Tuesday, August 12, 2025
Homeআজকেপুজো, শুভেন্দু অধিকারী এবং ওঁর গরু হারানোর গল্প

পুজো, শুভেন্দু অধিকারী এবং ওঁর গরু হারানোর গল্প

Follow Us :

গরু হারানোর সেই পুরনো গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। গরু হারিয়েছে এমন এক চাষি এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরেছে তার গরুটার হদিশের জন্য। সে গরু কোথায় গেছে কে জানে, অতএব শ্রান্ত ক্লান্ত সে ঘরে ফিরেছে। ঘরে ঢুকতেই মেয়ে জিজ্ঞেস করেছে তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? চাষি বলছে ওগো গরুটার হদিশ পেলাম না। দূরে দাঁড়িয়েছিল চাষির বউ, সে মুখ ঝামটা দিয়ে বলেছে চোখের মাথা খেয়েছ, সামনে মেয়েটাকেও চিনতে পারছ না। চাষির সপাট জবাব, গরু হারালে ওরকমই হয় মা। হ্যাঁ, গরু হারালে ওরকমই হয়, হুঁশ থাকে না, কথার টাল থাকে না, কী বলতে কী বলে ফেলে। বঙ্গ বিজেপির দশা ঠিক তেমনিই। সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছেন, বিজেপির দফতরে নেতা-কর্মীদের এই বিক্ষোভ কেন? দলের রাজ্য সভাপতির ছবি পা দিয়ে মাড়িয়ে লাঠি লোহার রড হাতে নিয়ে এই বিক্ষোভ কেন? তো আমাদের কাঁথির খোকাবাবু বলেছেন, বিজেপি হল ফলভর্তি গাছ, তাই ঢিল পড়ছে। বোঝো কাণ্ড, ওনার দলের শাখে শাখে নাকি ফল ঝুলে আছে, নেতা-কর্মীরা নাকি সেই ফল পাড়তে ঢিল ছুড়ছেন। অন্য আর কোনও দলের গাছে ফল ঝুলছে না, কাজেই সেখানে ঢিলও পড়ছে না। এমন আহাম্মক যুক্তি শুনেছেন কখনও? দলের তিন নেতা তিন মুখো। রাজ্যে গত ২০২১-এর নির্বাচনের পর থেকে ৮ খানা উপনির্বাচনের প্রতিটিতে হার, বেশ কয়েকটাতে তৃতীয় স্থানে আছে দল। দলের বিধায়করা শাসকদলের প্রোগ্রামে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ধরনায় যোগ দিতে চলে যাচ্ছেন দিল্লি। বারবার ইডি জেরা, হানা, রেইড-এর পরেও তৃণমূলের দু’ নম্বর নেতার কেশাগ্রও ছোঁয়া যায়নি। দলের অধিকাংশ সাংসদ হাল ছেড়ে বসে আছেন, সেই দলের নেতা ভোকাল টনিক দিচ্ছেন, দল নাকি ফলগাছ, ফল তুলতে নেতা-কর্মীরা ঢিল ছুড়ছে। সে প্রকাশ্যে গরু হারিয়েছে মা গোছের যাই বলুন আপাতত জান মান সন্মান বাঁচানোর জন্য নজর অমিত শাহের বাংলা সফরের দিকে। সেখানেও না ফলন্ত গাছে ঢিল পড়ে, তাহলে প্রেস্টিজে গ্যামাক্সিন লেগে যাবে। সেটাই বিষয় আজকে। পুজো, শুভেন্দু অধিকারী, অমিত শাহ এবং আমাদের বাংলা।

আগমার্কা জঙ্গি কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ঘোষের সুযোগ্য পুত্র এখন বিজেপিতে। আসা ইস্তক নিজের জঙ্গি মেজাজ আর অনর্গল কথা বলার ক্যারিশমা দিয়ে বিজেপির নেতাদের চোখ কেড়েছেন। তার ওপরে আবার তাঁর পৈতৃক সূত্রেই পাওয়া সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো আছে। সেখানে এবার অযোধ্যার রামমন্দির, এবং সেই পুজোর উদ্বোধক দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ পর্যন্ত তো ঠিকই ছিল কিন্তু খবর বা যাকে বলা যায় খবর ফ্রম হর্সেস মাউথ, তা হল সেখানেও নাকি ওই ফল পাড়তে ঢিল পড়বে। মানে এক কেলোর কীর্তি, এবং তা সামলাতে নেমে পড়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা।

