কলকাতা: বাঘাযতীনে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মালবিকা মৈত্রকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়, তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধরানো হয় আগুন—এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ৷ লালবাজার সূত্রে খবর, এই খুনের পেছনে কার হাত রয়েছে, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ ৷ গোয়েন্দাদের সন্দেহের কেন্দ্রে রয়েছেন মালবিকা মৈত্রের ছেলে অভিজিৎ মৈত্র, যিনি ঘটনার পর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ৷
তদন্তে উঠে এসেছে, অভিজিৎ শেয়ার বাজারে বিপুল লগ্নি করেছিলেন, যেখানে সম্প্রতি বড়সড় মন্দা চলছে ৷ লালবাজারের অনুমান, আর্থিক ক্ষতির জেরেই কি মা-কে খুন করেছেন অভিজিৎ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা ৷ শুধু তাই নয়, অভিজিতের আর্থিক লেনদেনের দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: ভুতুড়ে ভোটার এড়াতে দলগুলিকে বিএলএ নিয়োগের আর্জি কমিশনের
গোয়েন্দাদের হাতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে ৷ ঘটনার একদিন আগে মালবিকা মৈত্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯ লক্ষ টাকা অভিজিতের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছিল ৷ তার পরের দিনই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় ৷ আর এরপর থেকেই অভিজিৎ নিখোঁজ ৷ পুলিশ মনে করছে, এই টাকা লেনদেন এবং হত্যাকাণ্ডের মধ্যে গভীর সম্পর্ক থাকতে পারে ৷ অভিজিৎ ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই কি এমন ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? তদন্ত চলছে ৷
এদিকে, মা-ছেলে যে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন, সেখানকার প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ৷ জানা গিয়েছে, অভিজিৎ তাঁর মায়ের যথেষ্ট যত্ন নিতেন, প্রতিদিন নিয়ম করে অফিস যেতেন এবং সোজা বাড়ি ফিরতেন ৷ কিন্তু, কয়েক মাস ধরে তাঁর মধ্যে বড় পরিবর্তন দেখা যায় ৷
প্রতিবেশীদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে অভিজিৎ প্রায়ই মেজাজ হারাচ্ছিলেন, ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার শোনা যেত ৷ যদিও তখন এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামাননি ৷ এখন তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, আচরণের এই বদল এবং মায়ের মৃত্যুর মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না ৷ অভিজিৎ সত্যিই এই খুনের পেছনে আছেন নাকি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে মরিয়া পুলিশ ৷
দেখুন আরও খবর: