খড়গপুর: শুক্রবার লাদাখের তুরতুক সেক্টরে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সাত জওয়ানের৷ নিহতদের মধ্যে বাংলার এক জওয়ানও আছে৷ নিহত জওয়ানের নাম বাপ্পা খুটিয়া৷ গতকাল গভীর রাতে পরিবারের কাছে বাপ্পার মৃত্যুর খবর পৌঁছয়৷ সেই থেকে বাড়িতে শোকের পরিবেশ৷ শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা৷ রবিবার নিহত জওয়ানের দেহ খড়গপুর পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে৷
মেদিনীপুরের খড়গপুর টাউন থানার অন্তর্গত বারবেটিয়া এলাকায় বাড়ি বাপ্পার৷ বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী ও ১১ মাসের কন্যা সন্তান আছে৷ গত মাসেই ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি৷ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে ২৭ এপ্রিল বাপ্পা ফিরে যান ক্যাম্পে৷ প্রথমে তাঁকে পাঠানো হয় গুজরাত৷ সেখান থেকে বাপ্পার পোস্টিং হয় সিয়াচেনে৷ কিন্তু সিয়াচেন আর পৌঁছতে পারেননি তিনি৷ পরিবার জানিয়েছে, সেনাবাহিনীতে কাজ করার অদম্য ইচ্ছা ছিল বাপ্পার৷ ২০০৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে দু’বার সিলেক্ট হয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু মায়ের কথা ভেবে তখন যোগ দেননি৷ তবে, তৃতীয়বার-ও সুযোগ হারাতে চাননি বাপ্পা৷ একপ্রকার জোর করেই তিনি যোগদান দেন সেনাবাহিনীতে।

শুক্রবার বাসে করে জওয়ানদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সিয়াচেনে৷ প্রথম দু’টি বাস নিরাপদেই দুর্গম পথে পেরিয়ে যায়৷ কিন্তু আচমকা ধসের কবলে পড়ে বাপ্পাদের বাসটি৷ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি গিয়ে পড়ে শিয়ক নদীতে৷ গুরুতর জখম হন ১৯ জওয়ান৷ তাদের এয়ারলিফ্ট করে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ মৃত্যু হয় সাত জওয়ানের৷ তাঁদেরই একজন বাপ্পা৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩২ বছরের জওয়ানের৷ বাপ্পার বাবা প্রাক্তন আরপিএফ জওয়ান সুকুমার খুটিয়া জানান, অসমর্থিত সূত্রে গতকাল রাত ১২টার পর ছেলের মৃত্যুর খবর তাদের কাছে আসে৷ সন্তান হারানো খুবই কষ্টের বলে জানিয়েও তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সময় ওর শরীরে ইউনিফর্ম ছিল৷ ইউনিফর্ম পরে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে৷ এর জন্য গর্ববোধ হচ্ছে৷’
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: মৃত ব্যক্তির ডায়ালিসিস! কাঠগড়ায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল