নয়াদিল্লি: শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের ‘অফিশিয়াল’ অনুরোধ এসেছে। জানাল বিদেশমন্ত্রক। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের (MEA) মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল (Randhir Jaiswal) শুক্রবার বলেন, বাংলাদেশের তরফ থেকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ পেয়েছি। সেটা নিশ্চিত করছি। তবে এছাড়া আমার এই বিষয়ে কিছু বলার নেই। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামানও চলতি সপ্তাহেই ভারতের স্বার্থ বিষয়ক সদর্থক মন্তব্য করেছে। বিশেষ করে হাসিনা সরকারের পতনের পর সেখানে পাকিস্তান ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছিল। এমনকী চিনও গোপনে সেই কাজ করছে বলে ভারতের কাছে গোয়েন্দা তথ্যও উঠে এসেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এই বিষয়ে ভারতকে ‘নোট ভার্বাল’ পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসিনার বক্তব্য যাতে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত না হয় সেজন্য ‘বিদ্বেষমূলক’ বক্তব্যে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে।
আরও পড়ুন: চিন্ময়কৃষ্ণ বাংলাদেশে জামিন পাচ্ছেন না, বিদেশমন্ত্রক বলল, আর্জি ন্যায় বিচারের
গত জুন মাস থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভ গত পাঁচ অগাস্ট ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। যার জেরে ওই দিন শেখ হাসিনা ভারতে চলে আসেন। তারপর সেখানে গঠিত হয় শান্তির নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সময় হাসিনা ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের নামে খুন সহ একের পর এক মামলা হয়েছে। হাসিনার আওয়ামি লীগের ছন্নছাড়া অবস্থা হয়। অনেক নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে। হাসিনা সরকারের একাধিক মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। সে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বাড়ে। এই প্রেক্ষিতে হাসিনা সরকারের আমলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ঘর গুছিয়ে নেয়। দলের শীর্ষ নেত্রী খালেদা জিয়ার জেল মুক্তি হয়। তবে বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে বিএনপি। যেটা ইউনুস সরকার এখনই চাইছে না। এছাড়া অন্যতম সহযোগী জামায়েত ইসলামীর সঙ্গেও বিএনপির সম্পর্ক এখন আদায় কাঁচকলায়। বিশেষ করে ইউনুস সরকার যেভাবে জামায়েতের লোকেদের গুরুত্ব দিচ্ছে তা ভালো চোখে দেখছে না বিএনপি। আওয়ামি লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু, চির প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বিএনপি চায় না আওয়ামি লীগকে নিষিদ্ধ করতে। সব মিলিয়ে অস্থির পরিস্থিতি বাংলাদেশে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, ইউনুস সরকার এখন যে কোনও উপায়ে হাসিনার মুখ বন্ধ করতে চাইছে। কারণ হাসিনাকে জেলবন্দি না করতে পারলে আওয়ামি লীগ ফের উজ্জীবিত হতে শুরু করছে। যা চিন্তার কারণ জামায়েত ও ইউনুস সরকারের নেপথ্যে থাকা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের।
দেখুন অন্য খবর: