Sunday, August 10, 2025
HomeআজকেAajke | মে দিবস

Aajke | মে দিবস

Follow Us :

ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হল অগাস্ট স্পাইজ, অ্যালবার্ট পারসন্স, জর্জ এনজেল ও অ্যাডলফ ফিশারকে। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েই অ্যালবার্ট পারসন্স বলতে শুরু করেন ‘হে আমেরিকার মানুষ, আমাকে বলতে দাও/ মহামান্য শেরিফ, আমাকে বলতে দিন, জনগণের কণ্ঠস্বর শোনা হোক…।’ কিন্তু ততক্ষণেই জল্লাদ সরিয়ে দিয়েছে পাটাতন। শহীদ হয়েছিলেন, শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টার দাবিতে আন্দোলনের নেতারা। জন্ম হয়েছিল এক দিবসের, মে দিবস। তার ২৪ বছর আগে হাওড়ায় রেল শ্রমিকদের আন্দোলন হয়েছিল। তখন দেশে সবে রেল এসেছে দেশে ব্রিটিশদের বদান্যতায়। বেশ কয়েকটা বিদেশি রেল কোম্পানি আমাদের দেশে রেললাইন পেতে বাণিজ্য করতে এসেছে। বাংলায় এসেছে মার্টিন রেল, হাওড়াতে জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে, রেল ইয়ার্ড তৈরি হয়েছে, এধারে ওধারে স্টিম ইঞ্জিন চলছে, ট্রায়াল রান আর কী। আর একটা রেলপথে ট্রেন চালুও হয়ে গেছে ১৮৫৪ র ১৫ অগাস্টে হাওড়া থেকে হুগলি, মাঝখানে বালি, শ্রীরামপুর আর চন্দননগরে স্টপেজ। বহু মানুষ কাজ পাচ্ছেন এই রেল সংস্থায়। কিন্তু কাজের সময়ের কোনও বাপ মা নেই, ১০ ঘণ্টা, ১২ ঘণ্টা, ১৪ ঘণ্টাও খাটানো হচ্ছে মানুষকে। কাজেই ধর্মঘট হল, এবং কী আশ্চর্য সেটাও মে মাসে, সোমপ্রকাশ বলে এক পত্রিকাতে ৫ মে সেই ধর্মঘটের খবর ছাপা হল। কিন্তু মার্টিন রেল মালিকরা এ দাবি খুব তাড়াতাড়ি মেনে নিয়েছিলেন। সপ্তাহ দেড়েক পরেই ৮ ঘণ্টার কাজের দাবি মেনে নেয় ব্রিটিশ মালিকরা। অবশ্য এরও অনেক আগে ১৮২৩-এ বাংলার পালকি বাহকেরা একই দাবিতে, মানে কাজের ঘণ্টার নিয়মের দাবিতে ধর্মঘট করেন। এর পরে ১৮৩৫-এ নদী পরিবহণ শ্রমিকেরাও কাজের নির্দিষ্ট সময়ের দাবিতে ধর্মঘট করেছিলেন। কিন্তু আমেরিকা, ১৮৮৬-র সভ্য আমেরিকাতে কেবল দাবি মানা হল না তাই নয়, আন্দোলনকারীদের ধরে ফাঁসিও দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল মে দিবস, শ্রমিক দিবস। কিন্তু ইতিহাস বলছে মে দিবসের লড়াই যদি কাজের নির্দিষ্ট সময়েরই লড়াই হয়, তাহলে তা শুরু হয়েছিল এই বাংলাতেই। আচ্ছা সেই বাংলায় আজ শ্রমিকদের কী অবস্থা? তাঁদের কাজের পরিমাণ আর সময়ের কী অবস্থা? 

হ্যাঁ, দেশের মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ সরকারি চাকরি করেন, তাঁদের পে স্কেল আছে, কাজের নির্দিষ্ট সময় আছে, তাঁদের জন্য বছর পাঁচেক পরে পরে পে কমিশন হয়। তাঁদের বছরে দু’ বার ডিএ বাড়ে, না বাড়লে তাঁরা ডিএ বাড়ানোর দাবি করেন। কিন্তু এই রাজার জামাইদের বাদ দিলে ছবিটা কেমন? এক মুটে মজুর বড়বাজারে, তার কাজের নির্দিষ্ট সময়? সে কাজ শুরু করে সকাল থেকে, তার কাজ চলতে থাকে রাত পর্যন্ত, তার কাজের পরিবেশ? সে নিয়ে যত কম বলা যায় তত ভালো। চটকলে শ্রমিকদের অবস্থা? মালিকরা যেই দেখে বেচার মতো প্রোডাকশন হয়ে গিয়েছে, ঠিক তখনই ইউনিয়নবাবুরা আন্দোলন শুরু করেন, ধর্মঘট ডাকেন, গেটের সামনে নোটিস পড়ে কারখানা বন্ধের। আবার ৪-৫ মাস পরে কারখানা খোলে, আবার প্রোডাকশন হয়, আবার বন্ধ হয়, একই রঙ্গ চলতেই থাকে। 

আরও পড়ুন: Aajke | হাকিম নড়ে গেল, হুকুম তো নড়েনি 

অসংগঠিত ক্ষেত্রে চূড়ান্ত শোষণ কেবল বাংলায় নয় দেশজুড়ে। কাজের বা চাকরির নিশ্চয়তা নেই, অন্য সুযোগ সুবিধে যা ছিল এখন সেগুলো কাটা হচ্ছে, হু হু করে বাড়তে থাকা বেকারত্বের ফলে মজুরি বা মাইনে বাড়ার বদলে কমেছে। কারণ চাকরির চেয়ে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ১০০০ গুণেরও বেশি। এমনকী রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হচ্ছে, সিকিউরিটি ইত্যাদির ক্ষেত্রে এজেন্সির কাছে দায়িত্ব চলে যাচ্ছে। আন্দোলন? না নেই। সরকারি চাকুরেদের ডিএ নিয়ে আন্দোলনের খবর কাগজের প্রথম পাতায়। তাহলে এই মে দিবস আমাদের দিলটা কী? এক নিটোল ছুটির দিন? কিছু পোস্টার? কিছু ঝলমলে বিজ্ঞাপন? মে দিবসের মূল লড়াই ঢাকা পড়ে গেল উদযাপনে, আড়ম্বরে। মে দিবসটা ঠিক কী? কী বলছেন রাজ্যের শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ? 

৮ ঘণ্টা শ্রম, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম আর ৮ ঘণ্টা আনন্দ, তার দাবিতেই তো মানুষ লড়েছিল, মানুষ ফাঁসিতে চড়েছিল। তার আগেই পারি কমিউন, ব্যর্থ বিপ্লব হলেও এক দিশা, লিবার্টি, ইকুয়ালিটি ফ্র্যাটারনিটির স্লোগান এনে হাজির করেছিল ১৮৭১-এ, এবং হে মার্কেটের আত্মত্যাগের ৩১ বছরের মাথায় ১৯১৭তে রাশিয়ার বিপ্লব। তারপরে পৃথিবীজুড়ে কমিউনিজমের উত্থান। শ্রমিক সংগঠনে কথা শুরু হল, সপ্তাহে দু’দিন ছুটির, ৪০ ঘণ্টা কাজের, বলা হল আরও কমাতে হবে কাজের সময়, মানুষকে সৃষ্টিশীল হয়ে ওঠার সময় দিতে হবে। কিন্তু সে পথে যাত্রার আগেই তাসের ঘরের মতো ভাঙল সোভিয়েত রাশিয়া। তারপরে ইস্ট ইউরোপ তারপরে গোটা পৃথিবীতেই সমাজতান্ত্রিক মত আর পথের পিছু হটা। কিন্তু কথা তো থেকেই যায়, তাঁরা তো চেয়েইছিলেন তেমন এক সময় আনতে যখন মানুষ রোজগারের জন্য আরও কম সময় দেবে, রোজগার যা হবে তাতে তাদের অনায়াসে দিন চলবে, সেই শ্রমজীবী মানুষ লিখবে নতুন সাহিত্য, নতুন কবিতা, তাদেরই হাত ধরে আসবে নতুন সিনেমা। আজ সবটাই ধোঁয়াশা, সবটাই কেমন উল্টোরথযাত্রা। তা না হলে তামিলনাড়ু সরকার যখন দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ আর সপ্তাহে তিন দিনের ছুটি নিয়ে আইন আনে, তখন কমিউনিস্টরাই তার প্রবল বিরোধিতায় নামে? জগন্নাথের, জনগণেশের সোজা রথ কবে পথচলা শুরু করবে কে জানে?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Nabanna Abhijan | ভা/ঙল ব‍্যারিকেড, তুলকালাম অবস্থা, দেখুন Live
02:48:15
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | পুলিশের লা/ঠি/র ঘা/য়ে জ/খ/ম নির্যাতিতার মা, দেখুন বড় খবর
01:08:58
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | নবান্ন অভিযানে ভা/ঙল ব্যারিকেড! তুলকালাম কাণ্ড
01:13:33
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | পার্কস্ট্রিটে পুলিশের লা/ঠিচা/র্জ, তারপর কী অবস্থা দেখুন
01:13:49
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | নবান্ন অভিযান ঘিরে ধু/ন্ধু/মার পরিস্থিতি সাঁতরাগাছিতে
01:01:18
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | Rekha Patra | পুলিশকে শা/সা/নি রেখা পাত্রর, তারপর কী হল? দেখুন
02:38:45
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | নবান্ন অভিযান ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা, তৈরি জলকামা/ন, ব্যারিকেডে আটকানো রাস্তা
03:57:14
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | নবান্ন অভিযানে এ কী অবস্থা? দেখুন Live
03:24:10
Video thumbnail
Nabanna Abhijan | RG Kar Incident | 'প্রতিবাদ মিছিলে আমি থাকব' নবান্নমুখী তামান্না খাতুনের মা
03:13:03
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
03:00:30