কলকাতা: রাত দখল, আন্দোলন, মোমবাতি মিছিল সবই বৃথা। আর জি কর-এ সরকারি হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রায় এগারো মাস পর, খাস কলকাতার কলেজের মধ্যে একজন ছাত্রীকে গণধর্ষিতা হতে হল। কসবা ল’ কলেজে (Kasba Law College) ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মেডিক্যাল রিপোর্ট সামনে এল। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতা ছাত্রীর গলায় কামড়ের দাগ রয়েছে, যৌনাঙ্গ ক্ষত রয়েছে। এছাড়া শরীরের অন্যান্য জায়গায় মারধরের দাগও দেখা গিয়েছে। মেডিক্যাল রিপোর্টে স্পষ্ট অভিযোগকারী ছাত্রী যৌন নিগ্রহের শিকার। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস সরকারের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তিন অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, জেব আহমেদ, প্রমিত মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছে। তদন্তে নেমে কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ, তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি ছিল।
কসবার সাউথ কলকাতা ল কলেজে (South Kolkata Law College) প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর উপর গণধর্ষণের অভিযোগে উত্তাল রাজ্য। ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষাতেই উঠে এল সেই ভয়াবহ ঘটনার প্রমাণ। অভিযোকারী ছাত্রীর শরীরে পাওয়া গিয়েছে জোর করে যৌনসম্পর্কের চিহ্ন, কামড়ের দাগ এবং নখের আঁচড়। মেডিক্যাল রিপোর্টে স্পষ্ট যে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন সেই অভিযোগকারী তরুণী।
আরও পড়ুন: বয়ানে অসঙ্গতি, কসবা-কাণ্ডে গ্রেফতার নিরাপত্তারক্ষী
কসবা কাণ্ডে (Kasba Incident) পুলিশের (Kolkata Police) নজরে ল কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরা। ওই ক্যামেরার আওতায় রয়েছে কলেজের ইউনিয়ন রুম চত্বর। আজই ঘটনার পুনর্নির্মাণ হওয়ার সম্ভাবনা। শনিবার সকাল থেকেই পুলিশি প্রহরায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ (South Calcutta Law College)। গতকাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। দন্তে ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিম। ছেঁড়া চুল ও ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে, খবর সূত্রের। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভির ফুটেজ। ইউনিয়ন রুমের বাইরে কারা ছিলেন তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে যাচাই করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশি বয়ানে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর ঘরেই গত ২৫ জুন সন্ধ্যায় তাঁর উপর নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দাবি করেন, ইউনিয়ন রুম থেকে তিনি যখন পালানোর চেষ্টা করেন, তখন কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলেজের রক্ষীর কাছে তিনি সাহায্য চাইলে তিনিও নাকি সাহায্য করেননি। এই নিরাপত্তারক্ষীকে নিজের রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে তিনি বেরিয়ে গেলেন কেন, কেন গোটা ঘটনা সম্পর্কে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে কিছু জানালেন না, কীভাবে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে তাঁর ভূমিকা কী ছিল, এই সমস্ত কিছুই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে পুলিশ।
অন্য খবর দেখুন