১৬ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে আই এস এল-এর লিগ টেবলে তিন নম্বরে আছে এটিকে মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে তাদের খেলা ওড়িশা এফ সি-র সঙ্গে। সেই ম্যাচে জিতলে মোহনবাগান প্লে অফ-এ খেলার ব্যাপারটা আরও নিশ্চিত করে তুলবে। কিন্তু মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দোর চোখ শুধু প্লে অফ-এ নয়। তাঁর লক্ষ্য লিগের এক নম্বর দল হয়ে এ এফ সি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা। এবং সেই লক্ষ্যে ওড়িশাকে যে কোনও ভাবেই জিততে চান জুয়ান।
মোহনবাগান গত বারো ম্যাচে অপরাজিত। এর মধ্যে তারা জিতেছে সাতটি ম্যাচ। আর ওড়িশা প্রথম দিকে ভাল খেললেও গত সাত ম্যাচে মাত্র একটিতে জিতেছে। ১৮ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২২। তারা আছে সাত নম্বরে। তবে মোহনবাগানের অশ্বমেধের ঘোড়া যেভাবে ছুটছে তাতে ওড়িশার পক্ষে তাদের সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ানো বেশ কঠিন কাজ। এই মুহূর্তে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ তারা নিজেরাই। তাদের দলে চোটআঘাত নিয়ে সমস্যা আছে। চোট থেকে ফিরে রয় কৃষ্ণ এখনও পুরো ম্যাচ খেলেননি। কোচ জুয়ান বলছেন, ” রয় আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। ও বেশ ভালরকম চোট পেয়েছিল। এখন আস্তে আস্তে সেরে উঠছে। তাই একেবারে পুরো ম্যাচ খেলানো যাবে না। কোনও ম্যাচে কুড়ি মিনিট, কোনও ম্যাচে ৩০ মিনিট করে খেলিয়ে ওকে ফিট করতে হবে।” তবে মোহনবাগান নিশ্চিন্ত রয় এবারের টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। তাঁর দেশ ফিজির হয়ে কাতার বিশ্ব কাপের কোয়ালিফাইং ম্যাচ খেলতে যাবেন আই এস এল শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। আরেক বিদেশি ফ্রান্সের হুগো বুমোও চোট পেয়েছিলেন। এখন তিনি ফিট হওয়ার পথে। একই অবস্থা কার্ল ম্যাকহাগের। জুয়ান বলেছেন, “বুমো আর কার্ল এখন অনেকটাই ফিট। তবে পুরো ফিট হতে আরও একটু সময় লাগবে।” এই পরিস্থিতিতে জুয়ানকে ভরসা জোগাচ্ছেন ফিনল্যান্ডের মিডফিল্ডার জনি কাউকো। গত ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে দলের নিশ্চিত পরাজয় বাঁচিয়েছেন কাউকো ইনজুরি টাইমে গোল শোধ করে। আর ডিফেন্সে তিরি তো প্রতি ম্যাচেই অনবদ্য ফুটবল খেলছেন। বিদেশি নিয়ে সমস্যা থাকলেও এই দুজনের জন্য জুয়ান অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
মোহনবাগান কোচকে ভরসা দিচ্ছেন তাঁর ভারতীয় ফুটবলাররাও। বিশেষ করে গোলে অমরিন্দর, ডিফেন্সে প্রীতম কোটাল, সন্দেশ ঝিঙ্গন এবং শুভাশিস বসু, দুই উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো এবং মনবীর সিং। নয় নয় করে লিস্টনের সাতটা গোল করা হয়ে গেছে। তবে পরের পর ম্যাচ খেলে তাঁকে একটু ক্লান্তও দেখাচ্ছে। জুয়ান মেনে নিয়েছেন সেটা। বলেছেন, “খুব কম সময়ের মধ্যে একটার পর একটা ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। তাই লিস্টনের মধ্যে ক্লান্তি আসতেই পারে। ওর বদলি হিসেবে মাইকেল সুসাইরাজ আছে। দরকার পড়লে ও নামবে।”
তাই সমস্যার মধ্যেও মোহনবাগান বেশ তৈরি। এদের সঙ্গে আছেন নবীন স্ট্রাইকার কিয়ান নাসিরিও। ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করা কিয়ানকে আস্তে আস্তে তৈরি করছেন জুয়ান। প্রতি ম্যাচেই শেষের দিকে নামানো হচ্ছে তাঁকে। সব মিলিয়ে চোট আঘাত নিয়ে সমস্যা থাকলেও মোহনবাগান কিন্তু ওড়িশা বধের জন্য প্রস্তুত। প্রথম লেগে দু দলের ম্যাচ শেষ হয়েছিল গোল শূন্য ভাবে। এবার জিতেই মাঠ ছাড়তে চায় বাগান। মনে হয় তারা জিতেই মাঠ ছাড়বে।