Wednesday, July 30, 2025
HomeআজকেAajke | নবজোয়ারের গল্প

Aajke | নবজোয়ারের গল্প

Follow Us :

ছোটবেলায় পাটিগণিতে একটা অঙ্ক তো সবাই করেছেন, যথেষ্ট গোলমেলে অঙ্ক। একটা চৌবাচ্চা আর তার অন্তত দুটো পাইপ। একটা সরু, একটা মোটা। একটাতে জল ভরা হবে, একটাতে জল বেরিয়ে যাবে। সে এক কঠিন ব্যাপার, দুটো কলই খোলা থাকবে, জল ভরবে আর জল বের হবে, এবং প্রশ্ন হল কতক্ষণে চৌবাচ্চা ভরে যাবে। এ অঙ্ক শুনেই যে প্রশ্ন সব্বার মনে আসবে তা হল, দুটো কল খোলাই বা থাকবে কেন। জল বেরিয়ে যাওয়ার কলটাকে বন্ধ করলেই তো ল্যাটা চোকে। অঙ্কের মাস্টারমশাই বলেছেন, অঙ্কটা করে ফেলো, শিখে নাও ইত্যাদি। কেউ এই জটিল অথচ সরল প্রশ্নের জবাব দেননি, যে দুটো কল কেন খোলা থাকবে? বহু পরে বুঝেছি এ এক বিরাট জীবন দর্শন। জীবনে ভুল হবেই, অন্যায় হবেই আবার ভালো কাজও থাকবে, জীবনচর্যায় সুন্দর কত কিছুই তো থাকবে। কিন্তু জীবন নামক নাটকের লাস্ট কার্টেন পড়ার আগে হিসেব তো হবেই, পাল্লা কোনটার বেশি? বেশিরভাগ জলই কি বেরিয়ে গেছে? নাকি জল বেরিয়েছে কম, জমা হয়েছে জীবনের ধন। এ দর্শন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে রাজনৈতিক দল, সবক্ষেত্রেই সমানভাবে কাজ করে। 
গতকাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ৬০ দিনে ৬০টা অধিবেশনে ২৫০টারও বেশি জনসভায় ৩০ লক্ষ মানুষের সঙ্গে কথা বলে মানুষের সিদ্ধান্ত মতোই বেছে নেওয়া হবে তৃণমূল দলের পঞ্চায়েতের তিন স্তরের প্রার্থীদের। ওঁ মধু, ওঁ মধু ওঁ মধু। গান্ধীর গ্রাম সুরাজ তো এটাই। গ্রামের মানুষ, সৎ উপকারী মানুষজন গ্রাম গড়ে তুলবে, স্বনির্ভর গ্রাম গড়ে উঠবে, এই তো ছিল গান্ধীজির স্বপ্ন। আজ সে স্বপ্নের খানিক শোনা গেল তৃণমূলের নতুন জমানার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। কিন্তু এটা তো ছিল ওই জল ভরার কল। জল যেখান থেকে বার হয়ে যাচ্ছে? তা নিয়েও কিছু কথা হোক। 

হ্যাঁ, ঠিক এইখানেই আমাদের মনেই কেবল নয়, আম আদমির মনেও প্রশ্ন, বেশ তো, দারুণ পরিকল্পনা। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ আসুক ক্ষমতায়, যাঁরা গ্রাম চালাবেন, মানুষের সঠিক প্রতিনিধিই হোক দলের প্রতিনিধি। প্রত্যেক দল এই চেষ্টা করুক, তারপর আছেই তো সাধারণ নির্বাচন, মানুষ রায় দেবে। জাতির পিতা বলে গলায় মালা দেব ২ অক্টোবর আর ৩০ জানুয়ারি আর তাঁর গ্রাম সুরাজের কথা, স্বনির্ভর গ্রামের স্বপ্নের কথা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের কথা বিলকুল ভুলে যাব তা তো হয় না। ঠিক যে মুহূর্তে অভিষেক এই কথা বলছেন, সেই মুহূর্তে মানুষের চোখে ভাসছে গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েত প্রধানদের কোথাও জাহাজ বাড়ি, কোথাও প্রাসাদবাড়ি, কোথাও সুইমিং পুল। যে নেতা সেদিন বাজারে মুরগি কাটত সে আজ স্করপিওতে চড়ে ঘুরছে। নেতাদের একটা নয় তিন চারটে বান্ধবী, তাদের ফ্ল্যাট, খামারবাড়িতে মোচ্ছব এবং সব শেষে এটাই অস্ত্র আজ বিজেপির কাছে। প্রত্যেকটা খবর রাখার পরেই সিবিআই ইডি যাচ্ছে, লাইন দিয়ে নেতা, নেতার বউ, নেতার বান্ধবী জেলে। হ্যাঁ, বিজেপির সরকারের তোতাপাখি সিবিআই বা ইডি তো বিজেপি নেতাদের ধরছে না, যেরকম চোখের সামনে তোলাবাজি করতে থাকা তৃণমূল নেতাদের ধরছে না থানার পুলিশ। মানুষের মাথায় কোথাও স্থির বিশ্বাস বাসা বাঁধছে, তৃণমূল মানেই চোর, মানেই তোলাবাজ, তৃণমূল মানেই দুর্নীতি।

আরও পড়ুন: Aajke | কাঁথির টাচ মি নট খোকাবাবুর বোমা ফাটানোর কিসসা 

এই ধারণা হল সেই মোটা কল যা দিয়ে চৌবাচ্চার জমা জল হু হু করে বেরিয়ে যাচ্ছে। এই দুর্নীতিকেই অস্ত্র করে বিজেপি বাড়াচ্ছে তার প্রভাব, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ছিঁটেফোঁটা লাভও পাবে না বিরোধী অন্য কোনও দল, সেখানেও আরেক সমস্যা। এক সাম্প্রদায়িক দল না এক দুর্নীতিগ্রস্থ দল? কোনটা মানুষ বাছবে? কাজেই এই নবজোয়ারে এই দুর্নীতিবাজদের কী হবে? দুর্নীতির থেকে দলকে কীভাবে আলাদা করা হবে? দলের মধ্যে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের কীভাবে চিহ্নিত করা হবে, কীভাবে সেই দুর্নীতিবাজদের দূর করা হবে সেটাও তো মানুষ জানতে চান, জানতে চাইছেন, সে কথা আমরা শুনতে চাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। কারণ আপনি যতই জল ঢালুন চৌবাচ্চায়, জল বেরিয়ে যাওয়া বন্ধ না করতে পারলে, ফুটো কলসিতে জল ঢেলে কোনও লাভ হবে না। রাজনৈতিক বুকনিবাজি ছেড়ে দিন, আম জনতা মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার জন্য সত্যিই কিছু করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু দলের কিছু দুর্নীতিবাজ নেতাদের জন্যই দলের বদনাম হচ্ছে। একথা আমি বলছি? তাহলে চলুন মানুষকেই জিজ্ঞাসা করি, মানুষজন এ নিয়ে কী ভাবছে জানার চেষ্ট করি। 

জ্যোতি বসু প্রতিটা কর্মিসভায় বলতেন, মানুষের কাছে যান, মানুষের কথা শুনুন, মানুষের সঙ্গে থাকুন। কমরেডরা ডান কান দিয়ে শুনেছেন, বাঁ কান দিয়ে বের করে দিয়েছেন, হাতেনাতে ফল বিধানসভায় শূন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ম করে প্রত্যেক কর্মিসভায় বলছেন, টাকা পয়সা কি চিবিয়ে খাবে? কত পয়সা লাগে? অর্থাৎ বার বার বলছেন দুর্নীতির কথা, কিন্তু সমস্যা হল শুনছে কে? যখন তিনি এই কথা বলছেন, তেমন এক মিটিংয়ে তাঁর পাশেই তো ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাতে কি ওনার টাকা আর জমি নিয়ে খেলাধুলো করতে অসুবিধে হয়েছে? কত ভালো প্রকল্প, গরিব মানুষদের জন্য কত কাজ, এবং শেষমেশ এই নবজোয়ারের গান সবই বিফলে যাবে, যেতে বাধ্য যদি না দুর্নীতির, চূড়ান্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো না যায়। আসুক নবজোয়ার, জীবনের গানে ভরুক চৌবাচ্চা, কিন্তু মাননীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খেয়াল রাখুন সে সৃষ্টির ধারা জমার আগেই বয়ে যাচ্ছে না তো?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | সংসদে মোদি মুখ খুলতেই ট্রাম্পের শুল্ক বো/মা
00:00
Video thumbnail
Mamata Thakur |আমি বাঙালি গর্বিত বাংলা ভাষায় কথা বলে,অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ঝাঁঝাল বক্তব্য মমতা ঠাকুরের
00:00
Video thumbnail
TMC | তৃণমূলের প্রেস কনফারেন্সে বি/স্ফো/রক ঘটনার বর্ণনা পরিযায়ী নি/র্যাতি/তার
01:39:17
Video thumbnail
PM Modi | Mohan Bhagwat | চরম ল/ড়া/ই মোদি-ভগবতের,বারবার পিছোচ্ছে বিজেপির সভাপতি নাম ঘোষণা!
01:31:22
Video thumbnail
Droupadi Murmu | দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিলেন রাষ্ট্রপতি, দেখুন সেই ভিডিও
01:42:25
Video thumbnail
Jal Jeevan Mission | জল জীবন On a Mission দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
06:18
Video thumbnail
Beyond Politics | সংসদের বাদল অধিবেশন রাহুল-মোদির গরমাগরম ভাষণ
09:56
Video thumbnail
আজকে (Aajke) | বঙ্গ বিজেপি পড়েছে চরম বি/পদে, ভুল বকছেন নেতারা
11:42
Video thumbnail
Fourth Pillar | রাজা, তুই ন্যাং/টো কেনে?
11:50
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | মুখ খুলতেই ট্রাম্পের শুল্ক খাঁ/ড়া?
47:36

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39