Friday, November 7, 2025
HomeScroll১৫ মাস পর বিতর্কিত সময় নিয়ে মুখ খুললেন শেখ হাসিনা!
Sheikh Hasina

১৫ মাস পর বিতর্কিত সময় নিয়ে মুখ খুললেন শেখ হাসিনা!

২৩৪ বিলিয়ন ডলার লুটপাটের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর : শেখ হাসিনা

ওয়েব ডেস্ক : ১৫ মাস আগে বংলাদেশে ঘটে গিয়েছিল ভয়বহ ঘটনা। কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল পড়শি দেশ। যার জেরে প্রাণ হারিয়েছিলেন অনেকে। এমনকি বাংলাদেশ (Bangladesh) ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina)। সে নিয়ে অনেকবছর নিরবতা থাকার পর এবার মুখ খুললেন তিনি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ই-মেইল সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানালেন, যদি সুযোগ পায় তাহলে বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাঁর দল আওয়ামি লিগ (Awami League)। সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকার বিরোধী গণআন্দোলনের সময় যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, সেই নেতৃত্বের দায় তাঁরই। তবে তাঁকে ক্ষমতা চ্যুত করার জন্য কোনও বিদেশি শক্তির হাত ছিল কি না, সে বিষয়ে নীরবই থেকেছেন হাসিনা।

বাংলাদেশে আওয়ামি লিগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সে দেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকারের তরফে। তা নিয়ে হাসিনা বলেছেন, আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং বাংলাদেশের সংবিধানবিরোধী সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধাতে বহু ভোটারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জনগণ সবসময় তাঁর দলের পাশেই থেকেছে, সেই কারণেই ভোটাধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব।

ওই ই-মেইল সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের ওই বিক্ষোভে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন, তাঁর দায় আপনার? শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) বলেছেন, সেই সময় যে সব মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর জন্য আমি শোকাহত। দেশের নেত্রী হিসাবে নেতৃত্বের দায় নিচ্ছি। তবে তিনি দাবি করেছেন, আমি নিরাপত্তাবাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিইনি। গোটা ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল, যাতে জীবনহানি না হয়। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টটি হল অতিরঞ্জিত। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তা রাজনৈতিক প্রচারের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।

আরও খবর : আগামী বছর ভারত সফরে আসবেন ট্রাম্প!

শেখ হাসিনাকেও (Sheikh Hasina) ২০২৪ সালের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তা নিয়ে তিনি জানিয়েছেন “২০২৪ সালের নির্বাচন স্বাধীন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বারা অবাধ ও সুষ্ঠু বলে গণ্য হয়েছিল। আওয়ামী লীগ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নয় বার ক্ষমতায় এসেছে। দলটি কখনওই অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করেনি। যা বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নয়। যাদের জন্য কোনো বাংলাদেশি ভোট দেননি। এছাড়াও, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আওয়ামি লিগ সরকারই মূল সংস্কারগুলো চালু করেছিল। যেমন, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা। এই সংস্কারগুলো জনগণের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য করা হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশক থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নির্বাচনগুলোতে যে অনস্বীকার্য নির্বাচনী জালিয়াতি হয়েছিল, তারপর থেকে ব্যবস্থাটি অনেক ভালো হয়েছিল, এতে কেউ সন্দেহ করে না।” তবে তিনি স্বীকার করেন, “বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বিরোধী দলের বয়কটের কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ চক্র ভাঙতে হবে। আওয়ামি লিগ ছাড়া বাংলাদেশের গণতন্ত্র কখনও পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না।”

প্রশ্ন করা হয়েছিল, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের (Muhammad Yunus) বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আপনার ১৫ বছরের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ২৩৪ বিলিয়ন ডলার লুটপাট করা হয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ করেছে, আপনি আপনার পরিবার এবং রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠদের সুবিধা দিতে বেআইনিভাবে সরকারি জমি বরাদ্দ করেছেন এবং বর্তমানে আপনার, আপনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে একটি আদালতে বিচার চলছে। আপনার, আপনার পরিবার এবং রাজনৈতিক সহকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

এর উত্তরে হাসিনা বলেছেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর। বাংলাদেশের মোট বাজেটই ওই পরিমাণ নয়। যদি এত টাকা লোপাট হতো, গোটা দেশ ধসে পড়ত। বরং আমার আমলে অর্থনীতি ৪৫০ শতাংশ বেড়েছে। যা আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন ১৯৯০ সালে মুহাম্মদ ইউনূস মাত্র ৬ হাজার টাকা বেতনে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তাঁর নামে রয়েছে হাজার হাজার কাঠা জমি। একাধিক ব্যাঙ্কেও রয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার স্থায়ী আমানত। তিনি অভিযোগ করেছেন, সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলা হয় না। কারণ ইউনূসের বিদেশি প্রভাবশালী বন্ধু ক্লিনটন (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটন) রয়েছেন।

দেখুন অন্য খবর :

Read More

Latest News