Monday, October 20, 2025
HomeScrollFourth Pillar | মুসলমান সংখ্যালঘু মানুষদের দেশ নয় এই ভারত?

Fourth Pillar | মুসলমান সংখ্যালঘু মানুষদের দেশ নয় এই ভারত?

কিছু অত্যন্ত জরুরি কথা বলে নেওয়া যাক, যা আমাদের স্বাধীনতার লড়াইয়ের সঙ্গে যুক্ত, যা আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত, যা আমাদের সংবিধানের সঙ্গে জড়িত, যে বোধগুলো নিয়ে আমরা ৪৭ সাল থেকে নতুন ভারতের দিকে রওনা দিয়েছিলাম, যে চিন্তা চেতনা নিয়ে ভগত সিং চন্দ্রশেখর আজাদ সূর্য সেন বা আসফাকুল্লা প্রাণ দিয়েছিলেন দেশের জন্য। আজ সেই বোধ চিন্তা সেই চেতনা আদর্শ নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে বৈকি। স্বাধীনতার সঙ্গে দেশভাগ এল আমাদের ওপর। বলা ভাল ওধারে পঞ্জাব আর এধারে আমার বাংলা-কে ভাগ করে এল দেশের স্বাধীনতা। দেড় কোটি মানুষ এপার থেকে ওপারে গেল, ওপার থেকে এপারে এল। র্যা ডক্লিফ সাহেব আমার উঠোন, আমার খেলার মাঠ, আমার জমিন আসমানের মধ্য দিয়ে লাইন টেনে বলে দিলেন, এটা ভারত, ওটা পাকিস্তান। এল দ্বিখন্ডিত স্বাধীনতা।

প্রশ্নগুলো নেহাতই জরুরি, কেন না স্বাধীনতার ৭২ বছর পরে দেশের ২৮/২৯ কোটি মানুষ আতঙ্কিত, ভয়ে আছে, ভয় পাচ্ছে কারণ তাঁদের অতীত তাদের সামনে এসে হাজির, তাঁদের কি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হবে? তাঁদের কি ঘাড় ধরে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে? তাঁদের কাছে যে কাগজ আছে তাই কি যথেষ্ট? নাকি এই কাগজগুলো থাকার পরেও তাঁরা থাকবে তালিকার বাইরে? হিন্দু জনসংখ্যার কাছে কি কোনও অপশন ছিল? আর কোনও জায়গা ছিল যাওয়ার? তাঁদের তো ভারত ছেড়ে কোথাও যাবার উপায়ই ছিল না। কিন্তু যাঁদের কাছে ছিল? যাঁরা তার পরেও গেল না, গেল না কারণ তারা জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বে বিশ্বাস করেনি। বিশ্বাস করেছে যে হিন্দু মুসলমান একসঙ্গেই থাকা যায়, থাকতে হয়। তাঁরা নিজেদের ভিটে ছেড়ে যাবার কথাই ভাবেনি। ভাবেনি কারণ আমরা ভারতবাসীরা বলেছিলাম, আমরা অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ গড়ে তুলব, সেকুলার স্টেট। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। আমরা সবাই বলেছিলাম। তাঁরা বিশ্বাস করেছিল। আমরা কি ভুল বলেছিলাম? আমরা কি মিথ্যে বলেছিলাম।

এতদিন পর সেই কথাগুলো, সেই পুরনো দলিল দস্তাবেজ আমাদের ঘেঁটে দেখাতে বলা হচ্ছে। লজ্জা। এতদিন পর সেই প্রশ্ন আমাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। লজ্জা! এতদিন পর আমাদের দেশের ২৮/২৯ কোটি মানুষ আমার সহনাগরিক কিনা সেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। লজ্জা! তবুও আর একবার শেষবারের মতো এই বিষয়ের নিষ্পত্তি হয়ে যাক। শেষবারের মত ঐ বর্বর লোকগুলোর মুখের ওপর পুরোনো সত্যিটা আবার বলে দেওয়া যাক। মনে আছে জামাইতুল-উলেমা-এ-হিন্দ, যাঁরা দ্বিজাতিতত্ত্বের বিরোধিতা করেছিল, যাঁরা কায়েদে আজম জিন্নাহ র বিরোধিতা করেছিল। এঁরা বলেছিলেন যে, ভারত ভাগ করা যাবে না। বলেছিলেন, আমরা একসঙ্গেই থাকব। এখন আজ, ৭২ বছর পর সেই সংগঠনের ভেতর থেকে প্রশ্ন উঠছে, সেই সংগঠন প্রশ্ন করছে, আমরা একসঙ্গে থাকতে পারব তো? আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হবে না তো? মৌলানা মহমুদ আদনী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রাণ যায় যাক এবার তো রাস্তাতেই নামতে হবে, প্রাণ গেলেও এ লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব। কখন মানুষ প্রাণ দেবার কথা বলে? শেষ ভরসাটাও চলে গেলে? দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে? কি এমন হল যে, তাঁদের ভরসা চলে যাচ্ছে? তাঁদের পিঠ ঠেকে যাচ্ছে দেওয়ালে? কেন আমার দেশের সহনাগরিক মুসলমানরা এরকম ভয় পাচ্ছেন? রাজনীতি তাঁদের বিরুদ্ধে? প্রশাসন? বিচার বিভাগ? তাহলে কি আমাদের অজান্তেই ঘটে গেছে কোনও নিঃশব্দ বিপ্লব। সংবিধান কি তাহলে আর ধর্ম নিরপেক্ষ নয়? সরকার কি আর ধর্মনিরপেক্ষ নয়? জামাতুল-উলেমার সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শনে নামলে তাদের বলা হচ্ছে আপনারা হিন্দু বিরোধী দেশ বিরোধী, রাস্তায় না নামলে ঘরের ভেতর থেকে আওয়াজ আসছে আমরা বিপন্ন। কোথায় যাবে তারা? আমার দেশের ২০% মানুষ বিপন্ন স্বাধীনতার ৭২ বছর পরে? মুসলমানদের পোষাক নিয়ে ইঙ্গিত করছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। পুলিশ অফিসার হুমকি দিচ্ছে, রাস্তায় নামলে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেব। শেখ আবদুল্লা জিন্নাহর বিরুদ্ধে কথা বলতেন, জিন্নাহ শেখ আবদুল্লাহকে ইসলাম বিরোধী বলতেন। আজ সেই শেখ আবদুল্লার ছেলে নাতি সব্বাই নাকি দেশদ্রোহী। মানে নির্বাচিত সাংসদ বিধায়ক সবাই দেশবিরোধী? কাশ্মীর জ্বলছে এক ইস্যুতে, আসাম তার ভাষা সংস্কৃতির আন্দোলনে। এদিকে পঞ্জাব বাংলার মানুষ চিন্তিত কি হবে এনআরসি-তে? কী হবে এনপিআর-এ? কারণ তাদের ক্ষত তো সবথেকে বেশি। ক’জন গুজরাতিকে তাঁর মাতৃভূমি ছাড়তে হয়েছে? ভোট আসলেই অমিত শাহ থেকে শুভেন্দু অধিকারী নেমে পড়ছেন হিন্দু বিপন্ন, আর তাই এনআরসি চাই, সিএএ লাগু করা হবে বলে। সব থেকে বিপন্ন বাংলা, এখানেই সব থেকে বেশি বিষ ছড়াচ্ছে। আন্দামানে সেলুলার জেলে চলে যান, কালাপানির সাজা কারা পেয়েছিল, কারা শহীদ হয়েছিল? তালিকা দেখুন। সে তালিকার ৭০ শতাংশ বাঙালি, হ্যাঁ ৭০%, সেই বাঙালির দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কারা? যাঁরা স্বাধীনতার প্রশ্নে ছিলেন গান্ধীর সঙ্গে, তাঁরা আজ গান্ধী হত্যাকারীদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন। কি আশ্চর্যভাবে ইতিহাস তার গতিপথ পাল্টাচ্ছে। দেশের সংখ্যালঘু মানুষজন আজ যে সংশয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে, যে বিপন্নতা বোধ তাদের ভেতরে কাজ করছে, আসুন তাদের দিকে চোখ ফেরাই।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদি–বিজেপি বিরোধী জোট কি ভেঙে যাওয়ার মুখে?

আম্বেদকর সংবিধান সভার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, রাজেন্দ্র প্রসাদ সেই বিবরণি লিখছিলেন, প্যাটেল, নেহেরু, শ্যামাপ্রসাদ, আবুল কালাম আজাদরা ২৯৯ জন সদস্য ছিলেন। ২৮৪ জন এই খসড়ায় সই করেছিলেন, তার মধ্যে ৩০ জন মুসলমানও ছিলেন। মহম্মদ ইস্মাইল সাদিব, কেটিএন আহমদ ইব্রাহিম, মেহেবুব আলি বেগ মাদ্রাজ থেকে, বোম্বে থেকে আবদুল কাদের মহম্মদ শেখ, আফতাব আহমদ খান ছিলেন, বাংলা থেকে জশুদ্দিন আহমদ, নজরুদ্দিন আহমদ আব্দুল আলিম গজনভি, রাদিভ এহসান, আবদুল হামিদ- এই ৫ জন ছিলেন। সংযুক্ত প্রান্ত মানে ইউপি, এমপি মিলিয়ে যে অঞ্চল সেখান থেকে বেগম এজাজ রসুল, হ্যায়দর হুসেন, হজরত মোহানি মহম্মদ ইসমাইল খান, রফি আহমদ কিদোয়াই মহ হাফিজুর রহমান-এর মত স্কলাররাও ছিলেন, সংবিধান কেবল হিন্দুরা লেখেননি। বিহার থেকে ইমাম হোসেন, সৈয়দ জাফর ইসলাম লুৎফুর রহমান মহ তাহেব, তাজমুল হোসেন, আসাম থেকে আবদুর রউফের মত প্রাজ্ঞ মানুষ ছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শেখ আবদুল্লাও ছিলেন। এই দেশের সংবিধান বানানোর ইতিহাসে এঁরাও ছিলেন। একসঙ্গে দেখেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রর স্বপ্ন। সেই জন্যই একবার সংসদে অটল বিহারি বাজপায়ি বলেছিলেন যে, দেশ তার সংবিধান কে নিয়ে চলবে, ধর্ম নিয়ে নয়। কিন্তু আজ সেই দেশ ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেবার আইনও এনে ফেলেছে। কারা রাস্তায়? কারা সংশয়ে? কাদের জামা কাপড় দেখে প্রধানমন্ত্রী চিনে ফেলছেন? মুসলমানরা। হ্যাঁ এতদিন মুসলমানদের বিক্ষোভের অংশ হিসেবেই দেখা যেত, এবার ছবিটা বদলে গেছে। তারাই কখনও দিল্লি, কখনও জামিয়া মিলিয়াতে, কখনও শাহীনবাগে, কখনও পার্ক সার্কাসে ধর্ণায়। তাঁরাই বর্শামুখ, তাঁরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁদের হাতে জাতীয় পতাকা, তাঁরাই সংবিধান পড়ছেন, তাঁরাই চিৎকার করে বলছেন “সভি কা খুন সামিল হ্যায় ইস মিট্টি মে, কিসিকা বাপকা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়”, সব্বার রক্তে রাঙা এই দেশের মাটি, কারোর বাপের সম্পত্তি নয়। মেইন স্ট্রিম মুভমেন্ট-এর প্রতিটা জায়গাতে, কৃষক থেকে শ্রমিক থেকে নাগরিক আন্দোলনে এই প্রথম তারা একদম সামনের সারিতে।

৪৭-এর পর থেকে একটু মুসলমানদের অবস্থাটা দেখে নেওয়া যাক। মুসলমান সম্প্রদায়ের ৪০ শতাংশ মানুষ গরিবী সীমার নীচে। মাসে রোজগার ৫৫০ টাকারও কম। এমনিতেই দেশে ১০ শতাংশ মানুষের কাছে ৭৫ শতাংশ সম্পদ রাখা আছে। আর ৬০% মানুষের কাছে ৪ শতাংশের কম। সেই দেশে এই আয় এমনিতেই কম। সংখ্যালঘুদের অবস্থা আরও খারাপ। মুসলমান একটি মানুষের প্রতিদিনের আয় ৩২ টাকা ৭০ পয়সা। অথচ মুসলিম জনসংখ্যার ৩৫%। আমাদের দেশের শ্রমশক্তি, তাঁদের শ্রম মূলত কন্সট্রাক্সন, বেকারি, সেলাই, কুকিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখে। তাঁদেরকে সব দল কখনও না কখনও ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছে, কখনও এই মসজিদের ইমাম, কখনও ঐ মসজিদের ইমামকে সামনে দাঁড় করিয়ে রাজনীতির বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কখনও তাঁদের বিরুদ্ধে মেরুকরণ তাঁদের দিকে ঘৃণা ছড়িয়ে মেরুকরণের রাজনীতি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাঁদের সস্তা সুপারি কিলার হিসেবে ব্যবহার করেছে, ধর্মগুরুরা তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে একে-৪৭, তারা টেররিস্ট হয়েছে। তারপর আপামর মানুষের মনে একটা ধারণা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে যে মুসলমান মানে ৮ টা বৌ, ২০ টা ছেলেপিলে, মুসলমান মানে নোংরা বস্তি, মুসলমান মানে সমাজবিরোধি ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ন্যারেটিভ বহু মানুষ খেয়েছেন, বমি করেছেন। আরও ঘৃণা আরও বিচ্ছিন্ন করেছে তাঁদের। সাংঘাতিক এক কৃষ্ণ গহ্বরে ঢুকে গেছে মুসলমান সমাজ। ওদিকে তাঁদের ভেতর থেকে যে একটা রাজা রাম মোহন রায়, বা বিদ্যাসাগর বা বিবেকানন্দ বেরিয়ে আসেনি, এটাও দুর্ভাগ্য। ঠিক এই সময়েই রাজনীতির কারবারিরা এবার সরাসরি সক্রিয়, আরও বড় মেরুকরণের দিকে তারা, ছাঁকনিতে ছেঁকে নিয়ে ডিটেনশন সেন্টারে ফেলে রাখা কিম্বা বাইরে দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক।

আরএসএস-এর সরসংঘ চালক এরাজ্যে এসে তো বলেই দিয়েছেন ১৩০ কোটিই হিন্দু। তাঁরা হিন্দু আচরণ নিয়েই থাকবে। অন্তত দু’জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেই দিয়েছেন হিন্দুদের তো আর রাষ্ট্র নেই তাই…… তাই কী? সংবিধানের শপথ নিয়ে সংবিধান কেই শেষ করার খেলা? একবার শাসক দলের ছবিটা দেখুন, ২৪০ জন সাংসদ। ২৪০ জনের একজনও মুসলমান নয়। দেশের সংবিধান সভায় ৩০ জন ছিলেন, দেশের শাসক দলে ১ জন সাংসদ নেই। দেশের বিরাট এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বিজেপি একজনকে টিকিটই দেয় নি, জেতার প্রশ্নই নেই। মানে ইউপি-তে শাসকদলে একজনও এমএলএ নেই, যিনি ধর্মে মুসলমান। সে রাজ্যের দারোগা প্রকাশ্যে বিক্ষোভকারীদের পাকিস্তানে পাঠানোর কথা বলবে না তো কোথায় বলবে? ঘরে ঢুকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মারছে, বলছে বল ‘জয় শ্রী রাম’। বলবেই তো, কারণ তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তাঁদের প্রধানমন্ত্রী পোষাকের দিকে আঙুল তুলছেন। তার মানে যে রাজনীতি দেশের আইন, অর্থনীতি, দেশের শিল্পনীতি, স্বাস্থনীতি, সমস্ত ব্যয়বরাদ্দ নির্ধারণ করে সেই দেশের শাসকদলের রাজনৈতিক ভাবে মুসলমানদের দরকার নেই। পরিষ্কার, দরকার নেই। কেবলমাত্র গরিষ্ঠ হিন্দুদের নিয়েই তাঁরা দেশ চালাবে। যদিও দেশ চালানোর জন্য যে সংবিধান রচনা হয়েছিল সেই সংবিধান সভায় ৩০ জন মুসলমান ছিলেন। এবার সেই মুসলমান সম্প্রদায় যদি নিজেদের অসুরক্ষিত মনে করে, সংশয়ে ভোগে তাহলে কি সেটা একেবারেই অমুলক? আবুল কালাম আজাদ ১৯৪০-এ কংগ্রেস দলের সভাপতি। তাঁর ভাষণে বারবার পাওয়া যাচ্ছে যে, ভারতবর্ষে মুসলমান দের অস্ত্বিত্ব কেবল সংখ্যালঘু হিসেবে থাকতেই পারে না, তাঁরা দেশের মূল স্রোতের অভিন্ন অঙ্গ, তিনি বলছেন যে, সমুদায় হিসেবে মুসলমানরা এখানেই সুরক্ষিত জিন্নাহর সঙ্গে নয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, মোরারজি দেশাই, জগজীবন রাম, চরণ সিং বা সংসদের বিশিষ্ট নেতাদের কথা শুনে তো মনে হয়নি মুসলমানরা আমাদের রাজনৈতিক সামাজিক জীবনে কোনও বিচ্ছিন্ন অঙ্গ। অথচ আজ সে সমস্ত ধারণাগুলোই বদলে যাচ্ছে। পাশের মানুষটার মাথায় ফেজ থাকলে দৃষ্টি পালটে যাচ্ছে, পরনের পোশাক দেখে চেনার চেষ্টা হচ্ছে পড়শি কে, কে কোন খাবার খাবে বা না খাবে তাই নিয়ে কাজিয়া হচ্ছে, পিটিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে কারণ সে মুসলমান? থানায় পুলিশ পেটাচ্ছে বলছে বল ‘জয় শ্রী রাম’? কী হয়ে গেল আমাদের? ৪৭ থেকে আমরা এগিয়েছিলাম ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান নিয়ে, এগিয়েছিলাম আরও উন্নত দিন আনার জন্য। কোথায় কোন বাঁকে ভুল পথে নেমে পড়লাম আমরা। বিজেপি সরকার তো একটা বিল এনেছে। তাঁরা তো তাঁদের ঘোষণা মতই এগোচ্ছে হিন্দু রাষ্ট্র গড়ার দিকে। কিন্তু আমরা? বৃহত্তর সমাজ, উদার তার্কিক ভারতীয়? Argumentative Indians? কোথায়? রবি ঠাকুর আমাদেরই রাজ্যে রাস্তায় নেমে রাখি পরালেন, সম্প্রিতীর কথা বললেন, বিদ্যাসাগর ধর্মের ওপরে জ্ঞান, শিক্ষাকে স্থান দিলেন, রামমোহন এই মাটিতে দাঁড়িয়েই হিন্দু ধর্মের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়লেন, এই ভারতেই বিবেকানন্দ বললেন, “I am proud to belong to a religion which has taught the world both tolerance and universal acceptance. We believe not only in universal toleration, but we accept all religions as true. I am proud to belong to a nation which has sheltered the persecuted and the refugees of all religions and all nations of the earth.” সেখানে আমার দেশের ১৮/২০ কোটি মানুষ নিজেদেরকে অসুরক্ষিত মনে করছেন, সংশয়ে আছেন, যদিও তাঁদের ৩০ জন আমার দেশের সংবিধান তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন।

Read More

Latest News