কলকাতা: বছর পেরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (WB Assembly Election 2026)। কর্মশ্রী-লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বিপুল সাফল্য রয়েছে রাজ্য সরকারের ঝুলিতে। মঙ্গলবার২০১১ সাল থেকে অর্থাৎ গত ১৫ বছরে কাজের খতিয়ান (Mamata Delivers Development Report Card) দিয়ে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ পেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee )। এদিন নবান্নের বৈঠক থেকে দুর্গা অঙ্গনের (Durga Angan) কাজের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরেই নিউ টাউনে শুরু হয়ে যাবে দুর্গা অঙ্গনের কাজ। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে। শিলিগুড়িতে সবচেয়ে বড় মহাকাল মন্দিরের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দুর্গা অঙ্গন নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। টেন্ডারের কাজ শেষ। প্রাথমিক ধাপ শেষের পর এবার ভিত তৈরির পালা। চলতি মাসেই নিউটাউনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত দুর্গাঙ্গনের ভিতপুজো হয়ে যাবে। মঙ্গলবার নবান্নে গত ১৫ বছরের খতিয়ান দিতে গিয়ে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউটাউনে হিডকোর তত্ববধানে তৈরি হবে দুর্গাঙ্গন। এর জন্য ধার্য করা হয়েছে প্রায় ২৬১ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা।
দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড ইনট্যানজিবেল হেরিটেজ’ তকমা পাওয়ার পর চলতি বছরের ২১ জুলাই শহিদ দিবসে ধর্মতলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নিউটাউনে দুর্গাঙ্গন তৈরি হবে। সেইমতো কাজও শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, চলতি মাসেই ভিতপুজো হবে। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে ভিতপুজো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সময়মতো দিন স্থির করে পুজো হবে। তারপরই শুরু হবে দুর্গাঙ্গন তৈরির কাজ।নিউ টাউনে ইকো পার্কের অদূরে, যেখানে রামকৃষ্ণ মিশনের জমি রয়েছে, তার ঠিক পাশেই তৈরু হবে এই মন্দির।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের পাঁচালি,১৫ বছরে কাজের খতিয়ান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ক্ষমতায় আসার আগে জনগণকে আমরা কী বলেছিলাম, আর এই সময়ে আমরা কী কী কাজ করেছি, সেটা মানুষকে জানানো আমাদের নিজেদের দায়িত্বের মধ্যে বলে মনে করি। তাই এই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হল।” অদিন মুখ্যমন্ত্রী যে রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরেছেন তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০২৫। রাজ্যের ক্ষমতায় বসার পর থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, কৃষক বন্ধু, পড়ুয়াদের ক্রেডিট কার্ড-সহ মোট ৯৪টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছে সরকার।রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ করে চলেছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিরোধীরা কথায় কথায় বলেন, বাংলায় উন্নয়ন হয়নি। এদিন সরকারের গত ১৫ বছরের রেকর্ড কার্ড তুলে ধরে বিরোধীদের অভিযোগেরও জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দু’বছরের মধ্যে দুর্গা অঙ্গন নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। মমতা দাবি করেছেন, গত বারের থেকে বেশি আসন নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরবে। তা বাস্তবায়িত হলে এবং বড় কোনও রাজনৈতিক ওলটপালট না-হলে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুর্গা অঙ্গনের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
২০১১ সাল থেকে অর্থাৎ গত ১৫ বছরে নানা সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতরের কাজ কতটা এগিয়েছে রাজ্যে, তাতে রাজ্যবাসী কতটা উপকৃত হয়েছেন, সেই তথ্য-পরিসংখ্যান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন কাজের খতিয়ান দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ১০০ দিনের কাজ বা ‘কর্মশ্রী’। এই মুহূর্তে সেই প্রকল্পে কর্মদিবস বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে ৭০ দিন। যা কেন্দ্রের তুলনায় বেশি। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গত ১৫ বছরের নিরিখে রাজ্যের জিডিপি বৃদ্ধি হয়েছে ৪.৪১ গুণ, কর আদায় ৫ গুণ হয়েছে। রাজ্যজুড়ে অসংখ্য ছোট ছোট কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর প্রকল্প হয়েছে, যা পরিসংখ্যানের নিরিখে অত্যন্ত ভালো বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর সুবিধা পেয়েছেন ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা, যার জন্য খরচ হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দারিদ্রসীমার উপরে ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুযকে আনা হয়েছে। রাজ্যে ৪০ লক্ষ বেকারত্ব হ্রাস পেয়েছে। ২ কোটি ৪৫ লক্ষ পরিবার স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধাপ্রাপ্ত। দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপ্ত ৭ কোটি ৪১ লক্ষ। অর্থনৈতিক করিডরে কর্মসংস্থান ১ লক্ষ। পথশ্রীর টার্গেট ৭ হাজার কিলোমিটার রাস্তা (৫ হাজার কিলোমিটার সম্পূর্ণ)। ২৪ কোটি দেশি বিদেশি পর্যটক এসেছে বাংলায় শুধু ২০২৫ এর অক্টোবরে। দেশের মধ্যে এখন দ্বিতীয়। ”বাংলা এখন সারা দেশের মডেল।”
অন্য খবর দেখুন







