কলকাতা: শীর্ষ আদালতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের সঙ্গে আচার্যের যে মামলা চলছে সে বিষয় নিয়ে এবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কড়া চিঠি উচ্চশিক্ষা দফতরের। চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, উপাচার্য সংক্রান্ত মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কত টাকা খরচ করছে? সেই খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির থেকে অনুমতিক্রমে নেওয়া হয়েছে কি না? বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট, রেগুলেশন বা স্ট্যাটিউট মেনে তা করা হয়েছে কিনা? মামলা লড়তে কত টাকা এখনো পর্যন্ত আচার্যকে দেওয়া হয়েছে? আইনজীবীদের যদি অর্থ দেওয়া হয়ে থাকে, তার পরিমাণ কত? বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে যে আইনজীবীরা মামলা লড়ছেন তারা সকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ আইনজীবী কি না? এই যাবতীয় বিষয় জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারদের কাছে এই চিঠি উচ্চশিক্ষা দফতরের।
চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রাজ্যের দেওয়া অর্থ, পড়ুয়াদের ফি এবং বিশেষ ফান্ডে চলে। তাই তার জবাবদিহি বিশ্ববিদ্যালয়কেই করতে হবে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে ওই জবাব তলব করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর। ঠিকঠাক উত্তর না মিললে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও স্পষ্ট বলা হয়েছে চিঠিতে।
এ বিষয় শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে লেখেন, উচ্চশিক্ষা বিভাগ জেনেছে, রাজভবন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, চ্যান্সেলারের হয়ে যেই আইনজীবীরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের পারিশ্রমিক বাবদ খরচ বিভিন্ন সরকারপোষিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তোলার জন্য। আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাদের বাজেটে অর্থ কমিটি-র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-ই একমাত্র যে কোনও খরচ করতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থোক ৫ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে, এই ধরণের কোন খরচা তারা দিয়েছে কি না! দেওয়া হয়ে থাকলে উচ্চশিক্ষা বিভাগের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না এবং কোন বাজেটের কোন খাত থেকে অর্থ কমিটির কোন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই টাকা দেওয়া হয়েছে। উত্তর এলে The West Bengal Universities (Control of Expenditure) Act 1976 অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আর যাই হোক, চাবুক চালিয়ে জমিদারি খাজনা আদায়ের তালুক হতে পারে না।
প্রসঙ্গত গত ১৭ অক্টোবর রাজভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চিঠি দিয়ে স্পষ্ট বলা হয়, উপাচার্য সংক্রান্ত যে মামলা রাজ্যের সঙ্গে চলছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে মামলার খরচ চালাতে হবে। এমনকী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য শান্তা দত্ত আচার্যকে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা স্বীকারও করেন।