লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ওয়াকফ বিল, ঠিক কৃষি বিল যেভাবে পাশ হয়েছিল, সেইভাবেই, এবারেও বিল পাশ করার সময়ে, পেশ করার সময়ে, আলোচনার সময়ে হাজির ছিলেন না নরেন্দ্র মোদি। আসলে তিনি বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, নতুন ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় কিনতে হবে, অনেক কাজ, তাই সম্ভবত অমিত শাহকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন, যত খুশি মিথ্যে বলে পাশ করিয়ে নিন এই বিল, এটাই ছিল ইনস্ট্রাকশন, নির্দেশ। অমিত শাহ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন সেই নির্দেশ, হুড় হুড় করে কোনও রাখঢাক না রেখেই যত মিথ্যে কথা বলা দরকার, বলেছেন, পাশ হয়েছে ওয়াকফ বিল, কিন্তু ওনাদের মনেই নেই কৃষি বিলের কথা, মানুষ রাস্তায় নেমে পড়লে সেই কৃষি বিল যেমন ফেরত নিতে হয়েছিল, বিরোধীরা একসঙ্গে রাস্তায় নামলে এই বিলও ফেরত নিতে বাধ্য হবে এই মোদি সরকার। কতখানি নির্লজ্জ হলে সংসদে দাঁড়িয়েই মিথ্যে বলে দেওয়া যায়? অমিত শাহ বললেন, ‘‘একজন মুসলিম তো চ্যারিটি কমিশনার হতেই পারেন। তাঁকে ট্রাস্ট দেখতে হবে না, আইন অনুযায়ী ট্রাস্ট কী ভাবে চলবে, সেটা দেখতে হবে। এটা ধর্মের কাজ নয়। এটা প্রশাসনিক কাজ। সব ট্রাস্টের জন্য কি আলাদা আলাদা কমিশনার থাকবে? আপনারা তো দেশ ভাগ করে দিচ্ছেন। আমি মুসলিম ভাই-বোনদের স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই, আপনাদের ওয়াকফ বোর্ডে কোনও অমুসলিম থাকবে না। এই আইনে এমন কিছু নেই।’’
অথচ দেখুন বিলে কী লেখা আছে, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের গঠন: ১৯৯৫-এর আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কাউন্সিলের পদাধিকারবলে চেয়ারম্যান। কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য, জাতীয় খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি, সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং মুসলিম আইনের বিশিষ্ট পণ্ডিতরা অন্তর্ভুক্ত। আইন অনুযায়ী, মন্ত্রী ব্যতীত কাউন্সিলের সকল সদস্যকে মুসলিম হতে হবে এবং তাদের মধ্যে অন্তত দু’জন মহিলা হতে হবে। এবারের বিলে সাফ বলা আছে কাউন্সিলের সংসদ সদস্য, প্রাক্তন বিচারপতি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মুসলিম হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই, মানে তারা অমুসলিম হতেই পারে। এই বিলে আরও দু’জন সদস্য অ-মুসলিম রাখাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডের গঠন: আইন অনুযায়ী, একটি রাজ্যের মুসলিমদের নির্বাচনী কলেজ থেকে সর্বোচ্চ দু’জন সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে: (i) সংসদ সদস্য, (ii) বিধানসভার সদস্য এবং বিধান পরিষদের সদস্য, এবং (iii) বার কাউন্সিলের সদস্য, বোর্ডের জন্য। বিলটি সংশোধন করে রাজ্য সরকারকে উপরের প্রতিটি গোষ্ঠী থেকে একজন ব্যক্তিকে বোর্ডে মনোনীত করার ক্ষমতা দেয়। তাদের মুসলিম হওয়ার প্রয়োজন নেই। এতে যোগ করা হয়েছে যে বোর্ডের অবশ্যই থাকতে হবে: (i) দু’জন অ-মুসলিম সদস্য, এবং (ii) শিয়া, সুন্নি এবং মুসলিমদের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে অন্তত একজন করে সদস্য। আইন অনুযায়ী, অন্তত দু’জন সদস্য মহিলা হতে হবে। বিলটি বাধ্যতামূলক করে যে দু’জন মহিলা মুসলিম সদস্য হতে হবে। তারমানে বিলে পরিষ্কার লেখা আছে যে ওয়াকফ বোর্ডে কি রাজ্য কি সেন্ট্রাল কাউন্সিল সর্বত্র অমুসলিম সদস্য রাখা যাবে। দেশের কোনও মন্দিরের ট্রাস্টিতে কি মুসলমান সদস্য আছে? কোনও গুরুদ্বারাতে কি কোনও মুসলিম সদস্য আছে? নেই, তাহলে ওয়াকফ বোর্ডে কেন? প্রশ্ন উঠতেই অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন কোথাও অমুসলিমদের রাখা হবে না, অথচ বিলে সাফ বলা আছে যে অমুসলিমদের রাখতে হবে। মুসলমান মানুষজন সময়ে সময়ে তাঁদের সম্পত্তির কিছু অংশ বা পুরোটাই মুসলমান মানুষজনের উন্নতি, তাদের শিক্ষা বা তাদের বিভিন্ন সামাজিক কাজের জন্য, সাহায্যের জন্য এক অছি বা ট্রাস্টের কাছে দিয়ে যান, দিয়ে গেছেন এই সম্পত্তিই হল ওয়াকফ। এই সম্পত্তি দেখাশুনো করার জন্য যেমন ওই অছি আছে তেমন জেলা বা রাজ্য জুড়ে ওয়াকফ বোর্ড আছে যারা সেই সম্পত্তির ঠিকঠাক দেখভাল হচ্ছে কি না বা যে উদ্দেশ্যে এই জমি, সম্পত্তি দেওয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কি না তা দেখাশুনো করেন, এবং তা নিয়ে দেশের আইন আছে।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মহুয়া মৈত্র, সাকেত গোখলে কাঁপিয়ে দিলেন সংসদ
দেখাশুনো কি ঠিকঠাক করে হয়? না, বহু অভিযোগ আছে, বহু ক্ষেত্রে ওই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে, বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও আছে, তা নিয়ে ঝুটঝামেলা আছে আর আইনি লড়াই তো আছেই। এবার সেই আইনে মোদি সরকার কিছু সংশোধন আনলেন। লোকসভাতে বিল পাশ হয়েছে, রাজ্যসভাতেও হবে আর তা নিয়ে এক বড়সড় গোলযোগ বেঁধেছে। সে গোলযোগের স্বাভাবিক আর মূল কারণই হল মুসলমান মানুষজনের কাছে মোদি–শাহ, বিজেপি–আরএসএস এর বিশ্বাসযোগ্যতার বিরাট অভাব, সে বিশ্বাসযোগ্যতা নেই বললেও ভুল বলা হয় না। আসুন একটু সেই গোলমেলে আইন সংশোধনের বিষয়টাকে বুঝে নিই। ২০২৪ সালের ওয়াকফ সংশোধনী বিলে প্রধান প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলি কী কী? ২০২৪ সালের ওয়াকফ সংশোধনী বিলে কিন্তু খুব মামুলি কোনও সংশোধন নয় বরং যে আইন ছিল তাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে তিনটি নতুন ধারা যোগ করা হয়েছে: ৩এ, ৩সি, এবং ৩সি২। ধারা ৩এ: এতে বলা হয়েছে যে কেউ শুধুমাত্র তখনই ওয়াকফ তৈরি করতে পারবে যদি সে সম্পত্তির আইনি হেফাজতকারী হয় এবং তার কাছে সম্পত্তি হস্তান্তর বা উৎসর্গ করার অধিকার থাকে। মানে সাধারণ ভাষায় সম্পত্তিটা যেন তার দখলে থাকে আর সেই সম্পত্তি তার বিক্রি বা দান করার অধিকার থাকে। এবার সমস্যা হল ধরুন দিল্লির জামা মসজিদ, যেখানে মূল মোতাওয়াল্লি পরিবার, মানে যারা আদতে দেখরেখ করত, যাঁদের কাছে বিক্রি করার দান করার অধিকার ছিল, তাঁরা পাকিস্তানে চলে গেছেন বা দিল্লির জোরবাগের মসজিদ, যেটি বাহাদুর শাহ জাফরের মা তৈরি করেছিলেন, সেই পরিবারের আজ আর কেউ বেঁচেই নেই, বা যাঁরা সেই দাবি করছেন তা নিয়ে প্রচুর ডিসপিউট আছে। তাহলে সেই সম্পত্তিগুলো কী হবে? আইন বলছে তাহলে সেই সম্পত্তি সরকারের কাছে চলে যাবে, হ্যাঁ এইখানেই সমস্যার সূত্রপাত। মুসলমান মানুষজন ভাবছেন যে তাঁদের এতদিনের ওয়াকফ সম্পত্তি সরকার নিয়ে নিতে চাইছে। ধারা ৩সি: এতে বলা হয়েছে যে সরকারি সম্পত্তি, যা আগে বা পরে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত বা ঘোষিত হয়েছে, তা ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে না। ধারা ৩সি ২: সরকারকে এই ক্ষমতা দেয় যে ওয়াকফ বোর্ডের বদলে তারাই ঠিক করতে পারবে কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি জমি কি না, এবং জেলা কালেক্টরের সিদ্ধান্ত এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে।
মুসলমান ধর্মীয় সংগঠনগুলি এর বিরোধিতা করছে, কারণ তারা মনে করে সরকার এমন সব জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করতেই পারে যেগুলোর মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে। এ নিয়ে আরও বিশদে আসছি তার আগে বলি এছাড়াও এই সংশোধনী বিলে ১৯৯৫ সালের আইনে থাকা ‘ওয়াকফ বাই ইউজ’ ধারণাটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান আইনে, কোনও সম্পত্তি যদি মুসলিমরা ধর্মীয় কাজে বিনা বাধায় দীর্ঘদিন ব্যবহার করে, তবে তা ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হতে পারে, মানে বহু এরকম ওয়াকফ সম্পত্তি আছে যা দলিল বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই বহু বছর ধরে, কখনও কখনও ২৫০/৩০০/৪০০ সাল ধরে ওয়াকফ হিসেবেই গণ্য হয়ে আসছে, এই বিলে তা নিয়ে সাফ বলে দেওয়া আছে যে ওয়াকফ বাই ইউজ, মানে ব্যবহার হচ্ছে বলেই তা ওয়াকফ সম্পত্তি তা কিন্তু আর হবে না। মানে বাবরের সময়ের কোনও ওয়াকফ সম্পত্তির পুরো কাগজ চাই যদিও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্মের কাগজপত্র নেই বলেই জানা গেছে, বা আমাদের অনেকেরই তেমন কোনও কাগজ নেই। প্রস্তাবিত আইনে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের গঠনে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এতে অমুসলিম ব্যক্তিদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা বোর্ডে কমপক্ষে দু’জন অমুসলিম সদস্য রাখবে।
তিরুপতি মন্দির ট্রাস্ট বা জগন্নাথ দেব ধামের যে ট্রাস্টি বোর্ড তাতে মুসলমান সদস্য কজন আছেন? ক’জন রাখার বিধান আছে? এই বিলে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ১৪ থেকে বাড়িয়ে ২৩ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে শুধু চেয়ারম্যান অমুসলিম হতে পারেন, বাকিরা মুসলিম। নতুন প্রস্তাবে দুজন অমুসলিম থাকতেই হবে, এবং ১৩ জন পর্যন্ত অমুসলিম হতে পারে। মানে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য অমুসলমান হতেই পারেন, এরকম অদ্ভুত কথা কেউ শুনেছেন? এমনকী এই বিলে ‘ওয়াকফ আইন’ নামটি পরিবর্তন করে “ইউনিফাইড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট এমপাওয়ারমেন্ট এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট” করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি যিনি দেখাশুনো করেন তাঁকে মোতাওয়াল্লি বলা হয়। এই বিলে ‘মোতাওয়াল্লি’র সংজ্ঞা এবং ওয়াকফ আইনের ধারা ৪০ তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ধারা ৪০ অনুযায়ী আগে ওয়াকফ কমিশনারের ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত ও তদন্ত করার ক্ষমতা ছিল যা এখন এখন আর থাকবে না।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো মুসলিম ধর্মীয় সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র বিরোধিতার জন্ম দিয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, সরকার তাঁদের ওয়াকফ সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নিতে চায়। প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ ও অন্যান্য প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে, যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ দলিল নেই, আংশিক দলিল আছে বা কিছুই নেই কিন্তু বছরের পর বছর ধরে তা চলছে। বিল এল, বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) কাছে পাঠানো হল, যেখানে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সদস্যরা আছেন। সেখানে এই বিরাট বিরোধিতার মুখে পড়েছে সরকার, কিন্তু সে সবকে আমল না দিয়েই সেই বিল তারা পাশ করাবেই, এ এক ধরনের পলিটিকাল এজেন্ডা হয়ে উঠেছে, দেশের ১৭-১৮ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলমান মানুষজনদের কোনও কথা না শুনেই এক আইন দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে আরও চওড়া করবে। দেশের একটা বড় হিন্দু মন্দিরের ট্রাস্টিতে একজনও মুসলমান থাকার কোনও উদাহরণ আছে? একটাও নেই। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ থেকে পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দির থেকে দক্ষিণের তিরুপতি বা গুরুবায়ুর মন্দির কোথাও নেই। পরিচালন সমিতি বাদই দিলাম এগুলোর মধ্যে বেশিরবাগ মন্দিরে অহিন্দু, বিশেষ করে মুসলমানদের ঢোকার নিয়ম পর্যন্ত নেই, মুসলমান বাদ দিন, বাবু জগজীবন রাম তখন দেশের ডিফেন্স মিনিস্টার, তাঁর স্ত্রীকে পুরীর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, বাবু জগজীবন রামও ওই মন্দিরে পা রাখেননি। সেই দেশে আজ আরও বড় হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীরা মুসলমানদের ওয়াকফ বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে বসার জন্য আইন আনছেন।
এই আইনেই বলা হচ্ছে সরকার ঠিক করবে কোনটা ওয়াকফ সম্পত্তি কোনটা নয়, আগে ওয়াকফ বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত সরকারকে জানাত বা ওয়াকফ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করত, এই বিলে বলা হচ্ছে সেই ক্ষমতা সরকারের থাকবে, যে সরকার প্রতিদিন প্রতিটা মসজিদের নীচে মন্দির থাকার দাবি করেই যাচ্ছে, সেই সরকারই ঠিক করে দেব কোনটা ওয়াকফ সম্পত্তি, আর দেবোত্তর সম্পত্তি? তা কেবল হিন্দু পুরোহিত বা জমির মালিকদের ঘোষণা অনুযায়ী হয়ে যাবে, এই দ্বিচারিতা আসলে এক গভীর চক্রান্ত। এটা ঘটনা যে শিক্ষার অভাবের সুযোগ নিয়ে, দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির মুসলমান মানুষ এই ওয়াকফ সম্পত্তি লুঠপাট করে খাচ্ছে, এটা ঘটনা যে বহু ওয়াকফ সম্পত্তির হাতবদল হচ্ছে বেআইনি ভাবেই কিন্তু সেই সমস্যা দূর করতে গিয়ে আইনে যে পরিবর্তন আনার কথা বলছে এই সরকার তা এক ধরনের সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয়। যে অযোধ্যা মন্দির নিয়ে আরএসএস বিজেপি হিন্দুত্ববাদীদের এত গর্ব, সেই মন্দিরের ট্রাস্টিতে একজন মুসলমান নেই, পাটনা সাহিব বা বা অমৃতসরে হ্রমিন্দ্র সাহিবে কজন মুসলমান আছেন তাদের ট্রাস্টি বোর্ডে? একজনও নেই, গোয়া ব্যাসিলিকা অফ বম জেসাস-এ কজন মুসলমান ট্রাস্টি আছেন? একজনও নেই, তাহলে দিল্লির জামা মসজিদের ট্রাস্টিতে কেন একজনও অমুসলমান থাকবেন? এই প্রশ্নের জবাব নেই বলেই অমিত শাহ মিথ্যে বলছেন।