Thursday, June 19, 2025
HomeScrollAajke | জুতো মেরে গরু দান, চটি ছুড়ে ক্ষমা?
Aajke

Aajke | জুতো মেরে গরু দান, চটি ছুড়ে ক্ষমা?

চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার

Follow Us :

স্নেহের মতো ক্ষমাও এক বিষম বস্তু। আর ইংরিজিতে হলে তো কথাই নেই। একটা গোটা স্কুলের শ’দেড়েক ছাত্রছাত্রীদের ওপর মিসাইল দেগে দেওয়ার পর আমেরিকা বলেছিল সরি, আমরা ভেবেছিলাম ওটা উগ্রপন্থীদের ডেরা। অতএব, আর কোনও প্রশ্ন নয়। কারণ সব্বাই জানেন ক্ষমা পরম ধর্ম। আসলে এই ক্ষমা ব্যাপারটাকে বহু ধর্মেই বহুভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শ্রী কৃষ্ণ তো এই ব্যাপারে এক্কেবারে মাপকাঠি দিয়ে রেখেছেন। শিশুপালের ১০০টা অন্যায় তিনি ক্ষমা করবেন বলেছিলেন। তারপর থেকে আমরা তো গুনিনি, কিন্তু কৃষ্ণ গুনেছিলেন। গুনে গুনে ১০০টা অন্যায় ক্ষমা করে দেবার পর ১০১ নম্বরে ঘ্যাচাঁং! হ্যাঁ সুদর্শন চক্র দিয়ে মাথাটা কেটে ফেললেন।

ওদিকে অসুররাজা বালী তাঁর ঠাকুরদা প্রহ্লাদকে জিজ্ঞেস করছেন, “ক্ষমা কী? ক্ষমা কি পরম ধর্ম?” বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদ বলছেন, যদি তুমি খুব সহজেই ক্ষমা করে দাও, তাহলে মানুষ তোমাকে হালকাভাবে নিতে শুরু করবে। খুব সহজেই ক্ষমা করার বিপদের মধ্যে রয়েছে তোমার নিজের লোক, তোমার শত্রু এবং সাধারণ মানুষের তোমাকে সম্মান না করা। ওদিকে তুলসীদাস তাঁর ‘রামচরিতমানস’-এ লিখছেন, যে অপরাধ করে এবং তারপর ভান করে যে সে অজান্তেই এটা করেছে, তাকে সর্বদা শাস্তি দিন। এমন একটি ছোট অপরাধেরও কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু ক্ষমা নিয়ে এত কথা কেন? কথা উঠেছে কারণ এই বঙ্গের বিজেপি সভাপতি আবারও ক্ষমা চেয়েছেন। প্রথমে চটি ছুড়ে মেরেছেন, তারপর ক্ষমা চেয়েছেন। সেটাই বিষয় আজকে, জুতো মেরে গরু দান, চটি ছুড়ে ক্ষমা?

মোদিজির জুতো সম্ভবত ইতালি থেকে আসে, তার দাম জানা নেই, জানার ইচ্ছেও নেই। আমাদের এই বঙ্গের বিরোধী দলনেতা স্নিকার পরেন, তা সাত আট হাজারের তো বটেই। বিধান রায় থেকে জ্যোতিবাবু থেকে বুদ্ধ ভাট্টাচার্য পাম্প শু পরতেন। জ্যোতিবাবুর পাম্প শু’তে চেষ্টা করলে মুখ দেখা যেত। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের অজস্র জুতো ছিল। টেনিস খেলার সময়, ধুতি পাঞ্জাবি পরে, ক্রিকেটের মাঠে, পুরো দস্তুর সাহেবি পোশাকে সিদ্ধার্থবাবুর জুতোর কালেকশন ছিল দেখার মতো। সমস্যা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। হাওয়াই চটি পরেন, নীল সাদা হাওয়াই চটি। এহেন এক সৃষ্টিছাড়া চটি নিয়ে সিপিএম থেকে বিজেপি ভারী বিপদে। তাঁদের এক চলতি বিরোধিতার লব্জ হল চটি-চাটা। মানে পাম্প শু চাটা বা স্নিকার চাটা বা হাস পাপির চপ্পল চাটা হলেও চলবে, চটিচাটাতে ওনাদের আপত্তি। কংগ্রেস এ নিয়ে তেমন সরব নয় কারণ এদেশে আরেকজন, মাত্র আরেকজন রাজনৈতিক নেতাকেই আমি প্রকাশ্যেই হাওয়াই চটি পরতে দেখেছি, তিনি হলেন রাহুল গান্ধী।

আরও পড়ুন: Aajke | সন্দেশখালি, নির্বাচনের আগে রেখা পাত্রও কি তৃণমূলে চলে আসতে পারেন?

তো যাই হোক, আমরা সিপিএম বিজেপির ভোট ভাগাভাগির ঐক্যের মতোই এই চটি বিরোধিতার ঐক্য তো দেখেছি, এবার সেই বিরোধিতার মধ্যেই বঙ্গ বিজেপি দুধুভাতু সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সেই প্রতিকী হাওয়াই চটি ছুড়ে দিলেন। শিখ সম্প্রদায়ের এক পুলিশ কর্মীর মাথায় হাওয়াই চটির কাটআউট ছুড়ে স্বাভাবিক কারণেই বিপাকে সুকান্ত মজুমদার। বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনি প্যাঁচেও পড়েছেন। প্রথমে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে এড়িয়ে যাবার একটা চেষ্টা করেছিলেন, তারপর সে ছবি ভাইরাল, শিখ সমাজের বিক্ষোভ। অবশেষে চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে সুকান্ত লেখেন, উত্তেজনার বশে তিনি ওই ঘটনা ঘটান। উত্তেজনা? কিসের উত্তেজনায় তিনি হাতে প্রতিকী হাওয়াই চটি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে গিয়েছিলেন? কোন উত্তেজনায় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে সেই চটি নিয়ে পোজ দিয়েছিলেন এবং তারপর তা ছুড়ে দিয়েছিলেন? তিনি একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, এবং খুব ভালো করেই জানতেন যে ওনাকে ধরা হচ্ছে, লালবাজারে নিয়ে গেলেও এসি ঘরে বসানো হবে আর মিনিট দু’তিন পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাহলে উত্তেজনাটা কীসের? এই একটা বিক্ষোভ অভিযানের পরেই মমতা সরকার পড়ে যাবে তাও তো নয়? তাহলে? আসলে কর্মীদের সামনে নৌটঙ্কি। মানে এটা হল সেই অপরাধ যা জেনেবুঝে করা হয়েছিল, শিখ মানুষজন এত সহজে ক্ষমা করবেন বলে তো মনে হয় না। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, সুকান্ত মজুমদার নাকি উত্তেজনার বশে প্রতিকী হাওয়াই চটি ছুড়ে মেরেছেন শিখ পুলিশের মাথায়, লেগেছে তার পাগড়িতে। তারপরেই তিনি অবশ্য ক্ষমা চেয়েছে। অনেকেই বলছেন এ যেন জুতো মেরে গরুদান, আপনারা কী বলছেন?

সুকান্ত মজুমদার এর আগেও বেশ কবার ক্ষমা চেয়েছেন। একবার তো ক্ষমা চেয়েছিলেন দলের কর্মীদের কাছে। নির্বাচনের পরে মার খাওয়া দলের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে পারেননি বলে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এর আগেও তিনি আলটপকা মন্তব্য করেছিলেন, যার জন্য ওনার কাছ থেকে ক্ষমা দাবী করেছিলেন তৃণমূলের নেতা সমেত অনেকে। তিনি বলেছিলেন পরে গীতা আগে খেলা গোছের বামপন্থী কথাবার্তা আমরা সহ্য করব না। ওনার অধ্যাপক জীবনে হয় তো বিবেকানন্দ পড়া হয়ে ওঠেনি। হিন্দু শাস্ত্র পড়েছেন? মনে তো হয় না। হিন্দু শাস্ত্রে বলা আছে শরীরমাদ্যং খলু ধর্ম সাধনম। মানে শরীর আগে, ধর্ম সাধনা তার পরে। বিবেকানন্দ বলেছিলেন গীতা পড়ার আগে শরীর গঠন কর, ফুটবল খেল। এসব চর্চা সুকান্ত মজুমদারের নেই, আর পড়াশুনো না করার জন্য, এক্সট্রা টু-এ-বি খুঁজে পাওয়ার জন্য কেউ কোনওদিন ক্ষমা চেয়েছে বলে তো আমার জানা নেই।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | এবার টুকরো হবে, ইজরায়েলকে আকাশেই চরম জবাব ইরানের, কোথায় পালাবেন নেতানিয়াহু?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | পুতিনের সমর্থনে চাঙ্গা খামেনি, ট্রাম্পকে চরম হু/ঙ্কার, ইজরায়েলের কী অবস্থা করবে ইরান?
00:00
Video thumbnail
100 Days Work | ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, দেখুন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইজরায়েলকে সমর্থন ট্রাম্পের ইরানকে সমর্থন পুতিনের, তৃতীয় বিশ্বযু/দ্ধ লেগেই গেল!
00:00
Video thumbnail
Politics | বিজেপিই ভরসা সব দাগ ফরসা
03:30
Video thumbnail
Politics | বিজেপি মেতেছে তরজায় আরএসএস 'পাড়ায় পাড়ায়'
03:22
Video thumbnail
Politics | ট্রাম্পের দাবীকে এবার বাতিল করল সরকার
03:50
Video thumbnail
Bangla Bolche | ব/ঞ্চনার ইতিহাসের শিকার বাংলা?
03:44
Video thumbnail
Bangla Bolche | ব/ঞ্চনা কি শুধু বাংলাকেই?
03:13
Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | এবার টুকরো হবে, ইজরায়েলকে আকাশেই চরম জবাব ইরানের, কোথায় পালাবেন নেতানিয়াহু?
05:18:55