টানা দশ ম্যাচে অপরাজিত এটিকে মোহনবাগান মঙ্গলবার বাম্বোলিমের অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে এফ সি গোয়ার। গত ম্যাচে গোয়া দুর্দান্ত খেলে ৫-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে চেন্নাইয়ান এফ সি-কে। পাঁচ গোলের মধ্যে তিন গোল আবার জর্জ ওর্তিজের। আই এস এল-এ এটি তাঁর প্রথম হ্যাটট্রিক। তবে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো এ সব নিয়ে একেবারেই ভাবিত নন। তিনি এখন লিগ টেবলে এক নম্বরে ওঠার স্বপ্নে মশগুল। চোদ্দ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে মোহনবাগান আছে এখন দু নম্বরে। এক নম্বরে আছে হায়দরাবাদ এফ সি। তাদের ১৬ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট। গোয়াকে হারাতে পারলে মোহনবাগান এক ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ টেবলের এক নম্বরে পৌছে যাবে।
এফ সি গোয়া জুয়ান ফেরান্দোর পুরনো টিম। সেখান থেকেই তিনি এবারের লিগের মাঝ পথে এসেছেন বাগানে। টিমটাকে তিনি নিজের হাতের তালুর মতো চেনেন। ষোল ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গোয়া আছে নয় নম্বরে। এ রকম একটা টিমের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারেন জুয়ান। তাঁর হাতে রয়েছে দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকা একটা টিম। যে টিমের কে আহত তার উপর পারফরম্যান্স নির্ভর করে না। আগের ম্যাচে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে হুগো বুমো, কার্ল ম্যাকহিউ, রয় কৃষ্ণ কিংবা ডেভিড উইলিয়ামসরা খেলেননি। তাতেও খালিদ জামিলের টিমকে ৩-১ গোলে হারাতে অসুবিধে হয়নি জুয়ানের। আই এস এল-এ প্রথম গোল পেয়েছেন ফিনল্যান্ড তারকা জনি কাউকো। নিজে গোল লরে এবং লিস্টন কোলাসোকে দিয়ে গোল করিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন কাউকো। পর পর পাঁচটা ম্যাচ পরিবর্ত হিসেবে নামার পর নর্থ ইস্ট ম্যাচেই শুরু থেকে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন কাউকো। এবং ম্যাচের সেরা হয়েছেন। এর থেকেই বোঝা যায় মোহনবাগান টিমের গভীরতা কত।
ডিফেন্সে সেন্টার ব্যাক সন্দেশ ঝিঙ্গন নর্থ ইস্ট ম্যাচে বিরতির পরে নেমেছিলেন। মঙ্গলবার তিনি যদি মাঠে নামেন তা হলে সেটা হবে আই এস এল-এ তাঁর শততম ম্যাচ। এবং সেক্ষেত্রে দেখার তিরির পাশে তাঁকে শুরু থেকে্ নামানো হবে কি না। কারণ ডিপ ডিফেন্সে প্রীতম কোটাল এবং তিরি জুটি কিন্তু টানা দশ ম্যাচে টিমকে অপরাজিত রেখেছেন। সন্দেশকে ঢোকাতে গিয়ে জুয়ান কি ডিফেন্সের কম্বিনেশন ভাঙবেন। সে ক্ষেত্রে প্রীতম কি আবার ফিরে যাবেন তাঁর রাইট ব্যাক পজিশনে? উত্তর অজানা। কারণ টিম কম্বিনেশন কী হবে সে সম্পর্কে সাংবাদিক সম্মেলনে কোনও কথা বলেননি জুয়ান। তবে তিনি বলুন কিংবা না বলুন লিস্টন কোলাসো যে তাঁর জীবনের সেরা ফর্মে আছে তা বলা যায়। সাতটি গোল হয়ে গেছে এই গোয়ান উইঙ্গারের। রয় কৃষ্ণের অভাব তিনি বুঝতে দিচ্ছেন না কিছুতেই। কৃষ্ণ এখন ফিট হয়ে গেছেন। কোচ চাইলেই তিনি মাঠে নামতে পারেন। গোয়ার বিরুদ্ধে তিনি নামলে ভাল। কিন্তু লিস্টন থাকায় হা কৃষ্ণ, জো কৃষ্ণ করতে হচ্ছে না মোহনবাগানকে। বিকল্প ফুটবলার বেশি করে হাতে মজুত থাকায় এবং তাদের চমৎকারভাবে ব্যবহার করতে পারায় মোহনবাগানে কোনও সমস্যা নেই।
গোয়ার কোচ ডেরেক পেরেরা ভারতীয় ফুটবলে বড় নাম। দীর্ঘ দিন কোচিং করাচ্ছেন ভারতীয় সার্কিটে। মাঝ পথে জুয়ান ফেরান্দো টিম ছেড়ে চলে আসায় বেশ অসুবিধেয় পড়ে গিয়েছিল গোয়া। ডেরেক তা সামলে দিয়েছেন। বাকি চারটে ম্যাচ জিততে পারলে তাঁর দল হয়তো প্লে অফ-এ যাবে না। কিন্তু বেশ সম্মানজনক জায়গায় গিয়ে শেষ করতে পারবে। তাই মোহনবাগানকে সহজে ম্যাচ ছাড়বেন না বলেই মনে হয় ডেরেক। চেন্নাইকে ৫-০ হারাবার মধ্য দিয়েই পরিষ্কার গোয়া কিন্তু মঙ্গলবার লড়াই দিতে প্রস্তুত। তাই ফুটবলপ্রেমীরা একটা ভাল ম্যাচ দেখার প্রত্যাশা করতেই পারেন।