ওয়েব ডেস্ক: ইতিহাস মিথ্যে, বইয়ে লেখা কথা ভুল, এইসব বদলে ফেলা দরকার- সম্প্রতি এরকম মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছে রাজস্থানের রাজ্যপালের (Rajasthan Governor) নাম। মোদির জমানায় ফের একবার মুঘল সাম্রাজ্যের (Mughal Empire) ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যপাল হরিভাও বাগাড়ে (Haribhau Bhagade)। আকবর ও যোধাবাঈয়ের বিয়ের (Jodha-Akbar Marriage) বিষয়টিকে ‘রূপকথা’ বলে কটাক্ষ করে ইতিহাস বদলের দাবি তুললেন তিনি।
রাজস্থানের রাজ্যপাল হরিভাও বাগাড়ের কথায়, “আকবরের সঙ্গে যোধাবাঈয়ের বিয়ের কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। আকবরনামা বা তৎকালীন কোনও প্রামাণ্য গ্রন্থে এই বিবাহের উল্লেখ নেই।” এই মন্তব্যে ফের প্রশ্নের মুখে সেই প্রচলিত ইতিহাস, যেখানে সম্রাট আকবরের সঙ্গে অম্বরের রাজকন্যা যোধাবাঈয়ের বিবাহকে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের নিদর্শন হিসাবে তুলে ধরা হয়। রাজ্যপালের বক্তব্য, “আসলে আকবর বিয়ে করেছিলেন অম্বরের রাজা ভরমলের কন্যাকে, তবে তাঁর নাম যোধাবাঈ ছিল না। পরে ভুলভাবে তাঁর নাম যোধাবাঈ হিসাবে প্রচারিত হয়।”
আরও পড়ুন: অপারেশন সিন্দুরে নৌসেনা যুক্ত হলে পাকিস্তান টুকরো হত: রাজনাথ
মুঘলদের এই ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে ব্রিটিশদের দিকে আঙুল তুলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, “আমাদের মহান দেশনায়কদের ইতিহাস ব্রিটিশরা বদলে দিয়েছে। স্বাধীনতার পরেও ইতিহাসের পুনর্মূল্যায়ন হয়নি। সেই কলোনিয়াল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত হতে পারেননি অনেক ইতিহাসবিদ।” তিনি আরও বলেন, “মহারানা প্রতাপের সঙ্গে আকবরের কোনও সন্ধিচুক্তি হয়নি, এটিও প্রমাণিত হওয়া দরকার। অথচ ইতিহাসে একে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”
পাশাপাশি, জাতীয় শিক্ষানীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে রাজ্যপাল বাগাড়ে জানান, “নতুন প্রজন্মকে দেশের সংস্কৃতি ও সভ্যতা সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস শেখানো হবে। ছত্রপতি শিবাজি ও মহারানা প্রতাপের মতো নায়কদের জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হবে।”
এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই শিক্ষামহলে ও ইতিহাসবিদদের মধ্যে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইতিহাসকে বদলানোর চেষ্টা চলছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, প্রাচীন নথিপত্র খতিয়ে দেখে ইতিহাসের ভুল সংশোধন হওয়া দরকার। যদিও ইতিহাসে আকবর এবং যোধাবাঈয়ের বিয়ে নিয়ে একটা বিতর্ক আছে। কিন্তু এই বিয়ের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
দেখুন আরও খবর: