জলপাইগুড়ি: বিশ্বের দরবারে ভারতকে শ্রেষ্ঠ আসনে নিয়ে যাওয়ার কারিগরদের মধ্যে রয়েছে জলপাইগুড়ির কৌশিক নাগেরও নাম। বুধবার বিকেল থেকে জলপাইগুড়ির নাগ পরিবারে ছিল চরম উত্তেজনা। বুধবার জলপাইগুড়ি থেকে প্রায় কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বেঙ্গালুরু থেকে কৌশিক ফোন করে তাঁর মাকে বলেছিলেন, সন্ধ্যায় টিভিতে নজর রেখো। কী কারণে তা জানায়নি। এরপর সেদিন সন্ধ্যায় চাঁদের মাটিতে পা রাখে ভারত। উচ্ছাসে ফেটে পরে ইসরোর। সেই সময়ে টিভিতে ছেলের ছবি দেখে আপ্লুত কৌশিকের মা।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ ল্যান্ডার বিক্রমের। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবেই চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় ভারতের। জয়ের কারিগরদের তালিকায় নাম জলপাইগুড়ির ছেলের। তা জানতেন না অনেকেই। টিম ইসরোর সদস্যদের উচ্ছ্বাসের ছবি টিভির পর্দায় ফুটে উঠতেই ঘরের ছেলে কৌশিককে চিনতে পেরে হতবাক অনেকেই। তাঁর মাও জানতেন না যে তার ছেলেও রয়েছে স্বপ্নজয়ীদের দলে।
আরও পড়ুন: সব থানার সিসি টিভি যেন ঠিক থাকে, ডিজিকে নির্দেশ হাইকোর্টের
শহরের বর্ধিত মোহন্ত পাড়ায় সাধারণ একটি পরিবারের ছেলে কৌশিক। শহর সংলগ্ন এক বেসরকারী ইংরাজি মাধ্যম বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ২০১১ সালে জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন কৌশিক নাগ। কম্পিউটার সায়েন্স নিশে পাশ করে ২০১৮ সালে যোগদান দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায়। এর আগে, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ এরও সদস্য ছিলেন কৌশিক। সেবারে অল্পের জন্য ফস্কেছিল লক্ষ্য। এবার তা হয়নি।
এই প্রোজেক্টে থাকার কথা মাকেও আগেভাগে জানাননি ছেলে। মা জেনেছেন বুধবার সকালে। টিভিতে ইসরোর বিজ্ঞানীদের উচ্ছ্বাসের ছবিতে গোলাপি শার্ট পরা বছর কৌশিক নাগকে চিনতে অবশ্য অসুবিধা হয়নি সহপাঠী,স্কুল কলেজের শিক্ষকদের। মুহুর্তে সেই ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাড়িতেও পৌঁছে যায় একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তা।
ছেলেকে টিভির পর্দায় দেখে আনন্দাশ্রু মায়ের। জানালেন, দেশের জন্য গর্ববোধ হচ্ছে। এই কর্মযজ্ঞে আমার ছেলেরও অবদান রয়েছে, এটা ভেবে আরও ভালো লাগছে। এদিকে স্কুল কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরাও কৌশিকের কৃতিত্বে খুশি।