কলকাতা: এসআইআর ইস্যু (SIR Issue) কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যেই সোমবার বনগাঁর (Bongaon) ত্রিকোণ পার্কে সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সভাস্থলে পৌঁছতেই বিজেপি (BJP), নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগে সরব হন তিনি। অভিযোগ, ভোটের আগে বাংলায় আতঙ্ক তৈরি করতে এসআইআর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আত্মহননের ঘটনার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের মনোবল ভেঙে না দেওয়ারও আবেদন জানান।
কপ্টারের ইন্সিওরেন্স সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দেরিতে সভাস্থলে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গেও বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে খেলতে গেলে ধরতেও পারবে না, ছুঁতেও পারবে না।”
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে ব্যাঙ্ক বন্ধ প্রায় হাফ মাস, কোন কোন দিন? জেনে নিন
এরপরই এসআইআর নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ, মাত্র দুই মাসে এসআইআর করাতে চাপ দেওয়া হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, “এসআইআর করতে তিন বছর সময় লাগে। ভোটের আগে গায়ের জোর দেখিয়ে এসআইআর করানো হচ্ছে। বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে।”
মতুয়া সমাজের সার্টিফিকেট বিতর্ক নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অভিযোগ, ওই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে মানুষকে বাংলাদেশি দেখানোর চেষ্টা চলছে। মমতার মন্তব্য, “ম্যাপিং করছে ২০০২ সাল, সার্টিফিকেট দিচ্ছে ২০২৫ সালে। মানেই বোঝানো হচ্ছে আপনি বাংলাদেশে ছিলেন। এটা ভয়ানক প্রতারণা।”
এদিন সভামঞ্চ থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতি ও বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি—এটা কোন বিচার? বৈধ ভোটারের কোনও ভয় নেই। আমি থাকতে কারও গায়ে হাত দিতে দেব না।”
সভায় একাধিকবার বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “জানেন তো, জীবিত বাঘের চেয়ে আহত বাঘ বেশি ভয়ংকর। আঘাত করলে প্রত্যাঘাত সহ্য করতে হবে।” পাশাপাশি রাজ্য নেতা–মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গেও অভিযোগ তোলেন তিনি—“তৃণমূলের কেউ কিছু না করলেও জেলে ঢোকানো হয়, বিজেপির চুরি করলেও কিছুই হয় না।”
২০২৯ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণী করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা দখল করতে গিয়ে বিজেপি গুজরাট হারাবে। ২০২৯-এ ক্ষমতা হারাবে দিল্লিতে। তৃণমূল জায়গা নেবে।”
এদিন শান্তনু ঠাকুরকে নাম না করে আক্রমণ করে বলেন, “বড়মা অসুস্থ থাকাকালীন কোথায় ছিলেন? আমরা ছ’বার নার্সিংহোমে ভর্তি করেছি। ঠাকুরবাড়ির উন্নয়ন আমরাই করেছি।” সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ আবেদন রেখে যান। সাম্প্রতিক আত্মহত্যার ঘটনাগুলিকে উল্লেখ করে তাঁর বার্তা, “কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেবেন না। মানুষের জীবন খুব সুন্দর। নিশ্চিন্তে থাকুন, ভালো থাকুন।”
দেখুন আরও খবর:






