হায়দরাবাদ ও নয়াদিল্লি: কর্নাটকের পর এবার তেলঙ্গানা (Telangana)। সরকারি দলকে উৎখাত করে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করলেও মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির (CM Post) জন্য কংগ্রেসের (Congress) অন্দরে ‘বিদ্রোহ’ (Revolt) দানা বেঁধেছে। হাইকমান্ডের (Congress High Command) পছন্দের তালিকার শীর্ষে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি রেবন্ত রেড্ডি (Revanth Reddy) থাকলেও বেশ কয়েকজন দাবিদার তাতে আপত্তি জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই ভোটে জয় হাসিল করার মূল কারিগর হলেও এই কারণেই রেবন্ত রেড্ডির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পিছিয়ে গেল।
আজ, মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) আনুষ্ঠানিকভাবে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। সকলেরই নজর রেড্ডির দিকে এবং গান্ধী পরিবারের (Gandhi Family) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও নেকনজরে থাকলেও জাতপাতের বিচারে অন্য দাবিদারদের বক্তব্য ফেলতে পারছে না হাইকমান্ড। তাছাড়া, তেলঙ্গানার (পূর্বতন অন্ধ্রপ্রদেশ) কংগ্রেসি রাজনীতিতে রেড্ডি নবাগত। বিভিন্ন দল ঘুরে কংগ্রেসে এসেই গুরুদায়িত্ব দিয়েছে তাঁকে দল। এনিয়েও অনেকের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসারে নৌবাহিনীর নাম পরিবর্তন হবে, ঘোষণা মোদির
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস রেবন্ত রেড্ডির নামই ঠিক করেছে। যা নিয়ে অন্য প্রবীণ নেতাদের প্রবল আপত্তি রয়েছে। মূল কারণ, অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের মেহবুবনগরে ১৯৬৯ সালে জন্ম তাঁর। সেই হিসেবে অনেকের থেকেই তিনি নবীন। ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদে। পরে তিনি যোগ দেন প্রবল কংগ্রেস-বিরোধী এবং দিল্লির গদি থেকে কংগ্রেস হটাও জোটের অন্যতম প্রবক্তা চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টিতে। ২০০৯ সালে টিডিপি-র টিকিটে কোড়াঙ্গল থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। ২০১৪-তে তেলুগু দেশমের পরিষদীয় নেতা নির্বাচিতও হন।
এরপর রাজ্য রাজনীতিতে ঢেউ বদলের সময় তিনিও কংগ্রেসে ভিড়ে যান ২০১৭ সালে। অর্থাৎ কংগ্রেসি রাজনীতিতে তিনি মাত্র ৬ বছর এসেছেন। পরের বছর তাঁকে প্রার্থী করা হলেও বিধানসভা ভোটে তিনি হেরে যান। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস রেবন্তের উপর আস্থা হারায়নি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তাঁকে মালকাজগিরি থেকে প্রার্থী করে এবং তিনি জেতেন। তার দুবছর পরেই অর্থাৎ ২০২১ সালে তাঁর উপর প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব তুলে দেয় হাইকমান্ড।
এইভাবে রেবন্ত রেড্ডির কপাল খুলে গেলেও রাজ্যের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতার দাবিতে ফের দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছেন অনেকেই। যে কারণে তাঁর শপথগ্রহণ পর্ব আটকে গিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল বুধ অথবা বৃহস্পতিতে শপথ অনুষ্ঠান হতে পারে। সেকথাও আজ জানিয়ে দিতে পারেন কংগ্রেস সভাপতি খাড়্গে।
কংগ্রেস নেতা উত্তমকুমার রেড্ডি, মাল্লু ভাট্টি বিক্রমার্ক, শ্রীধর বাবু এবং কোমাতি রেড্ডি ভাইরা মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির দাবি জানিয়েছেন এবং রেবন্ত রেড্ডিকে নেতা হিসেবে মানতে অস্বীকার করেছেন। হাইকমান্ড জানিয়ে দিয়েছে, কর্নাটকের ফর্মুলায় তাঁদের উপ মুখ্যমন্ত্রী পদ কিংবা শাঁসালো কোনও পদ দেওয়া হতে পারে। তবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে ১০ জনপথ। রবিবার ভোটের ফল বেরলেও ৬৪ জন বিধায়কের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেওয়াতেই শপথ অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়া হয়।
অন্য খবর দেখুন