ওয়েবডেস্ক- দায়িত্বটাই বড় ছিল মহম্মদ শফির কাছে। সেই দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে আর কোনওদিন বাড়ি ফিরবেন না শফি। ফরিদাবাদের বাজেয়াপ্ত করার বিস্ফোরক ব্যাগ সেলাই করতে পুলিশ আধিকারিকেরা তাঁকেই ডেকে পাঠিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের নওগাম থানায় মজুদ করা বিস্ফোরকে বিরস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণেই মৃত্যু হয়েছে ৫৭ বছরের প্রৌঢ় মহম্মদ শফির।
জানা গেছে, ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের বেশ কিছুটা রাখা হয়েছিল নওগাম থানায়। সেই বিস্ফোরক ছোট ছোট ব্যাগে করে ভরে রাখার পরিকল্পনা করেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের নওগাম থানার পুলিশ কর্মীরা। তার জন্য ডাক পড়েছিল মহম্মদ শফির। শুক্রবার রাতে যখন বিস্ফোরণ হয়, তখন থানাতেই ছিলেন শফি। তিনি পেশায় ছিলেন দর্জি। হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ নওগাম থানায় মজুদ রাখে।
সেটাই রাতে পরীক্ষা করে দেখছিলেন পুলিশ কর্মী সহ ফরেনসিক বিভাগের কর্মীরা। তখনই এই বিস্ফোরণ হয়। ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় শফির শরীর। ঘটনার দিন রাতে খাবার জন্য একবার বাড়ি ফিরেছিলেন। তার পরেই ফের থানায় চলে যান তিনি। অভিশপ্ত রাতে শফি যখন থানায় যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন, সেই সময় মেয়ে বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বাবা বাইরে বড় ঠান্ডা, আজ আর যেও না। কিন্তু মেয়ের অনুরোধ রাখতে পারেননি। বলেছিলেন, থানায় যেতেই হবে, না হলে তার ছুটি নেই। এটাই ছিল মহম্মদ শফির শেষ কথা।
শফির এক আত্মীয় জানিয়েছেন, আমরা বিস্ফোরণে শব্দ শুনতে পাই। তখনই থানায় ছুটে গিয়ে দেখি, গোটা থানাটাই ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। শফির এক কোনা থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। শফির তিন সন্তান। তিনিই ছিলেন সংসারের একমাত্র রোজগেরে।
আরও পড়ুন- বিহারের মৈথিলী নাকি বাংলার মধুপর্ণা! দেশের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক কে?
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা নওগামের ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কীভাবে সংসার চলবে এই চিন্তায় শফির পরিবার।
নওগাম থানা বসতি এলাকার মধ্যেই। এত বিপজ্জনক পদার্থ মজুদ রাখা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শফির পরিবার।
দেখুন আরও খবর-







