ওয়েব ডেস্ক : নৌকায় ভর্তি অতিরিক্ত বালি। সেই বালির চাপে নিয়ন্ত্রণ হারাল নৌকা। সেটি ডুবে গেল ভাগীরথী ও বাবলা নদীর সংগমস্থলে। এমনই একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের কল্যাণপুরে (Klyanpur)। এই ঘটনায় ১৩ জনকে উদ্ধার করা গেলেও একজন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম দুর্লভ রাজবংশী। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়।
জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে অজয় নদী থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত বালি বোঝাই করে নৌকাটি নদীপথ হয়ে যাচ্ছিল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) দিকে। তবে নৌকাটি যখন কেতুগ্রামের কল্যাণপুরের ভাগীরথী নদী ও বাবলা নদীর সংযমস্থলে পৌঁছয়, সেখানে একটি বাঁকের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারায় নৌকাটি। তার পর সেটি নদীতে তলিয়ে (Boat sink) যায় বলে খবর।
আরও খবর : SIR প্রক্রিয়ার কাজ খতিয়ে দেখতে কাকদ্বীপে সি মুরুগান
সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার সময় ওই নৌকাতে ছিল ১৩ জন। তবে দুর্ঘটনার পর ১২ জন কোনও মতে সাঁতরে বা অন্যভাবে নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও, দুর্লভ রাজবংশী নামে একজন নিখোঁজ হন বলে খবর। তাঁকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। এইখবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। তার পরেই নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ (Police)।
অভিযোগের আঙুল উঠেছে মুর্শিদাবাদের শিখা রাজবংশী শিশগ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তার স্বামী মধু রাজবংশীর দিকে। অভিযোগ, ক্ষমতার দাপটে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই রাতের অন্ধকারে একাধিক নৌকায় বালি পাচারের কারবার চালিয়ে আসছেন। তার মালিকানাধীন নৌকাগুলির মধ্যে একটি ছিল গত রাতের ডুবে যাওয়া নৌকা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিরাতেই ভাগীরথীর উপর দিয়ে বড় বড় ট্রলারে বোঝাই করে অবৈধ বালি পাচার হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে এত বড় কারবার কীভাবে নিয়মিত চলছে, সেই প্রশ্নে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ আরও গুরুতর। তাদের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের প্রভাবশালী বালি মাফিয়ারা কাটোয়ার অজয় নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে রাতের অন্ধকারে ভাগীরথীর পথ ধরে বিভিন্ন জেলায় পাচার করছে। দুর্লভ রাজবংশীর পরিবারও একই অভিযোগ তুলেছে। এদিকে নদীতে তলিয়ে যাওয়া দুর্লভকে দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে এলাকায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে সর্বাত্মক তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
আর এই ঘটনার পর নদীপথে বালি পাচার নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা আবারও প্রশ্নের মুখে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই রাতের অন্ধকারে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে পাচার করা হচ্ছে। এই বেআইনি কারবার চললেও প্রশাসন কেন নিশ্চুপ? সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। চোরাই বালি পাচারের জেরেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
দেখুন অন্য খবর :







