হুগলি: ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত হুগলি (Hooghly) জেলার চুঁচুড়ার (Chinsurah) ঘোষ পরিবার। হিন্দু বাড়ি হলেও এখানে শুধু দেব-দেবীর পুজো হয় না, পীর বাবার মাজারেও (Pir Babar Majar) চলে নিয়মিত প্রার্থনা। কয়েক প্রজন্ম ধরে ঘোষ পরিবারের সদস্যরা এই মাজারের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন, যা শুরু হয়েছিল এক স্বপ্নাদেশ থেকে।
চুঁচুড়ার জগুদাস পাড়া এলাকার বাসিন্দা দেবাশীষ ঘোষ জানান, তাঁর দাদুর দাদু সাড়ে পাঁচ কাঠা জমি কিনেছিলেন এক মুসলিম ব্যক্তির কাছ থেকে। সেই সময়ই তিনি স্বপ্নে পীর বাবার দর্শন পান। স্বপ্নে পীর বাবা তাঁকে মাজার তৈরি করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মেনে মাজার নির্মাণ করা হয় এবং তারপর থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই মাজারের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে ঘোষ পরিবার।
আরও পড়ুন: খুশির ঈদে চন্দ্রকোনায় পুজোর মেলার তদারকি শেখ জুম্মনদের
দেবাশীষ বাবু পেশায় একজন অটোচালক। তিনি বলেন, “আমি মাঝে মাঝেই স্বপ্নে পীর বাবাকে দেখি। সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে ঘোড়া ছুটিয়ে এসে মাজারে বসেন তিনি। একসময় ঘুম ভেঙে যায়, কিন্তু মনে হয় তিনি সত্যিই এসেছিলেন। আমার বাড়িতে যেমন দেব-দেবীর পুজো হয়, তেমনই মাজারেও প্রার্থনা করা হয়। আমার স্ত্রী, ছেলে—সবাই এই রীতিতে বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, ধর্ম হল বিশ্বাসের জায়গা, যেখানে আলাদা কিছু নেই, সবাই এক।”
দেবাশীষ বাবুর স্ত্রী শম্পা ঘোষও জানান, বিয়ের পর থেকেই তিনি এই মাজারের দেখভাল করছেন। তিনি বলেন, “আমি প্রতিদিন যেমন দেব-দেবীর পুজো করি, তেমনই মাজারে ধূপ, আতর, গোলাপ জল আর চাদর চড়াই। আমাদের পরিবারে এটা বহু বছর ধরে চলে আসছে।”
চুঁচুড়ার ঘোষ বাড়ির এই ধর্মীয় সহাবস্থান নিছক কল্পকথা নয়, বরং সম্প্রীতির এক বাস্তব উদাহরণ। একদিকে মন্দিরের পূজো, অন্যদিকে মাজারের প্রার্থনা—এটি শুধু এক পরিবারের ঐতিহ্য নয়, সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা বহন করছে।
দেখুন আরও খবর: