ওয়েব ডেস্ক: ভারত-আমেরিকা (India-America) সম্পর্ক হঠাৎই সংকটে। কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদি সরকারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও দুর্বল কূটনীতি ভারতের অবস্থানকে আরও কঠিন করেছে। এখন প্রশ্ন, এই সংকট থেকে বেরোতে ভারত কি অর্থনৈতিক সংস্কার করবে, নাকি নতুন জোটে ঝুঁকবে?
ঢাক ফেঁসেছে বন্ধুত্বের। হাড়ি ভেঙেছে ভরা বাজারেই। ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক এ বছর শুরুতে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিলেও এখন তা দ্রুত অবনতির পথে। মূলত মার্কিন আধিপত্যবাদী নীতি এবং মোদি সরকারের কূটনৈতিক ভুল এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতার মূল কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল নিজের সামর্থ্যের অতিরিক্ত মূল্যায়ন। প্রায় ৩০% তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেও সরকার মনে করেছে, পশ্চিমা দেশগুলি এ নিয়ে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। বাস্তবে, মার্কিন শুল্কে ভারতের অর্থনীতি বড় আঘাত পাচ্ছে। অথচ ইউরোপ ও আমেরিকা নিজেরাও রাশিয়ার জ্বালানি কিনেছে, আর চীন অনেক বেশি তেল কিনেও তুলনামূলক ছাড় পেয়েছে। এখানে স্পষ্ট যে ভারতের জন্য আলাদা নিয়ম তৈরি হয়েছে, কিন্তু মোদি সরকার শুরু থেকেই এই বাস্তব উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলস্বরূপ, ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঢালাও প্রচার আর বিশ্বগুরুর ইমেজ সবই বানের জলে ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: কানাডাতেই রয়েছে খালিস্তানি জঙ্গি! মেনে নিল কার্নি সরকার
একদিকে আমেরিকাকে “প্রিয় বন্ধু” বলা, অন্যদিকে রাশিয়ার উপর নির্ভরতা-এই দ্বিচারিতা ভারতের অবস্থান দুর্বল করেছে। ফলে মার্কিন চাপকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার বদলে সরকার দোদুল্যমান থেকেছে। মোদি গত ১১ বছরে শক্তিশালী রাজনৈতিক ম্যান্ডেট পেলেও বড় অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারকে উপেক্ষা করেছেন। তার জোর ছিল হিন্দুত্ব প্রকল্প ও নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচারে। নোটবন্দি, RCEP থেকে সরে আসা-এসব সিদ্ধান্ত ভারতের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা কমিয়েছে। আজ যখন মার্কিন শুল্ক অর্থনীতিকে আঘাত করছে, তখন কার্যকর প্রতিরোধের শক্তি ভারত অর্জন করতে পারেনি।
ব্রিকসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো একধরনের বিকল্প হলেও তা ভারতের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থে কতটা কার্যকর হবে তা অনিশ্চিত। স্পষ্ট হচ্ছে, মোদি সরকারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অকার্যকর কূটনীতি ভারতের জন্য কৌশলগত সুযোগ নষ্ট করছে এবং দেশকে অপ্রয়োজনীয় সংকটে ঠেলে দিচ্ছে।
অন্য খবর দেখুন