কলকাতা: ট্যাংরা (Tangra Unnatural Death) কাণ্ডে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ময়নাতদন্তের (Post Mortem Report) প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে ট্যাংরার দে পরিবারের দুই বউ ও নাবালিকা মেয়েকে। কারা করল খুন। তবে কি প্রণয় ও প্রসূন দে কী নিজেদের স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যা করেছেন। আর্থিক অনটনে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে তারা বাধ্য হয়েছেন? যদিও সেই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। তবে রহস্যের জট খুলতে চলছে তদন্ত। এদিন ট্যাংরার চিত্তনিবাসে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা (NRS Forensic Team Tangras)। ওই বাড়িতে নমুনা সংগ্রহে গেলেন এনআরএসের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট হয়েছে, তাঁদের তিন জনকেই খুন করা হয়েছে। নাবালিকা প্রিয়ম্বদার মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়, অন্যদিকে রোমি এবং সুদেষ্ণার গলা আর হাতের শিরা কাটা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ট্যাংরার ওই ব্যবসায়ী পরিবারের বাড়িতে লাগানো সব কটি সিসি ক্যামেরারই প্লাগ খোলা। ফলে কোনও ভিডিওয় হার্ড ডিস্কে আপলোড হয়নি। এমনই খবর পুলিশ সূত্রে। প্রণয় ও প্রসূন দে-র চারতলা বাড়িতে মোট আটটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সদর দরজা থেকে পিছনের যে জায়গা থেকে ছাদে পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু তার সবকটিরই প্লাগ খোলা! স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়ছেন তদন্তকারীরা। দুই ভাইয়ের বয়ানে যখন বহু অসঙ্গতি মিলছে, তখন তদন্তের আলো ফেলতে পারত সিসিটিভি ফুটেজ। শেষ পরিণতির আগে কী ঘটেছিল চিত্ত নিবাসে? তা নিয়ে এখন অন্ধকারে তদন্তকারীরা। যদিও ব্যবসায়ী পরিবারের পাশের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন, রাত ১২.৫৪ মিনিটে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল দুই ভাই।
আরও পড়ুন: শাহজাহানের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে সিবিআই তদন্ত?
প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই খুনের নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে! পুলিশ জানিয়েছে, রক্তমাখা ছুরি পাওয়া গিয়েছে তিনতলার ঘরে। তিনজনের দেহই পড়েছিল দোতলায়। ট্যাংরার ‘চিত্তনিবাসে’ ইতিমধ্যেই পৌঁছেছেন এনআরএস হাসপাতালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। নমুনাও সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। উদ্ধার হওয়ার পেপার কাটিং ছুরিতে আঙুলের কার ছাপ, তা খতিতে দেখছে তদন্তকারীরা। প্রণয় ও প্রসূন দের মধ্যে কারও আঙুলের ছাপ রয়েছে কিনা তাও দেখা হবে।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, বাজারে প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকার কাছাকাছি করের বোঝা ছিল অভিজাত দে-পরিবারের দুই ভাইয়ের। অন্তত ছয়টি ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য সংস্থার থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তারা। আর সেই বিপুল দেনা মেটাতেই ঘাম ছুটে যাচ্ছিল তাদের। জানা গিয়েছে, দুর্গা পুজোর পর থেকেই ব্যবসায় ক্ষতি হতে শুরু হয়েছিল প্রণয়-প্রসূনের। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে কারখানা ছিল। তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) বাড়িও ব্যবসা ছিল। সেই বাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এমনই শান্তিনিকেতনের ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে কি সেই পাওনা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে খুন ও আত্মহত্য়ার ছক কষেছিলেন দুই ভাই? তা জানতে তদন্ত নেমেছে পুলিশ।
অন্য খবর দেখুন