কলকাতা: আজ ২২ এবং আগামিকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘সহজ পরব’র সপ্তম সংস্করণ। ২০১৪ সালে লোপামুদ্রা মিত্র এবং কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে দোহারের নানা আলোচনা এবং পরিকল্পনায় জন্ম নিয়েছিল ‘সহজ পরব’।
শহরে আফ্রিকান সুর থেকে বাংলার কীর্তন,কাওয়ালি থেকে তাল বাদ্যের জাদু নিয়ে আসছে এই অনুষ্ঠান। এটি হবে ‘সহজ পরব’ এর সপ্তম সংস্করণ। আফ্রিকা মহাদেশের বিশালতার কারণে,এর সঙ্গীত বৈচিত্র্যময়, অঞ্চল এবং জাতিগুলির অনেক স্বতন্ত্র সঙ্গীত ঐতিহ্য রয়েছে।
প্রাণের শহর কলকাতার সাংস্কৃতিক মানচিত্রে অন্যতম এই ‘সহজ পরব’। এই উৎসবে আফ্রিকান সুরের রেশ থেকে বাংলার কীর্তন, মধ্যপ্রদেশের কাওয়ালি থেকে বাউল-ফকির অনসস্বল, আওয়ধি -ভোজপুরি গান থেকে তালবাদ্যের ম্যাজিকে জাকির হোসেনকে স্মরণ। এই সব মিলে তৈরি করবে এক অসাধারণ ঐকতান।
দুদিনের এই পরবের প্রথম দিন এই বাংলার বর্ষিয়ান শিল্পী কানাই দাস বাউল সম্বর্ধিত হবেন ‘সহজ পরব’ সম্মানে , পরে থাকছে উস্তাদ জাকির হোসেন স্মরণে ‘ইঁয়াদো কা সফর”, অংশগ্রহণে জাকির হোসেনের ভাই ও দীর্ঘ দিনের সহশিল্পীরা উস্তাদ ফজল কুরেশি, উস্তাদ তৌফিক কুরেশি, পন্ডিত যোগেশ শামসি, সাবির খান, সূত্রধর পন্ডিত তন্ময় বোস। আওয়াধি- ভোজপুরি লোকসঙ্গীতে বিদূষী মালিনী আওয়াস্তির কন্ঠে। দ্বিতীয় দিন ( ২৩ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৫টা ) থাকছে বাউল-ফকির অনসম্বল অংশগ্রহণে অর্জুন খ্যাপা, স্বপন অধিকারী, নূর আলম, আমানত ফকির। পরে গুজরাটের সিদি গোমা। পরিবেশনায় সিদি ধামাল ডান্স গ্রুপ। আফ্রিকান সুরের রেশ পাওয়া যাবে ওদের সঙ্গীতে। এরপর মধ্যপ্রদেশের মূনাওয়ার মাসুমের কন্ঠ কাওয়ালি। সবশেষে হরিনাম সংকীর্তন দিয়ে সহজ পরব সিজন সাতের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
২০১৪ সালে লোপামুদ্রা মিত্র এবং কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে দোহারের নানা আলোচনা এবং পরিকল্পনার ফলস্বরূপ জন্ম নিয়েছিল ‘সহজ পরব’। সেই অর্থে এ বছর সহজ পরব এগারো বছরে পড়ল। নানা বাঁধা পেড়িয়ে এই উৎসব শীতের শেষে এক ঝলক বসন্তের বাতাস নিয়ে হাজির হচ্ছে শহরের সংস্কৃতি প্রেমী মানুষের কাছে।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য উপমহাদেশের লোকশিল্পের ধারাগুলির উদযাপনের মধ্যে দিয়ে তার প্রচার ও প্রসার ঘটানো। এই প্রজন্মের শ্রোতা-দর্শকদের মধ্যে নানান লোকশিল্প সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ানো এবং এমন একটি মঞ্চ নির্মাণ করা যেখানে দেশের নানা প্রান্তের লোক শিল্পীদের পাশাপাশি জনপ্রিয় লোক শিল্পীদেরও এক ছাদের নীচে আনা সম্ভব।
লোপামুদ্রা মিত্র জানালেন, ” আমরা এই উৎসবে শিকরের সুরের সন্ধান, চর্চা ও উদযাপন করে থাকি। প্রথমদিনে সহজ যাত্রা থাকছে। ভারতীয় সঙ্গীতের শিকরের সুর সুদূরপ্রসারী। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতে আমরা এই উৎসব এতো বড় ভাবে আয়োজন করে থাকি। ”
দোহারের পক্ষে রাজীব দাস বলেন, ‘প্রতি বছরের মতোই এবারও সহজ পরব নিয়ে শ্রোতা-দর্শকের আগ্রহ চোখে পরার মতো। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিশেষ উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। আশা করছি এবারেও আমরা সুষ্ঠু ও সফল ভাবে ‘সহজ পরব’ এর উদযাপন সম্পন্ন করতে পারবো। এই কর্মকান্ডে সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করি।’