কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘মিলিপিড’ অর্থ, যাদের হাজার পা আছে। কিন্তু, কেন্নোর প্রজাতি-ভুক্ত আজ পর্যন্ত যত মিলিপিডের সন্ধান মিলেছে, তারা (Eumillipes persephone) বহুপদ যুক্ত হলেও কারও আক্ষরিক অর্থে হাজার পা ছিল না। আদতে নামে কী আর যায় আসে! বিজ্ঞানীরা এই প্রথম এমন এক কেন্নো জাতীয় প্রাণীর (Millipede) হদিশ পেলেন, যার আক্ষরিক অর্থেই (Millipede) হাজার পা। তাই বলা যায়, ‘মিলিপিড’ নামের স্বার্থকতা এতদিনে মিলল। অস্ট্রেলিয়ার খনি অঞ্চলে, ভূগর্ভের অনেক গভীরে এই প্রাণীর সন্ধান মিলেছে। খনিগর্ভে ড্রিল (Eumillipes persephone) করার সময় অকস্মাৎ আবিষ্কার হয় প্রাণীটি। বিজ্ঞানীরা এই আবিষ্কারকে বলছেন, ‘বিবর্তনের বিস্ময়’!
বিজ্ঞানীদের চোখে কেন এটি বিস্ময়? অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, আজ পর্যন্ত তাঁদের জানা কোনও প্রাণী ছিল না, যাদের আক্ষরিক অর্থেই হাজার পদ বা পা রয়েছে। নতুন সন্ধান পাওয়া মিলিপিড প্রজাতির এই প্রাণীটির পায়ের সংখ্যা ১,৩০৬। কেন্নো প্রজাতির এই প্রাণীটি দেখতে অনেকটা সুতোর মতো। গায়ের রং ফ্যাকাশে। দৈর্ঘ্যে ৯৫ মিলিমিটার। অর্থাত্ প্রায় সাড়ে তিন ইঞ্চি। প্রস্থে ০.৯৫ মিলিমিটার। প্রাণীটির মাথার আকার অনেকটা শঙ্কুর মতো। চঞ্চু আকৃতির মুখ।
বিজ্ঞানীদের দাবি, হাজার পদ-এর এই প্রাণীটি চোখে কিন্তু দেখতে পায় না। প্রাণীটির এই শারীরিক গঠনগত দুর্বলতা ঢাকা পড়েছে শরীরে থাকা বড় অ্যান্টেনায়। এই অনুভূতি অঙ্গ দিয়েই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত হয়।
আরও পড়ুন: KMC Election 2021: ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা, ৫০ জায়গায় নাকা চেকিং
‘সায়েন্টিফিক রিপোর্ট’ নামে এক জার্নালে এ বিষয়ে বিশদ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ভার্জিনিয়া টেকের কীটতত্ত্ববিদ পল মারেক দাবি করেন, মিলিপিড বলা হলেও এর আগে ১০০০ পায়ের কোনও প্রাণী তাদের জানা ছিল না। সদ্য আবিষ্কৃত এই প্রাণীটির নাম তাঁরা দিয়েছেন ‘ইউমিলিপিস পারসেফোন’ (Eumillipes persephone)। পল জানান, অস্ট্রেলিয়ার খনি অঞ্চলের ২০০ ফুট (৬০ মিটার) গভীরে এই প্রাণীটির সন্ধান তাঁরা পেয়েছেন। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী মিলিপিডের পায়ের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা ১,৩০৬ পায়ের যে মিলিপিডটি পেয়েছেন তার পায়ের সংখ্যা ১,৩০৬।
এই আবিষ্কারের সঙ্গে জড়িত আর এক বিজ্ঞানী ব্রুনো বুজাত্তোর কথায়, ‘এটি অত্যাশ্চর্য প্রাণী, বিবর্তনের এক বিস্ময়!’ এত দিন পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া মিলিপিড প্রজাতিরই সবথেকে বেশি পা রয়েছে বলে জীববিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল। ক্যালিফোর্নিয়া মিলিপিডের পায়ের সংখ্যা সর্বোচ্চা ৭৫০। সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মিলিপিড। বিজ্ঞানীদের দাবি, ৪০ কোটি বছর আগেও পৃথিবীতে ছিল ধীরগতির মিলিপিড প্রজাতির এই প্রাণী।