ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলের (Jangal Mahal) ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার সাঁকরাইলের সিদাকরা এলাকায় ‘মাংসাশী’ উদ্ভিদের মতো এক রহস্যময় প্রজাতির দেখা মেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে যথেষ্ট উদ্বেগও। বহু বছর পর ফের জঙ্গলমহলে এমন উদ্ভিদের হদিস মিলল বলে দাবি করা হচ্ছে (District news)।
গত বছর বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় অনুরূপ উদ্ভিদের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। এবার সিদাকরার জঙ্গল সংলগ্ন অঞ্চলে নজরে এসেছে ছোট আকারের লাল-কমলা বর্ণের এই উদ্ভিদ। মূলত পাথুরে ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বেড়ে ওঠে এরা। উজ্জ্বল রং এবং পাতার উপর শিশিরবিন্দুর মতো আঠালো তরল ছোট পোকামাকড়কে আকৃষ্ট করে। যেখান থেকেই তৈরি হয়েছে ‘মাংসাশী’ বলে ভুল ধারণা।
আরও পড়ুন: তমলুকে বেসরকারি নার্সিং হোমে ২ মাসের শিশুর মৃত্যু
উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই উদ্ভিদটি আসলে সূর্যশিশির বা সানডিউ—আফ্রিকান উৎসের হলেও বহু বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গল অঞ্চলেই এদের অস্তিত্ব রয়েছে। এটি মানুষ বা প্রাণীর কোনও ক্ষতি করে না। মূলত পিঁপড়ে বা ছোট পোকামাকড়ের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগ্রহণ করে বেঁচে থাকে বলে একে ‘মাংসাশী’ শ্রেণিতে ফেলা হলেও প্রকৃত অর্থে এটি নিরীহ।
সূর্যশিশিরের পাতার চারপাশে থাকা শুঁড়ের মতো প্রশাখার মাথায় জমা থাকে আঠালো পদার্থ। সেই আঠায় পোকামাকড় আটকে গেলে আর রক্ষা নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভ্রান্তিকর তথ্যের জেরে অনেক জায়গায় এই উদ্ভিদ নষ্ট করার ঘটনাও সামনে আসছে।
বিলুপ্তপ্রায় এই প্রজাতিকে রক্ষা করতে উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। যে সব জঙ্গলে সূর্যশিশির রয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করে সুরক্ষার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মানুষের আতঙ্ক ও ভুল ধারণা দূর করতে বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্ভিদ বহু আগেই বাংলার জঙ্গলে ছিল, এবং এটি কোনওভাবেই বিপজ্জনক নয়।
দেখুন আরও খবর:







