ওয়েব ডেস্ক: চলে গেলেন বলিউডের হি- ম্যান। এবার আর ফিনিক্স পাখি হয়ে ফিরে আসা হল না। কদিন আগেই অভিনেতার জন্মদিনে ডবল সেলিব্রেশনের প্ল্যানিং হয়। তবে তার আগেই জীবনাবসান বলিউডের সোনালি যুগের নায়ক ধর্মেন্দ্র দেওলের। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার লুধিয়ানাতে এক জাঠ পরিবারে জন্ম ধর্মেন্দ্রর। বেশকিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার দুপুরে মুম্বইয়ের জুহুতে ধর্মেন্দ্রের (Dharmendra Death News) বাড়ির সামনে হঠাৎ একটি অ্যাম্বুল্যান্স থামতেই যেন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল উৎকণ্ঠা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তে ভাইরাল (Viral News) হয়ে যায়, আর উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন কোটি কোটি ভক্ত। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে দাঁড়াচ্ছে অভিনেতার বাসভবনের দরজায়, মেডিক্যাল টিম নেমে বাড়ির ভিতরে ঢুকছেন। আর তার পরেই প্রশ্নের ঝড়—ধর্মেন্দ্র কি তবে ফের কোনও সমস্যায়? lতবে, আবারও মৃত্যুর খবর ঘিরে শুরু হয় নানান জল্পনা। এরপরই তার প্রয়াণের খবরে শোকস্তব্ধ সিনে-দুনিয়া।
১৯৫৮ সালে ফিল্মফেয়ারের ট্যালেন্ট হান্ট কম্পিটিশনে অংশগ্রহণের জন্য চিঠি পাঠান ধর্মেন্দ্র। সেই চিঠিই ভাগ্য ফেরায় তাঁর। মুম্বই থেকে ডাক আসে। সুদর্শন, সুপুরুষ ধর্মেন্দ্রর ভাগ্য তাঁকে নিয়ে আসে মায়ানগরী মুম্বইতে। কৈশোরেই ধর্মেন্দ্রর রূপ ছিল দেখবার মতো। সুদর্শন পুরুষ ছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও আর্থিক অনটনের জেরে মাঠে-ঘাটে কাজ করেছেন ধর্মেন্দ্র। কিন্তু পাঁকেতেই তো পদ্ম জন্মায়। নাসরালি গ্রামের ছোট্ট গণ্ডিতে আটকে থাকতে চাননি তিনি। স্বপ্নপূরণের দৌঁড়ে তাঁকে আটে রাখতে পারননি কেউই। নিজের ট্যালেন্টের উপর ভর করেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হন ধর্মেন্দ্র।
আরও পড়ুন: বলিউডে নক্ষত্রপতন, শোলের পঞ্চাশে বিদায় বীরুর
১৯৬০ সালে দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছবির সঙ্গে বলিউডে ডেবিউ করেন ধর্মেন্দ্র। যদিও ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে শোলা অউর শবনম (১৯৬১) ছবিটি সাফল্যের মুখ দেখে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৬৬ সালে ‘ফুল ও পাথ্থর’ ছবির সঙ্গে তিনি বলিউডের এক নম্বর ‘অ্যাকশন হিরো’ হয়ে ওঠেন। এরপর একে একে জীবন মৃত্যু, ইয়াদো কি বারাত, চারাস, চুপকে চুপকে, সীতা অউর গীতা, শোলে, দোস্ত, আজাদ, ডি বার্নিং ট্রেন ধর্মেন্দ্র ফিল্মোগ্রাফিতে ব্লকবাস্টার ছবির সংখ্যা অগুণতি। এবছরই পঞ্চাশ বছর হয়েছে সেই শোলের। তবে, বীরুকে আর ধরে রাখতে পারলেন না কেউ।
রাজনীতির ময়দান থেকেও দূরে থাকেননি বলিউডের হি-ম্যান। ২০০৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে রাজস্থানের বিকানের থেকে নির্বাচনে জেতেন। তবে, লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা অটুট ছিল শেষদিন পর্যন্ত। করণ জোহর পরিচালিত রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি ছবিতে ৮৭ বছর বয়সেও নজর কেড়েছিলেন। শ্রীরাম রাঘবনের ইক্কিস ছবিতে শেষবার পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে। ২৫শে ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সেই ছবি।
সোমবার ধর্মেন্দ্রর (Dharmendra Health Update) মৃত্যুর খবর নিয়ে এদিন ফের শুরু হয় তুমুল জল্পনা। সেই জল্পনার পালে হাওয়া জোগায় সিনেজগৎ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। মাসের শুরুর দিকেই ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। ৩১ অক্টোবর থেকে সেখানে ভর্তি ছিলেন চিকিৎসার জন্য। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর তাঁর পরিবার জানিয়েছিল, বাড়িতেই চলবে দীর্ঘ পুনর্বাসন পর্ব। তবে সেইসময় মৃত্যুসংবাদ রটায়। এরপর সোমবার দুপুরে ফের ধর্মেন্দ্রর মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছিল নাটকীয় মোড়। একের পর এক বলিউড তারকারা ভিড় জমান তাঁর বাড়ির সামনে। মুম্বইয়ের পবন হংস শ্মশান ঘাটে পৌঁছয় অ্যাম্বুল্যান্স। শ্মশানঘাটে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েও যান। যান অমিতাভ বচ্চনও।
দেখুন খবর:







