষের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। সোমবার মামলাকারীদের আইনজীবি মৈনাক বসু আদালতে দাঁড়িয়ে জানান, যেসব আবেদন ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে তাদের ভবিষ্যত কী?

এখন এই ভোটের বাজারে প্রশ্ন হচ্ছে সিএএ নিয়ে বিজেপি ঠিক কী ভেবেছিল? অমিত শাহ যখন পারলে গোটা দুনিয়ার হিন্দুকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছিলেন, তখনই তো বোঝা গিয়েছিল বিজেপির ধান্দাটা ঠিক কী? সোজা কথায় বিজেপি চেয়েছিল, দুহাতে হিন্দু নাগরিকত্ব বিলিয়ে ভোটের বাক্সে ফসল তুলতে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এন্যুমারেশন ফর্মে সিএএ আবেদনকারীদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট অপশন যে রাখা হয় নি, তার থেকেই এই ভোট হাতানোর রাজনীতিটা অনেকটাই পরিস্কার হয়ে যায়। কেন না, আইনজীবি মৈনাক বসুর মতে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলতে এমন ব্যক্তিদের বোঝায় যিনি কোনও বৈধ পাসপোর্ট ছাড়া অনুপ্রেবেশ করেছেন অথবা নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এ দেশে থেকে গিয়েছেন৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মেনে 2014 সালের 31 ডিসেম্বরের মধ্যে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের যে সমস্ত নাগরিক বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছেন তাঁদের অনুপ্রেবেশকারী বলা যায় না৷ পাসপোর্ট নেই বলেই তাঁরা অনুপ্রবেশকারী হয়ে যান না ৷ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এনুমারেশন ফর্মে CAA আবেদনকারীদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট অপশন রাখা হয়নি। তাই এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া জরুরি।

আরও পড়ুন: Aajke | শুভেন্দু অধিকারী ফাঁসবেন সংশোধিত ফাইনাল ভোটার তালিকা বের হবার পরে

আর কমিশন কী জানাচ্ছে? নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী সৌম্য মজুমদার জানিয়েছেন, “নাগরিকত্ব প্রদানের এই পুরো প্রক্রিয়া কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন। কাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে আর কার বাতিল করা হবে তা কেন্দ্রীয় আইনের এক্তিয়ার ভুক্ত। এখানে কমিশনের কিছু করার নেই।” আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী মৈনাক বসুও বলেছেন, “কমিশন মনে করে, কোনও একজন ব্যক্তি নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলে তবেই তাঁর নাম (SIR) লিস্টে তোলা সম্ভব ?” তাহলে কেন্দ্র কী করবে? ধরবে না ছাড়বে? ? যদি ছাড়ে কোথায় যাবে হাজার হাজার মানুষ।

এখন মজা হল, খেলা কিন্তু ব্যুমেরাং হয়ে যাচ্ছে। যার শিল যার নোড়া তারই দাঁতের গোড়া ভাঙতে চলেছে বোধহয়। বিজেপিরই এক বিধায়ক প্রশ্ন তুলেছেন, সিএএতে আবেদনের পর ভোটার তালিকাতে নাম উঠবে তো? যারা সিএএর জন্য আবেদন করেছেন তারা কী আদৌ ২৬-এর ভোট দিতে পারবেন তো? উত্তরবঙ্গের এই বিধায়ক একথাই জানতে চেয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের কাছে। সূত্রের খবর, ওই বিধায়ক আরও একটা বিপজ্জনক কথা বলেছেন। তার বক্তব্য যারা সিএএর জন্য আবেদল করেছেন তারা যদি ভোট দিতে না পারেন তাহলে নির্বাচনে জেতার আশা তো দূর অস্ত, এলাকাতেই ঢোকা যাবে না। এর জবাবে বঙ্গবিজেপির মাথারা কী বলেছেন? তারা জানিয়েছেন গোটা বিষয়টাই দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন। সময়মতো তারা অবশ্যই এর বিহিত করবেন। তাহলে বিষয়টা কী দাড়াচ্ছে? সিধে বাংলায় এই, হাজার হাজার মানুষের ভবিষ্যত অন্ধকারে। বিজেপি কী এর দায় নেবে? আসুন দেখে নি এনিয়ে মানুষ কী বলছে?

বিজেপি বিধায়ক দলের মাথাদের সামনে যা বলেছেন, সেই একই কথা কিন্তু বলেছেন সিএএ মামলাকারীদের আইনজীবি মৈনাক বসু। মামলাকারীরা আবেদন করেছিল সিএএ আবেদনের রশিদ অন্তত SIR-এর ক্ষেত্রে গ্রাহ্য করা হোক। কিন্তু হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তো বলেই দিয়েছে এই মামলায় বিশেষ একটি নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে কী করবে বঙ্গবিজেপি। শুভেন্দু সুকান্ত শমীকের এসব নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলে। তাদের কেউ ক্ষমতাশালী আবার কেউ ইন্টেলেকচুয়াল। কিন্তু মাঝখান থেকে ফেঁসে যাচ্ছে বিজেপির স্থানীয় নেতারা। উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়কের প্রশ্নটাই উঠে আসছে ফের। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি CAA নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখে, কী হবে এই স্থানীয় বিজেপি নেতাদের? এলাকায় ঢুকতে পারবেন তো?

Read More

Latest News