কলকাতা: আরজি করের (RG Kar Case) ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। ৫ মাস ৯ দিন পর আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রায়কে। এই ধারা অনুযায়ী যাব্বজীবন কারাবাস অথবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে সঞ্জয়ের। সোমবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক। আদালতে সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে (Civic Volunteer Sanjay Roy) একমাত্র অভিযুক্ত বলা হয়েছিল। সমস্ত তথ্য প্রমাণ ও সাক্ষীর ভিত্তিতে সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল শিয়ালদহ আদালত। রায় ঘোষণার পর সঞ্জয় আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। সঞ্জয় বলেন, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে আমি মিথ্যা বলছি না। পাল্টা বিচারক বলেন, আমি সব পক্ষের সাক্ষ্য প্রমাণ পরীক্ষা করেছি, যুক্তিও শুনেছি। তারপরই আমি তোমাকে দোষী মনে করেছি। তুমি অপরাধী। তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।’
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ১০ অগস্ট টালা থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সঞ্জয়। হাসপাতাল ও সেমিনার রুমের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয় রায়কে সেমিনার রুমে ঢুকতে ও বেরতে দেখা গিয়েছে। এমনকী সঞ্জয়ের ছেঁড়া হেডফোনের অংশও সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল সেমিনারে রুমে ঢোকার সময় সঞ্জয়ের গলায় হেডফোনের ঝুলছিল। কিন্তু সেমিনার রুম থেকে বের হওয়ার সময় সঞ্জয়ের গলায় হেডফোন ছিলনা। সেই সব তথ্যের প্রমাণের ভিত্তিতেই সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল টালা থানার পুলিশ। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয় বাংলা। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতিবাদে উত্তাল হয় দেশও।
আরও পড়ুন: আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, বিচারকের কাছে জানাল সঞ্জয়
আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের গত ১১ নভেম্বর। বিচারপর্ব শুরু হয় ঘটনার ৫৯ দিনের মাথায়। ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় রায় ঘোষণা করল শিয়ালদহ আদালত। আদালতে সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে (Civic Volunteer Sanjay Roy) একমাত্র অভিযুক্ত বলা হয়েছিল। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে একমাত্র ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে উল্লেখ করে সিবিআই। আদালতে তাঁর ‘সর্বোচ্চ শাস্তি’র আবেদন করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। নির্যাতিতার শরীরে ষে ক্ষত চিহ্ন সঙ্গে সঞ্জয়ের দাঁতের ছাপ মিলে গিয়েছিল। এমনকী সঞ্জয়ের লালারসের সঙ্গে নির্যাতিতা তরুণী স্যাম্পেল মিলে যায়। এই নৃশংস অপরাধের জন্য সিবিআইয় সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছে আদালতের কাছে। যদিও ধৃতের আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন, এই স্বপক্ষে সিবিআই যে প্রমাণ দিচ্ছে, তা অপর্যাপ্ত। সঞ্জয় এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। এছাড়াও নির্যাতিতার শরীরে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গোটা ঘটনাটি সাজানো হতে পারে। ধৃতকে ফাঁসানো হয়েছে। অভিযুক্ত কিছুই করেনি। অভিযুক্তের আঙুলের ছাপও মেলেনি। হতে পারে। হতে পারে পুরোটাই পরে সাজানো হয়েছে।
দেখুন ভিডিও