কলকাতা: লালুপ্রসাদ যাদব (লালু) (Laluprasad Yadav) ভারতীয় রাজনীতিতে এক বর্ণময় চরিত্র। জেল যাপন, কিডনি প্রতিস্থাপন, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সেভাবে ফ্রন্টফুটে দেখা যায় না। তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদবই আরজেডি (RJD) দল পরিচালনা করেন। লালুর একেকটা কথায় হাসির রোল উঠত। রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করত। সে সংসদে রেলের বাজেট পেশের সময়ই হোক বা বিহারে হেমা মালিনীর গালের মতো মসৃণ রাস্তা করে দেওয়ার কথা বলাই হোক। বৃহস্পতিবার লালু আকস্মিকই বললেন, নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) জন্য ইন্ডিয়া জোটের দরজা খোলা। ব্যাস। পাটনার আকাশে আলোড়ন। এটা কি তবে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা? এগিয়ে আসছে বিহার বিধানসভা ভোট। তার আগে এই লালু-বার্তার গভীর রাজনৈতিক তাৎপর্য থাকতে পারেও বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
বিহারের রাজনীতিতে চির প্রতিদ্বন্দ্বী নীতীশ, লালু। জয়প্রকাশ নারায়ণের একদা দুই শিষ্য পরে আলাদা শিবিরে বিভক্ত হয়ে যান। নিজেরাই হয়ে ওঠেন ভিন্ন ধারার রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিষ্ঠান। তবে তার পরেও জোট করে হিন্দি বলয়ের পূর্বের এই রাজ্যে সরকার গড়েছে লালু-নীতীশ। ২০১৫ সালে ও ২০২২ সালে বিজেপি ছেড়ে লালুর সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ। যেভাবে বারবার জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ দল বদলে কুর্সি আঁকড়ে থেকেছেন, তাতে তিনি যে কোনও দিন যা কিছু করতে পারেন সেটা স্বাভাবিক বলে মনে করেন রাজনীতর পর্যবেক্ষকরা। কিন্তু, এমনটা হলে শুধু বিহারের রাজনীতিতে তা সীমাবদ্ধ থাকবে না। কারণ কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার টিকে রয়েছে নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর উপর ভর করে। নীতীশ এনডিএ ছেড়ে লালু বা ইন্ডিয়া জোটের হাত ধরলে টলমল করবে মোদির গদি।
আরও পড়ুন: ‘ভাষণ বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রীকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে বলুন’, আক্রমণ অতিশীর
গত ২০ বছরে মোট চারবার জোট বদলে মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। এবার ফের বিধানসভা ভোটের আগে কি জোট বদলাবেন? তবে লালুর এই প্রস্তাবের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে নীতীশ খানিকটা বিরক্তির সুরেই সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা কি বলতে চাইছেন? উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদির এনডিএর বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোট গড়ার অন্যতম কারগির ছিলেন নীতীশ কুমার। এই জোটের প্রথম বৈঠকও পাটনায় হয়েছিল। যদিও পরে তিনি রং বদলে এনডিএতে ফিরে যান।
দেখুন অন্য খবর: