ওয়েব ডেস্ক: ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। একনাগাড়ে ভারী বৃষ্টি আর ভূমিধসে কার্যত লণ্ডভণ্ড উত্তরবঙ্গ। সোমবার নতুন করে বৃষ্টির দাপট না বাড়ায়, রোদের দেখা মিলেছে পাহাড়ে। তবে এখনও চারপাশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির ধ্বংসলীলার নমুনা। বড় একটা ঝড়ের পর যেমন শান্ত হয়ে যায় চারপাশ ঠিক তেমন। বৃষ্টি আর ধসে যেমন মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে মিরিকের (Mirik), ঠিক তেমনই বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park)। জলে ভাসছে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের গোটা এলাকা। তাই পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park)। একইসঙ্গে বন দফতরের তরফে হাতি এবং জঙ্গল সাফারিও আপাতত বন্ধ করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন দিন ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার-সহ উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। তার জেরে ভুটান পাহাড় বেয়ে জল নামতে শুরু করে নীচের দিকে। সেই জল নামায় ফুলেফেঁপে ওঠে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার মতো পাহাড়ি নদী গুলি। জলের তোড়ে ভেঙে যায় দার্জিলিঙের মিরিক ব্লকের দুধিয়া সেতু কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শিলিগুড়ি ও মিরিকের রাস্তা। উত্তরবঙ্গে এখনও পর্যন্ত দুর্যোগ পরিস্থিতিতে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ২৮ জন। নিখোঁজ বহু। মৃত্যু হয়েছে গণ্ডার, হরিণ-সহ বহু বন্যপ্রাণীর। এমনকি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে গন্ডার ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতীয় উদ্যান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তছনছ উত্তরবঙ্গ, এই মুহূর্তে কী অবস্থা? দেখুন
জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক জানিয়েছেন, পর্যটক ও বনকর্মীদের সুরক্ষার স্বার্থে পর্যটকদের জন্য জঙ্গল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুরক্ষার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট এলাকার রাস্তা, সেতু সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর খতিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি, দুর্যোগের জেরে হলং নদীর উপর একটি কাঠের সেতু ভেসে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। জলদাপাড়া টুরিস্ট লজে আটকে পড়া বেশ কয়েকজন পর্যটককে সোমবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রবল দুর্যোগে গণ্ডার, হরিণ-সহ বহু বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের একটি গন্ডার। আবার শিলিগুড়ির দিকে মেচি নদীতে ডুবে একটি হস্তিশাবক প্রাণ হারিয়েছে। এই অবস্থায় সেখানকার জীবজন্তু কেমন আছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে, জল থেকে বাঁচতে লোকালয়ে রীতিমতো তাণ্ডব দেখিয়েছে গন্ডার। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পলাশবাড়িতে সারারাত গন্ডারের তান্ডবে আতঙ্কে সিটিয়ে ছিলেন এলাকাবাসী। রবিবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও জানান, “আমরা একটি গন্ডার নদীতে ভাসছে বলে একটি ভিডিও দেখেছি। পরে সেটি আবার ওপরে উঠেও যায়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। জল কমলেই আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে।”
দেখুন অন্য খবর