skip to content
Sunday, March 16, 2025
HomeScrollFourth Pillar | মোদি–বিজেপি বিরোধী জোট কি ভেঙে যাওয়ার মুখে?
Fourth Pillar

Fourth Pillar | মোদি–বিজেপি বিরোধী জোট কি ভেঙে যাওয়ার মুখে?

ইন্ডিয়া জোটকে বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে মমতা ছাড়া অন্য কোনও মুখের কথা ভাবাও যাবে না

Follow Us :

কংগ্রেসের মাথায় একটাই কথা ঢুকে গেছে, কেউ কোথাও নেই, তারাই সব হবে, ওই রাহুল বাবা আর প্রিয়াঙ্কা দিদিমণি মিলেই বিজেপিকে সরিয়ে কংগ্রেসি রাজ আনবেন। জেনেটিক প্রবলেম। তারমধ্যে আবার বিভিন্ন রকমের ফল্টলাইন আছে, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র রাজস্থানে যে ছোট্ট সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গী, সেই দল কেরালাতে মুখোমুখি লড়ছে কেবল নয়, কংগ্রেসকে বিজেপির বি টিম বলছে। এধারে বাংলাতে সিপিএম আগে রাম পরে বাম করতে গিয়ে সর্বাঙ্গে ঝণ্ডুবাম মলম মেখেও মন ও শরীরের ব্যথা সারিয়ে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। দিল্লিতেও ইন্ডিয়া হয়নি, আপ আর কংগ্রেস আলাদা লড়েছে, ফল আমাদের হাতের সামনে। গোটা উত্তর ভারত বিজেপির দখলে, বিহারে নির্বাচন হলে বোঝা যাবে সেখানে বিজেপি কতটা জায়গা করে নিয়েছে, উত্তর ভারতে তাদের এর পরের লড়াই এই বাংলা। সবাই জানে কংগ্রেসের পক্ষে একা বিজেপিকে সরানো অসম্ভব, কর্নাটক আর তেলঙ্গানা বাদ দিলে প্রায় প্রতিটা নির্বাচনে তাদের বিজেপির বিরুদ্ধে স্ট্রাইক রেট দশের কম। আবার কেবল আঞ্চলিক দলগুলোই বিজেপিকে হারাতে পারবে তাও নয়। তাহলে এক বড় জোট দরকার। জোটের এক পাকাপোক্ত নেতৃত্ব দরকার, দরকার এক কমন মিনিমাম প্রোগ্রামের। আর তা করতে গেলে এখনই চারটে কাজে জোর দিতে হবে। এক) বিজেপির হিন্দুত্বের বদলে এক দলিত, আদিবাসী আইডেন্টিটি পলিটিক্স আর এক সর্বধর্ম সমন্বয়ের রাজনীতিকে তুলে ধরবে। দুই) বিজেপির এক সর্বগ্রাসী জঙ্গি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বশান্তি, নির্জোট আন্দোলনের কথা তুলবে। তিন) সারা দেশে কর্পোরেট ক্যাপিটালের ফড়েগিরির বিরুদ্ধে, ব্যাঙ্ক থেকে জল জঙ্গল জমি লুঠের বিরুদ্ধে কথা তুলবে, চার) সারা দেশে বেকারত্ব আর মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এক ব্যাপক ক্যাম্পেন গড়ে তুলবে।

আর এসবের জন্য এক অ্যাকটিভ ইন্ডিয়া জোট চাই, একটা মুখ চাই যে মুখ ওই মোদিজির বিরুদ্ধে মানানসই, সমানে সমানে লড়ে যেতে পারবে। শরদ পাওয়ার কথাও বলতে পারছেন না, লালু যাদব অসুস্থ, এরপরে মমতা ছাড়া কেউ নেই, কাজেই ইন্ডিয়া জোটকে বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে মমতা ছাড়া অন্য কোনও মুখের কথা ভাবাও যাবে না। যদি বিজেপি হটাও, এটাই একমাত্র স্লোগান হয়, তাহলে ইন্ডিয়া জোট চাই, আর জোটের মাথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাই। এছাড়া আর কোনও বিকল্প নাম বিরোধীদের কাছে নেই। অথচ রাহুল বাবা নিজেকে ছাড়া সেখানে কাউকে দেখতেই পাচ্ছে না। নরেন্দ্র মোদি টোয়েন্টি ফোর ইনটু সেভেন থাকেন ইলেকশন মোডে। দেশে বিদেশে যেখানেই থাকুন ওনার একটা চোখ দেশের নির্বাচনের উপরে থাকে। তিনি দেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি এক কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচার করেছেন, হায়দরাবাদ কর্পোরেশনে জিতে উঠতে পারেননি, কিন্তু বিজেপির ভোট আর আসন দুই বেড়েছে। সেই মোদিজির বিরুদ্ধে কংগ্রেস? সেই গব্বরের ডায়ালগ, ছয় গোলি, আউর আদমি তিন, বহত না ইনসাফি হ্যায়। টাইম মেশিনে চড়ুন, খানিক পিছিয়ে যান, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন, বিজেপি ডাক দিয়েছে অব কি বার ৪০০ পার, মাঝারি সারির নেতারা প্রকাশ্যেই বলছেন এবারে সংবিধানটাই বদলে দেব। দিতেনও নিশ্চিত, কপ করে লুফে নিয়েছিল বিরোধীরা সেই স্লোগান। ওদের সম্মিলিত স্লোগান, সংবিধান খতরে মে হ্যায়। সংবিধান বিপন্ন, হাতে সংবিধান নিয়ে রাহুলের জনসভাতে ভিড়। মানুষ, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জাতি, দলিত মানুষ বুঝলেন ৪০০ আসন পেলে সংবিধান বিপন্ন, আটকে গেল বিজেপি, থমকে গেল। ৪০০ পার তো দূরস্থান, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকেও বহু দূরে।

কিন্তু সেদিন থেকেই বিজেপি, তাদের নেতারা নতুন স্ট্রাটেজির কথা ভেবেছে, নতুন স্লোগান, আরও মারাত্মক পোলারাইজেশন, নতুন স্লোগান এসে হাজির হয়ে গেল মারাঠাভূমিতে, বটেঙ্গে তো কটেঙ্গে। হিন্দুত্বের পোস্টার বয় আদিত্যনাথ যোগীর স্লোগান মুখে মুখে ঘুরছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার উপরেই সিলমোহর দিলেন, এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়। পেঁয়াজের সাপোর্ট প্রাইস না থাকার ফলে বিদর্ভে ধস নেমেছিল, ভোটের আগেই সয়াবিন সাপোর্ট প্রাইস এল, টাকা বাড়ল। ওদিকে লাডকি বহিন এসে গেছে, মধ্যপ্রদেশে কাজে দিয়েছে, অতএব মহারাষ্ট্রেও, ওসব রেউড়ি ইত্যাদির বাওয়াল তো বাংলার জন্য রাখা আছে। এবং তিন দলের মসৃণ আসন সমঝোতা। এসব ছিল আইসিং অন দ্য কেক, আসল খেলাটার কন্ট্রোল নিতে মাঠে নামল নাগপুরের আরএসএস হেডকোয়ার্টার। এবারে তারা মাস ছয় আগে থেকেই শহর এলাকা টার্গেট করে নামল। ওদিকে রাহুল গান্ধীর হাতে সেই সংবিধানের কপি, সংবিধান খতরে মে হ্যায়, হচ্ছে বিধানসভার নির্বাচন, উনি হাতে সংবিধান নিয়ে ঘুরছেন। অন্য ইস্যু হল ধারাভিতে আদানিদের দখলদারি। নির্বাচন চলাকালীন শরদ পাওয়ার জানিয়ে দিলেন, হ্যাঁ আদানির ঘরেই তাঁর সঙ্গে বিজেপির মিটিং হয়েছিল, উদ্ধব ঠাকরে মুম্বইতে লড়ছেন, তাঁর ছেলে লড়ছে, তাঁরা আদানি নিয়ে কথা বলছেন না। কংগ্রেস কোনও নতুন ইস্যু নিয়ে নামল? কোনও নতুন স্লোগান দিল? একটাও না। রাহুল গান্ধী ক’টা প্রচারে এলেন মহারাষ্ট্রে? নামমাত্র। কটা জনসভাতে উদ্ধব, শরদ, রাহুলকে দেখা গেল? একটা। এর আগের, মানে লোকসভার নির্বাচনের পরেই বোঝা গিয়েছিল যে বঞ্চিত বহুজন আগাড়ি কিন্তু প্রত্যেক আসনে ভোট কাটছে, কিন্তু তাদের সঙ্গে জোট করার জন্য যে উদারতা দেখানোর দরকার ছিল তা দেখা গেল না। আমি বলছি না যে প্রকাশ আম্বেদকরের এই দলের সঙ্গে জোট হলে জয় আসত, তা হত না, কিন্তু পরাজয়টা এমনও হত না।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | রাই জাগো, রাই জাগো, ঘরে ঢুকছে কেউটে সাপ

আজ তিন দলের এমন অবস্থা যে টেকনিক্যালি বিধানসভাতে বিরোধী দলনেতা হওয়ার সংখ্যাও তিন দলের কারও কাছে নেই। হরিয়ানা দিল্লিতে আমরা একই ছবি দেখলাম। লোকসভাতে দুই গান্ধী, রাজ্যসভাতে একজন, ওদিকে বিজেপির প্রচারের প্রথম অস্ত্রই হল, কংগ্রেস বংশানুক্রমিক শাসনে চলছে। তো মানুষ কী দেখছে? মানুষ তো দেখছে সংসদে তিন গান্ধী। রাজ্যসভাতে কানহাইয়া কুমারকে পাঠালে রাজ্যসভায় একজন বলিয়ে কইয়ে মানুষ যেত, সোনিয়া গান্ধী অসুস্থ, কিন্তু তিনিই যাবেন, কাজেই প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাসযোগ্যতা পাচ্ছে। কংগ্রেস তার নিজের জোরে এক ওই তেলঙ্গানা আর কর্নাটক ছাড়া কোথায় আছে? হরিয়ানাতে দলের ভেতরের লড়াই সামাল দিতে পারল না, নির্বাচনের ফলাফল তো সেই কথাই বলছে, শৈলজা কুমারী আর ভূপিন্দর সিং হুডা লড়েই যাচ্ছেন, দলের কেউ নেই, অন্তত কেউ ছিল না দেখার, এই বিবাদ আগেই মেটানোর সুযোগ ছিল। তারপর ধরুন হরিয়ানাতে কংগ্রেস সাফ জানিয়েই দিল আপ-কে তারা আসন ছাড়বে না, অন্তত তিনটে আসন চলে গেল, তাছাড়া কেজরিওয়াল ইন্ডিয়া জোটের হয়ে প্রচারে নামতে পারতেন যে কোনও সময় তিনি অনেকের চেয়ে বেটার ক্যাম্পেনার। কোথায় কী? সমাজবাদী পার্টির যাদব ভোট আছে, হরিয়ানাতে ১১টা এমন আসন আছে যেখানে যাদবদের সংখ্যা প্রচুর, রেবাড়ি, মহেন্দ্রগড়, গুরগাঁও, নেবার অঞ্চলে অখিলেশ প্রচারে থাকলে এসপি খান তিন চার আসন পেত, কংগ্রেসের কাছেও কিছু ভোট যেত। কিন্তু কংগ্রেস তো কংগ্রেস, পাত্তাই দিল না। ধরুন মহারাষ্ট্র, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? উদ্ধব ঠাকরের নাম বলাই যেত, বলা হল না, ফলাফল আসার পরে বলা হবে, তার মানে? মানে খুব পরিষ্কার, কংগ্রেস ভাবছে আমাদের বেশি আসন আসবে আমরা তখন দাবি পেশ করব, উদ্ধবও তাই ভাবছেন, শরদ পাওয়ারও তাই। ওনাদের মাথায় তখন লোকসভার রেজাল্ট, জিতেই গেছি, জিতে তো যাবই, বিজেপি অনায়াসে জিতে গেল, তারা নিজেদের সংগঠন সামলেছে, এবং আবার তাদের পুরনো পারফরম্যান্সে ফিরে এসেছে।

ঝাড়খণ্ডে জয় এসেছে, কিন্তু এই জয় সম্পূর্ণ হেমন্ত সোরেনের জয়। তাঁর মহিলা ভোটারদের জন্য স্কিম মাইয়া সম্মান, আদিবাসীদের ৪০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল মুকুব, এসব বিরাট কাজ করেছে, কাজ করেছে তাঁর জেলে যাওয়া এবং জেল থেকে বের হয়ে আসা, কাজ করেছে কল্পনা সোরেনের লড়াকু ইমেজ। মেগাস্টার ক্যাম্পেনার হয়ে উঠেছিলেন তিনি, কংগ্রেসের প্রার্থীরা লাইন দিয়ে বসে ছিলেন কল্পনা সোরেনকে দিয়ে একটা জনসভা করানোর জন্য, কংগ্রেস নেতাদের ডাকও পড়েনি, অধীর চৌধুরীর ওই জোকার মার্কা হিন্দি ভাষণে ভোট আসেনি, ভোট পেয়েছে জেএমএম, সঙ্গে জোট ছিল বলে আসন পেয়েছে কংগ্রেস। সেই তুলনায় আরজেডির পারফরম্যান্স অনেক ভালো। ঝাড়খণ্ডে জেএমএম বিজেপির উগ্র হিন্দুত্বের পাল্টা এক আইডেন্টিটি পলিটিক্সকে দাঁড় করিয়ে নিজেদের জয় আনল, মহারাষ্ট্রে যা মহাবিকাশ আগাড়ি পারল না। আসলে কংগ্রেস তার জলসাঘরের জমিদারের চেহারা থেকে, সেই খোলস থেকে বের হতে পারছে না। কংগ্রেসের ক্ষয় সেই কবেই শুরু হয়েই গেছে, তার কাছ থেকে সরে গেছে তফশিলি জাতির সমর্থন, সরে গেছেন দলিত মানুষজন, ভোট শেয়ার কমছে, দল ভেঙে বেরিয়ে যাচ্ছেন অনেকে, আঞ্চলিক দল কংগ্রেসের ভোট কেড়ে নিচ্ছে, বাংলাতে তো কংগ্রেস মুছে যাওয়ার কারণই সেটা। এবং বিজেপিকে আটকানোর জন্য সমাজবাদী দল বা কমিউনিস্টরা বা আঞ্চলিক দল পাশে এসে দাঁড়ালেও কংগ্রেসের মনে হয়েছে এটা তাঁরা বাধ্যবাধকতা থেকেই করছে, টেকেন ফর গ্রান্টেড গোছের ব্যাপার। কাজেই সেটাও এক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় স্তরে কমিউনিস্টদের শর্তহীন সমর্থন আছে কিন্তু সেই কমিউনিস্টরাই তাদের শেষ দুর্গ সামলাচ্ছেন ওই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ে, সব মিলিয়ে সেখানেও জট। দেশের মানুষের কাছে অনেক বড় সমস্যা মূল্যবৃদ্ধি, সমস্যা বেকারত্বের, সমস্যা আদিবাসীদের জল জঙ্গল জমিনের, সমস্যা দলিত গরিব মানুষের জীবনের মান উন্নয়নের, সেসব হয়েই উঠতে পারে বিরোধী জোটের কাছে বড় ইস্যু, ইন্ডিয়া জোটের নেতারা একবারও সেই ইস্যু নিয়ে রাস্তায় নামছেন?

এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল সেই সেপ্টেম্বর ২৩-এ ইন্ডিয়া জোটের একটা ১৬ জনের কমিটি তৈরি হয়েছিল, ব্যস, জয়েন্ট কোওর্ডিনেশন কমিটি তৈরি হবে বলা হয়েছিল, তারপরে? কিছুই হয়নি। একটা জোট তৈরি হল যার সভাপতি নেই, কনভেনর নেই, জোটের কোনও বৈঠক নেই, সম্মিলিত কোনও প্রোগ্রাম নেই, কেন? কারণ কংগ্রেস মনে করে তারাই নেতৃত্ব দেবে, আর ঠিক তাই কখন আর কোথায় তারা ইন্ডিয়া জোটের কথা বলছে, সংসদে, যেখানে তারা সংখ্যায় বেশি। সেখানেও ভাবটা গুরুঠাকুরের। সেই ৭৭-এর পর এই জোট রাজনীতির শুরুয়াতটা দেখুন ১৯৮৯-এ, ৭৭-এ জয়প্রকাশ ছিলেন মাথার উপরে। ১৯৮৯-এ কংগ্রেসকে তাড়ানোর জন্য জোট, ন্যাশনাল ফ্রন্ট, পেছনে থাকল বিজেপি, সামনে কে ছিলেন? ভিপি সিং, তিনিই প্রধানমন্ত্রী মুখ, জনসংঘের ঘাঘু লোকজনেরা, বিজেপি নেতারা জানতেন কংগ্রেস চলে যাক, তারপর আমরা মাঠে নামব। সেই ন্যাশন্যাল ফ্রন্টের চেয়ারম্যান কে ছিলেন? এন টি রামারাও, অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের ৪২টা আসন, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারম্যান। হ্যাঁ, অত বড় বড় নেতারা থাকার পরেও এন টি রামারাও চেয়ারম্যান। ১৯৯৬, ইউনাইটেড ফ্রন্ট, এবারে বিজেপির বিরুদ্ধে বাকি বিরোধী দলের লড়াই, দেবেগৌড়া, গুজরালের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে, কে ছিলেন ইউনাইটেড ফ্রন্টের চেয়ারম্যান? চন্দ্রবাবু নাইডু, সেই অন্ধ্রপ্রদেশের। ১৯৯৮, বিজেপি এনডিএ তৈরি করছে, সব্বাই জানে সরকার হলে তো প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারীই হবেন কিন্তু এনডিএ-র কনভেনর কে? সমতা দলের জর্জ ফার্নান্ডেজ, পরে দলের নাম জেডিইউ হল, তিনি অসুস্থ হলেন, কে নিলেন দায়িত্ব? বিজেপির কেউ? না। এলেন শরদ যাদব। এরপর মোদি এলেন ক্ষমতায়, তখনও ওই এনডিএ-র কনভেনর চন্দ্রবাবু নাইডু, যতদিন না তিনি নিজেই ছেড়ে দিচ্ছেন। এটাকেই জোট বলে, এভাবেই তো জোট চলে। ২০২৪-এর লোকসভা ফলাফলের পরে দেশের গণতান্ত্রিক মানুষ, দেশের উদার ধর্মনিরপেক্ষ মানুষজন খুশি হয়েছিল, মনে হয়েছিল মোদিজির অশ্বমেধের ঘোড়া থমকে গেছে। এবারে পূর্ণশক্তি নিয়ে মাঠে নামলে আরএসএস-বিজেপি-সংঘ পরিবার পিছু হটবে। গোদি মিডিয়া অমন চরম ভুলভাল একজিট পোল দেখানোর পরে সামাল দেওয়ার জন্য বিরোধী নেতাদের ডেকে কিছু কথা বলছিলেন, বিরোধী নেতাদের খানিকটা বলতে দেওয়া হচ্ছিল এবং এক্কেবারে স্বাধীন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও কথা বলতে দেওয়া হচ্ছিল, তো সেখানেই বেশ কয়েকজন বলেছিলেন হিন্দুত্বের অস্ত্র ব্যবহার করার পরেও বিজেপি সাফল্য পেল না, প্রধানমন্ত্রী নিজে মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেওয়া হবে গোছের প্রচার করার পরেও বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল না কাজেই এরপরে বিজেপি হিন্দুত্বের এজেন্ডা ছেড়ে গুড গভর্নেন্স, বেকারত্বের সমাধান, আর্থিক উন্নতি আর বিকাশ ইত্যাদির দিকে জোর দেবে।

অনেকে একমত হয়েছিল এই কথাগুলোর সঙ্গে কিন্তু আমরা জোর দিয়েই বলেছিলাম আরও বড় উগ্র হিন্দুত্বের ইস্যু তুলে বিজেপি আবার তার সবটুকু ক্ষমতা দিয়ে মাঠ দখল করার চেষ্টা চলবে। আহত বাঘ আরও বেশি ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আক্রমণ করে। সংঘের ১০০ বছর পূর্তি হবে ২০২৫-এ, কাজেই তারা আরও জোর দিয়েই সেই হিন্দুরাষ্ট্রের কথাই বলবে। এক্কেবারে তাই হয়েছে। বিজেপি এবং সংঘ পরিবার সমস্ত বিভেদ ভুলে একসঙ্গে মাঠে নেমেছে এবং সাম দান দণ্ড ভেদ, এর কোনও অস্ত্রই তারা বাদ দিচ্ছে না। মাঠে টাকাও ছড়াচ্ছে, ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দিচ্ছে, হিন্দুত্বের ইস্যুগুলোকে নতুন করে সামনে আনছে। চুলোর দোরে গেছে প্লেসেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট, তারা নতুন করে কাশী মথুরা, সম্ভল আগ্রা আজমের শরিফকে সামনে রেখে আবার উত্তর ভারতে সর্বত্র মন্দির ওহি বনায়েঙ্গে শুরু করবে, আর ক’দিনের মধ্যেই সেই প্রোগ্রাম আমরা দেখতে পাব। অন্যদিকে আমরা বলেছিলাম ইন্ডিয়া জোট এই জয়ে উল্লসিত হবে, আরও দৃঢ় হবে তাদের ঐক্য, তারাও বুঝবে কোথায় কোনখানে ফাটলগুলো আছে, সেগুলোকে মেরামত করার কাজে হাত দেবে। কচুপোড়া। ইন্ডিয়া জোট এখন হেডলেস চিকেনের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক জোট যার মাথাই নেই। হাতে সময় নেই কিন্তু বিরোধী নেতাদের দেখে তা একবারও মনে হচ্ছে না, কাজেই কে কী চাইল তার উপরে ভিত্তি করে নয়, আপাতত বিরোধী জোটের যা হাল, তাতে মনে হচ্ছে এই জোটের অবিচুয়ারি, স্মৃতিগাথা লেখার সময় এসে গেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Abu Qatal | ভারতের কোন কোন বি*স্ফো*রণে নাম জড়িয়ে আবু কাতালের?
00:00
Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
06:34:46
Video thumbnail
Abu Qatal | ভারতের কোন কোন বি*স্ফো*রণে নাম জড়িয়ে আবু কাতালের?
04:25
Video thumbnail
PODCAST | খবর শুনুন : বুকে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি এ আর রহমান
00:52
Video thumbnail
PODCAST | খবর শুনুন : এক শর্তে অবসর ভেঙেও টি-২০ ক্রিকেট খেলতে চান কোহলি!
00:58
Video thumbnail
PODCAST | খবর শুনুন : দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, কলকাতায় আজ উষ্ণতম দিন
01:05
Video thumbnail
PODCAST | খবর শুনুন : IPAC বা অভিষেকের নামে টাকা চাওয়ার অভিযোগ, কী বার্তা দিলেন অভিষেক?
01:15
Video thumbnail
KTV mini | কাশ্মীর সমস্যার সমধান কীভাবে? পাকিস্তানকে চাঁচাছোলা বার্তা ভারতের
00:00
Video thumbnail
KTV mini | কাশ্মীর সমস্যার সমধান কীভাবে? পাকিস্তানকে চাঁচাছোলা বার্তা ভারতের
06:40
Video thumbnail
BJP | Rabindra Nath Ghosh | বিজেপিতে বড় ভাঙন, তৃণমূলে যেতে চলেছে একডজন, বি*স্ফো*রক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ
00:00