ওয়েব ডেস্ক: মর্মান্তিক ঘটনা। একই পরিবারের তিনজনের রহস্যমৃত্যু। খাস কলকাতায় একটি বাড়ি থেকে দুই মহিলা ও এক নাবালিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার পুলিশের। দুই মহিলার হাতের শিরা কাটা ছিল। এক মহিলার গলায় আঘাতের চিহ্ন। নাবালিকার মুখে ফেনার দাগ। বুধবার ট্যাংরা থানা এলাকার শীল লেনে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান ওই তিনজন আত্মঘাতী হয়েছেন। ওই পরিবারের আরও তিনজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বুধবার ভোররাতে ইএমবাইপাসে কালিকাপুরের কাছে গাড়ি চালিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে পিলারে ধাক্কা মারেন তাঁরা। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাঁরা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে একজনের কাছে থেকেই পুলিশ ওই তিনজনের মৃতদেহের কথা জানতে পারেন। এরপরই বাড়িতে যায় পুলিশ। চমকে ওঠেন পুলিশকর্মীরা। ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের টিম। তদন্তে নেমেছে হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। তিনি বলেন, পরিবারের কোনও আর্থিক সমস্যা ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তদন্ত চলছে। এক ব্যবসায়ী পরিবারের ওই মর্মান্তিক পরিণতিতে হতবাক প্রতিবেশীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। চারতলা থেকে আলাদা আলাদা তিনটি ঘর থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতদের হাতের শিরা কাটা ছিল। কিন্তু কোনও ছুরি বা ধারালো অস্ত্র সেখান থেকে উদ্ধার হয়নি। পুলিশ-কুকুর এনে তদন্ত শুরু হয়েছে। আনা হয়েছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। সম্পর্কে তাঁরা ভাই।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার সকালেই ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানিয়েছেন, গাড়ি দুর্ঘটনায় আহতের থেকে পাওয়া বয়ান অনুযায়ী পুলিশ তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। ওই ব্যক্তি বয়ানে দাবি করেছেন, পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেয়ে ওই তিনজন আত্মহত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: আইনজীবীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মামলা ধামাচাপা দিতেই এই কুকর্ম?
এই ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকায় ভিড় জমে যায়। চমকে যান স্থানীয়রা। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, একসময় বড় ব্যবসা ছিল ওই পরিবারের। গ্লাভসের ব্যবসার রমরমা ছিল। রাশিয়ায় রফতানি হত সেই গ্লাভস। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে তা উঠে যায়। এরপর ক্রমশ অবনতি হতে থাকে ওই পরিবারের। রেস্তরাঁর ব্যবসার সঙ্গেও পরে যুক্ত ছিল ওই পরিবার। ইদানীং সেভাবে ওই পরিবারের সদস্যরা কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। মোহনকুমার গুপ্ত নামে এক চামড়ার ব্যবসায়ী কলকাতা টিভিকে জানিয়েছেন, আমি ২০২৩ সাল পর্যন্ত ওই পরিবারের ব্যবসার পার্টনার ছিলাম। আমি টাকা পেতাম। আমাকে দেওয়া চেক বাউন্স করে। আমি সকালে ডাকাডাকি করি। কেই দরজা খোলেননি। আমি দরজায় থাকা খবরের কাগজে এসেছিলাম বলে লিখে দিয়ে আসি। স্থানীয় কাউন্সিলর সন্দীপন সাহা বলেন, আমি ওই পরিবারের সদস্যদের চিনতাম।
দেখুন অন্য খবর: