Tuesday, August 12, 2025
HomeআজকেAajke | মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন? তো বাবাকে জানাচ্ছেন না কেন?
Aajke

Aajke | মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন? তো বাবাকে জানাচ্ছেন না কেন?

দেখুন ভিডিও...

Follow Us :

ওয়েব ডেস্ক: মেগা সিরিয়াল (Mega Serial) দেখেই জেনেছি যে পিতাশ্রী, মামাশ্রী, ভ্রাতাশ্রীরা আলাদা আলাদা বস্তু, এবং সে সব পুরাণ নায়কেরা কেউ বাবা ড্যাডি ইত্যাদি বলতেন না, পূজনীয় তাতশ্রী, পিতাশ্রী ইত্যাদি বলেই সম্বোধন করতেন। কিন্তু এই কিছুদিন আগে আমাদের রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মুখে শুনেছি আমরা মোদিজির (Narendra Modi) বাচ্চা, ওনার কোলে এক শিশুও ছিল, তাই কি তিনি আমি না বলে আমরা বলেছেন? হবে হয়তো। কিন্তু যে কনফিডেন্স নিয়ে তিনি আমরা মোদিজির বাচ্চা বলেছেন তাতে বিভিন্ন সন্দেহ, বিভিন্ন কৌতুহল জন্মাবে বইকী। কিন্তু আমরা সভ্য মানুষজন, সামাজিক রীতিনীতি মেনেই ধরেই নিলাম যে এটা উনি বায়োলজিক্যাল কোনও সম্পর্কের কথা বলেননি, খানিকটা পরমপিতা বা জাতির পিতার মতো এক আলঙ্কারিক ব্যবহার করেছেন মাত্র। বলতে চেয়েছেন মোদিজির দিশা নির্দেশনায় সঁপেছেন মনপ্রাণ। মাত্র ক’ বছর আগে ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অগুন্তি মোদিজির বাচ্চাদের ঠেঙিয়ে পিটিয়ে পারা, মহল্লা, গ্রামছাড়া করেছিলেন, সেই শুভেন্দু অধিকারী ২০১৯-এর মে থেকে মাতাশ্রী পালটে পিতাশ্রীকে চিনে ফেললেন। চেনার যথেষ্ট কারণ আছে, কারণ এক ভাইপো এসে ওনার শখ আহ্লাদে গ্যামাক্সিন ছেটানোর আগেই তাঁর জ্ঞানচক্ষুর উন্মোচন হয় এবং তিনি এক ঝটকাতেই মাতাশ্রীর আঁচল ছেড়ে পিতাশ্রীর আশ্রয়ে চলে যান। কিছু দুষ্টু লোকজন বলেন তার আগে পিতাশ্রীর কোনও দূত নাকি ওনাকে বলেছিলেন তিহারে নিরামিষ খাবার শুনেছি ভালোই দেয়, আপনি কিছু জানেন নাকি? তো শুনেছি, উনি মানে আমাদের কাঁথির খোকাবাবু ওই কথা শুনেই মামাশ্রীকে ফোন করে ঘাসফুল থেকে পদ্মফুলে ঝাঁপ দিয়েছেন। সেই তিনি জানালেন, বিধানসভার বাইরে জানালেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের সমর্থক, পাকিস্তানের হয়েই কথা বলছেন। সেটাই বিষয় আজকে। মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন? তো বাবাকে জানাচ্ছেন না কেন?

গতকাল বাংলার বিধানসভাতে শাসকদল দেশের সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক প্রস্তাব এনেছিলেন। পাক হানাদারির সমুচিত জবাব দিয়েছে সেনাবাহিনী, ধন্যবাদ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি, ধন্যবাদ কর্নেল ব্যোমিকা সিং ইত্যাদি আলোচনা হয়। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বা ব্রাত্য বসু তাঁদের বক্তৃতাকে বিজেপির থেকে এক কাঠি বেশি জাতীয়তাবাদী করেই পেশ করেছেন, যুদ্ধবিরোধী বোমারু বিমান থেকে চকোলেট রাশি রাশি পড়ুক থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত চাই গোছের জঙ্গি জাতীয়তাবাদী স্লোগান দিয়ে তৃণমূল আসলে বিজেপির জমিটাই কেড়ে নিয়েছে।

আরও পড়ুন: Aajke | অমিত শাহের দিবাস্বপ্ন, ২০২৬-এ বাংলা দখল

এ রাজ্যে সিঁদুর বেচতে গেলে তার একটা বড় ভাগ তৃণমূলও দাবি করবে। বিদেশে অভিষেক ব্যানার্জি গেছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন, এসব তো বিজেপি অস্বীকার করতে পারবে না। কাজেই বেসামাল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়, শুভেন্দুবাবুর নিউ ফাউন্ড ফাদার নরেন্দ্র মোদি এর বহু আগেই প্রকাশ্য জনসভাতেই জানিয়েছিলেন বিরোধীরা পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলে, বিরোধীরা দেশের উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে চায়, দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দেশদ্রোহী। কাজেই নরানাং মাতুলক্রমের মতোই বাপ কা বেটা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলছেন। তো সাহেব একটা ছোট্ট অনুরোধ আছে, মানে আপনি যার বাচ্চা, সেই মোদিজিকে এই কথাটা প্রমাণ সমেত জানিয়ে দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পুরুন। একজন মুখ্যমন্ত্রী দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন, তার তো জেলে থাকার কথা। পিতাশ্রীকে বলুন সেটা। আর যদি গ্যালারি গরম করার জন্য বলে থাকেন তাহলে শুনুন স্যর, এসব নিয়ে খোঁচাবেন না, আপনার আপাতত দলের এ ব্যাপারে রেকর্ড খুউউউব খারাপ। মানে এই আরএসএস হিন্দু মহাসভা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, বিপ্লবীদের ধরিয়ে দিয়েছিল, ইংরেজদের দালালি করেছিল। এবং এই আরএসএস–হিন্দু মহাসভা, সাভারকর, জিন্নার সঙ্গে মিলে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশকে ভাঙার কথা বলেছিল, হ্যাঁ সেই দিক থেকে আপনার অধুনা পিতাশ্রীর গুরুজি পাকিস্তানের জনকের ভাষায়, পাকিস্তানের জনক কায়দে আজম জিন্নার সমর্থনে কথা বলেছেন, মিছিল করেছেন, সভা করেছেন। আমরা আমাদের দর্শকদের কেবল একটা প্রশ্নই করেছিলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কি আপনাদের দেশদ্রোহী পাকিস্তানের সমর্থক বলে মনে হয়? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।

এক অদ্ভুত দেশে বাস করছি আমরা, যে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর নিজের দেশের সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধী দলকে দেশদ্রোহী মনে করেন, দেশের উন্নয়ন বিরোধী বলে মনে করেন, যে দেশের বিধানসভার এক দলনেতা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পাকিস্তানের সমর্থক বলে মনে করেন। আসলে হাতে এক তীব্র মুসলমান বিরোধিতা ছাড়া ওনাদের হাতে কিছুই নেই, এক তীব্র হিন্দু ভোট মেরুকরণ করে এক অলীক হিন্দুরাষ্ট্রের কল্পনা ছাড়া যাঁদের হাতে আর কিছুই নেই, যাঁদের নেই স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্য, নেই সেই সংগ্রামে প্রাণদান করেছেন এমন একজন আইডল। কাজেই তাঁরা মাঝেমধ্যেই এক মেকি, এক ফেক জাতীয়তাবাদী স্লোগানের আড়ালে নিজেদের পাপ আড়াল করতে চায়। সত্যিই যদি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক থাকে তাহলে তা আরএসএস–হিন্দু মহাসভার সাভারকর–জিন্নার ঐক্যবদ্ধ দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারণা যার কারণে আমাদের দেশ ভাগ হয়েছিল।

দেখুন আরও খবর: 

RELATED ARTICLES

Most Popular