কলকাতা: কালো মাথা৷ সবুজ হেলমেট৷ সাদা পোশাক৷ শয়ে শয়ে মানুষের ভিড়৷ স্লোগান৷ শাস্তি চেয়ে পড়ুয়াদের প্রতিবাদ৷
বিকেল চারটে৷ কলেজ স্ট্রিট৷ অবরুদ্ধ এমজি রোড৷ ছবিটা বোধ হয় এভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়৷
মঙ্গলবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি তপ্ত ছিল৷ লক্ষ্য ছাত্র নেতা আনিস খান মৃত্যুর সঠিক তদন্ত৷ প্রথমে ঠিক ছিল মহাকরণ অভিযান৷ আলিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ে জমায়েত৷ হাতে ফেস্টুন৷ প্লাকার্ড৷ মুখে স্লোগান৷ পথ চলা শুরু করল পড়ুয়ারা৷ সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল পুলিসি নিরাপত্তা৷ পথে রুখতে হবে বিক্ষোভকারীদের৷ মহাকরণের সামনে বিপুল পুলিসি পিকেট৷
কলেজ স্ট্রিটের দিকে এগোচ্ছে মিছিল।
মাঝপথেই রাস্তা বদল পড়ুয়াদের৷ শিয়ালদহের অভিমুখে রওনা দিলেন তাঁরা৷ সেখান থেকেই কলেজ স্ট্রিট৷ আর এগোতে দেওয়া যাবে না৷ পথ আটকালো পুলিস৷ নামল ব়্যাফ। এলো জল কামানের বড় বড় গাড়ি। লাঠি হাতে পুলিসের সারি। মাথায় হেলমেট। হাতে লাঠি। প্রস্তুতি তুঙ্গে। নেতৃ্ত্বে আইপিএস পদাধিকারী পুলিস কর্তারা।

অপরপ্রান্তে পড়ুয়ারা। কলেজ স্ট্রিটের চার মাথার ক্রসিংয়ে বসে পড়েছে তাঁরা। মুখে স্লোগান। কখনও সরকার বিরোধী। কখনও প্রতিবাদী। কখনও সঠিক তদন্তের দাবি।
পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিল পুলিস। যে কোনও কিছুর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। চড়চড় করে বাড়ছিল সময়। ঘুরছে ঘড়ির কাঁটা। বাড়ছিল যানজট। বাস-অটো-গাড়ির লাইন ধীরে ধীরে লম্বা হচ্ছিল। ধৈর্য রেখে অপেক্ষা করছিল পুলিসও।
আরও পড়ুন-Bajrang dal Activist Murder: কর্ণাটকের শিবমগ্গায় বজরং কর্মী খুনে গ্রেফতার ২
আর নয়। মহাকরণের দিকে এগোবে-যে ধনুক ভাঙা পণ করেছিল ছাত্ররা। আর এক পাও এগোতে দেওয়া যাবে না। কর্তব্যে অবিচল ছিল পুলিসও৷ শুরু হল পুলিস-পড়ুয়া ধস্তাধস্তি৷ বই পাড়া ‘পরিষ্কার’ করতে হবে৷ বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুললে শুরু করল পুলিস৷ কাউকে চ্যাঙদোলা করে৷ কাউকে হাত ধরে টেনে৷ যতটা দ্রুত স্বাভাবিক করা পরিস্থিতি সেদিকেই নজর ছিল সেদিকে৷

বিক্ষোভ হল৷ হল প্রতিবাদ৷ অবরোধ হল৷ সংবাদ মাধ্যমের শয়ে শয়ে ক্যামেরার ঝলকানি হল৷ বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুলে রওনা দিল পুলিস৷ পৌঁনে পাঁচটা নাগাদ আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করল মহাত্মা গান্ধী রোড৷ বাসের চাকা গড়াল, ট্রাম এগোতে শুরু করল আস্তে আস্তে৷
কিন্ত আজ পুলিসকে লাঠি উচিয়ে এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি৷ লাগেনি জল কামান৷ বিক্ষোভকারীদের তুলতে আজ পুলিস অনেকটাই সংযম৷ যতটা আশঙ্কা করা গিয়েছিল পুলিস তৎপরতায় তা সহজেই স্বাভাবিক হল৷