নয়াদিল্লি: স্বামীর সঙ্গে না থেকেও ভরণপোষণের অধিকার (Maintenance) পেতে পারেন স্ত্রী। তবে এটি নির্ভর করবে বিশেষ পরিস্থিতির উপর। সম্প্রতি একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এই রায় দিয়েছে। মামলাটি ছিল ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) এক দম্পতির (Couple)। ২০১৪ সালের মে মাসে তাঁদের বিয়ে (Marriage) হয়। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে বাপের বাড়ি চলে যান স্ত্রী। স্বামীর (Husband) দাবি, অনেকবার অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রী (Wife) আর ঘরে ফিরতে চাননি। এই অভিযোগ নিয়ে তিনি প্রথমে রাঁচীর (Ranchi) একটি পারিবারিক আদালতের শরণাপন্ন হন।
অন্যদিকে, স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। তাঁকে শৌচালয় ব্যবহারে বাধা দেওয়া হত না। পাশাপাশি, স্টোভে রান্নার অনুমতিও দেওয়া হয়নি। কাঠকয়লায় রান্না করতে বাধ্য করা হতো। সেই সঙ্গে গাড়ি কেনার স্বার্থে তাঁকে পাঁচ লক্ষ টাকা পণের জন্য চাপ দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করেন স্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রীর পক্ষে থাকা আর সংসার করা সম্ভব হয়নি। তাই বাপের বাড়ি ফিরে গিয়ে তিনি স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতে আবেদন জানান।
আরও পড়ুন: মোজার ভেতর ৩০ কোটির সোনা, গাঁজা! বিমানবন্দরে হুলুস্থুল কাণ্ড
রাঁচীর পারিবারিক আদালত স্ত্রীর আবেদন মঞ্জুর করে। আদালত স্বামীকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে স্বামী এই রায়ের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টে (Jharkhand High Court) আপিল করেন। হাই কোর্ট স্ত্রীর ভরণপোষণের আবেদন খারিজ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও ওই মহিলার পক্ষেই রায় দিয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, শৌচালয় ব্যবহার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবে মানসিক অত্যাচারের শিকার হওয়া মহিলার পক্ষে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য স্বামীকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এই রায় কার্যকর হবে ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট থেকে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বিবাহ বিচ্ছেদ এবং ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে আদালত এ-ও স্পষ্ট করেছে যে, প্রতিটি ক্ষেত্রের রায় নির্ভর করবে সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপর।
দেখুন আরও খবর: