কলকাতা: দিল্লিতে (Delhi) কাজ করতেন র্যাগপিকার হিসেবে। সেখান থেকেই সন্দেহের তির উঠে এল তাঁর দিকে। বীরভূমের (Birbhum) মেয়ে সোনালি বিবি (Sonali Bibi)। গর্ভবতী অবস্থায় পরিবার-সহ বাংলাদেশে (Bangladesh) পুশব্যাক হওয়ার পর ফের মাথাচাড়া দিল নাগরিকত্ব এবং মানবাধিকার নিয়ে বৃহত্তর বিতর্ক।
ঘটনা গত জুন মাসের। দিল্লি পুলিশ সোনালি, তাঁর স্বামী ও শিশুকে আটক করে জানায়, তাঁরা নাকি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। পরিবার দাবি করছে, কোনও সুনির্দিষ্ট নথি পরীক্ষা করা হয়নি। দিল্লি থেকে সরাসরি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইসলামপুরে পুলিশের জালে ১২ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী
সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলার শরণাপন্ন হন সোনালির বাবা। আদালত প্রথমেই ডিপোর্টেশন আদেশ বাতিল করে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, চার সপ্তাহের মধ্যে সোনালি ও তাঁর পরিবারকে ফেরত এনে নিরাপদভাবে ভারতে পুনর্বাসিত করতে হবে। কিন্তু সেখানেই থামেনি বিতর্ক। কেন্দ্র হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে যায়। এখন মামলাটি দেশের শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন।
পরিবারের দাবি, বহু প্রজন্ম ধরে তাদের বসতি বীরভূমেই। জমির কাগজ থেকে রেশন কার্ড সব নথিই রয়েছে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় সোনালির বাবা-মায়ের নামও আছে। তবু কেন তাঁদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে পুশব্যাক করা হল, প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবীরা। শিশু জন্ম দিতে চলা সোনালিকে বাংলাদেশ কারাগারে রাখা হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলির। আশঙ্কা—অনাগত শিশু রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে কি না, সেই দিকেও কড়া নজর দরকার।
সীমান্ত নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব যাচাই, অভিবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা—সবকিছু মিলিয়ে এই ঘটনার পর ফের নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও মানবাধিকারের সীমানা নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মানবাধিকার সংগঠন—সব জায়গাতেই এখন একটাই প্রশ্ন, “কাগজে নাম থাকা সত্ত্বেও একজন গর্ভবতী ভারতীয় মহিলাকে কীভাবে সীমান্তের ওপারে ঠেলে দেওয়া হল?”
দেখুন আরও খবর:







