কলকতা : বড়দিন উপলক্ষে শনিবার ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বেলুড় মঠে যিশু (Jesus) পুজোর আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবছরেও বেলুড় মঠে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনের আয়োজন করে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন (Mission)। সন্ধ্যা আরতির পর শুরু হয় যিশুর আরাধনা।
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মন্দিরে প্রভু যীশুর ছবি বসানো হয়। মোমবাতি, ফুল দিয়ে ছবি সাজানো হয়। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি ও মিষ্টি। ক্যারলের (Carrol) মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা। পরে যীশুর জন্মকাহিনী পাঠ করা হয়। মঠের নিয়ম মেনে ২৪ ডিসেম্বর মঠের সন্ধ্যা আরতির পরেই শুরু হয় এই বিশেষ অনুষ্ঠান (Celebration)। বিশেষ প্রার্থনা সঙ্গীত, বাইবেল (Bible) পাঠের মধ্যে দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়।
গোটা বিশ্বে মোট ২৭টি দেশের ২৩৭টি রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসীরা ক্রিসমাস ইভে এভাবেই বড়দিন পালন করেন বলে জানা গিয়েছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সূত্রে ৷ শনিবার সন্ধ্যায় মহাসমারোহে যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন পালন করা হয় কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠে। এদিন রামকৃষ্ণ দেবের পাশাপাশি যিশুখ্রীস্টের পূজা করা হয়। প্রতি বছরের মতো এই বছরও ৫৬ রকমের কেক দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। গোটা মঠ চত্বর আলোক শয্যায় সজ্জিত করা হয়। বিভিন্ন রং বেরঙের আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় মঠের বিভিন্ন প্রান্ত। সন্ধ্যা বাড়ার সাথে সাথে মঠে ভীড় বাড়ে দর্শনার্থীদের।।
কথিত আছে, ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে রামকৃষ্ণ দেবের প্রয়াণের পর স্বামী বিবেকানন্দ (Vivekananda) তাঁর কয়েক জন গুরুভাইয়ের সঙ্গে হুগলির আঁটপুরে প্রেমানন্দ মহারাজ বা বাবুরাম মহারাজের বাড়িতে আসেন। সেখানে ডিসেম্বর মাসের শেষের এক সন্ধ্যায় মহারাজের বাড়ির বাগানে ধুনো জ্বালিয়ে যিশুর বাণী এবং জীবনী শোনান স্বামীজি। আর সেই দিনটি ছিল বড়দিনের আগের দিন। সেই রীতির কোনও বদল হয়নি। পরে বেলুড় মঠ স্থাপিত হলে ওই প্রথা অনুযায়ী বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় যিশুর পুজো করার রীতি বজায় রাখে বেলুড় মঠ। সেই রীতি মেনেই শনিবার বেলুড় মঠে (Belur Math) পালিত হল বড়দিন ৷