আরও পড়ুন: আমাদের রাজ্যপাল বোস এবং অঞ্জন দত্তের কিসসা

সুকান্ত বলেছেন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে, অনুপ বলেছেন তা হলে পাঁচটা আসনও থাকবে না, দিলীপ ঘোষ বলেছেন আমাকে রেস কোর্সে যেতে বলা হয়েছে, অমিত জির হেলিকপ্টার ওখানেই নামবে। কিন্তু সেখান থেকে পুজো উদ্বোধনে যেতে হবে বলে আমাকে কেউ জানায়নি। শুভেন্দু যে সজল ঘোষ নিয়ে খুব স্বস্তিতে তাও নয়, কিন্তু এ হল নব্য বিজেপির ভাগ, কাজেই তিনি যোগ দেবেন। সব মিলিয়ে ফলন্ত গাছে এলোমেলো ঢিল পড়া শুরু হয়েই গেছে। যদি সেই মুহূর্তে মানে ওই উদ্বোধনের সন্ধিক্ষণে ঢিল পড়ে তাহলে কেলেঙ্কারি, কাজেই তিনি তাঁর সর্বশক্তি দিয়ে অন্তত সেদিনটা ম্যানেজ করার জন্য চেষ্টা করে গেছেন। যাঁরা যাঁরা সেদিনের বিক্ষোভে ছিলেন তাঁদের নাম ধাম জড়ো করা হয়েছে। তিনজন নেতাকে ভার দেওয়া হয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার, দিনের দিন যাতে কিছু না হয়, মানে ঢিল না পড়ে। অন্যদিকে অমিত শাহ এসেছেন কলকাতায় ওই পুজোর উদ্বোধনে, যে পুজো উদ্বোধনে হাজার মাইল এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তৃণমূল নেতারা। এক কার্নিভালেই কুপোকাত হবে সব আয়োজন, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সেই কার্নিভালে থাকবে? দেশজুড়ে বিজেপির এক ন্যারেটিভ ছড়ানোই আছে যে মমতা বাংলায় পুজো করতে দেয় না, না বাংলায় একথা বলা হয় না। কিন্তু দেশপ্রিয় পার্কের ওই পুজো বন্ধ করার নির্দেশকে দেশের মানুষের সামনে বাংলার পুজো বন্ধ করার বিরুদ্ধে ফরমান বলেই জানানো হয়েছিল। গোরখপুরে গোরখনাথের মন্দিরে এক পুরোহিত আমাকে বলেছিলেন, বংগাল সে হো, ওয়াহা তো মমতা ব্যানার্জি পূজা নহি করনে দেতে হ্যায়। হাঁ করে শুনেছিলাম। আজ সেই দুর্গাপুজো উদ্বোধনে স্বয়ং অমিত শাহ এসেছেন কলকাতায়, এও এক বিড়ম্বনা বইকী। আমরা আমাদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, বাংলা জুড়ে বিজেপির দফতরে নেতাদের হেনস্থা, রাজ্য সভাপতির ছবি জুতো দিয়ে মাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটছে, শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন এতেই বোঝা যায়, বিজেপি মানুষের কাছে ভরসাযোগ্য হয়ে উঠেছে, আপনারাও কি তেমনটাই মনে করেন?

ওদিকে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন নিয়েও একই রকম গরু হারানোর প্রতিক্রিয়া। প্রথমে শুভেন্দু জানালেন ওসবে আমরা নেই, সরকার যা করে করুক। তারপরে পয়েন্ট কাটা যাচ্ছে বুঝে বললেন আমরা যাব। গেলেনও। কিন্তু এক মজার কথা বলেছেন। বাংলার বহু হিন্দু মানুষজন নাকি নবরাত্রির জন্য এই সময়ে নিরামিষ খান, উপোস করেন, তার মধ্যে এই অধিবেশন কেন ডাকা হল? ভাবতে পারেন? এক বাঙালি বলছে এটা নবরাত্রি উৎসব? নবরাত্রি পালন? এইসময় জুড়ে নিরামিষ খাবে বাঙালি? কী আর করা যাবে? যার গরু হারিয়েছে, তার আবোল তাবোল কথা ইগনোর করাই উচিত। আপাতত শুভেন্দু যা বলবেন, তাতে কান না দিলেও চলবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Bangladesh | বাংলাদেশে নির্বাচন কবে? দেখুন বিরাট আপডেট, কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00
Video thumbnail
Supreme Court | DA মামলার শুনানি মুলতুবি সুপ্রিম কোর্টে, ফের শুনানি কবে? দেখুন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Amit Shah | রাজ্য বিজেপি কর্মীদের কড়া নির্দেশ অমিত শাহর, কী কী নির্দেশ? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | সাংসদদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক করবেন অভিষেক, কী কী বিষয়ে আলোচনা?
00:00
Video thumbnail
Supreme Court | SIR-মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিরাট প্রশ্নের মুখে কমিশন! দেখুন কী হল আজ শুনানিতে
00:00
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | লোকসভা ভেঙে ফের ভোট?
00:00
Video thumbnail
Bangla Bolche | Shamim Ahmed | বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে নির্বাচন কমিশন?
04:00
Video thumbnail
ঘোষাল নামা | Ghosal Nama | নাগরিকত্ব বিতর্কে কী বলল সুপ্রিম কোর্ট? দেখুন ঘোষালনামা
05:27
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | উত্তর দিনাজপুরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক শেষ, কী কী নির্দেশ অভিষেকের?
01:23:25
Video thumbnail
India-Pakistan | পাকিস্তানের প/রমা/ণু হু/ম/কি, কী বলল ভারত? শুনে নিন জয়ন্ত ঘোষালের বিশ্লেষণ
01:27:05