টানা দশ বার বুন্দেশলিগা জেতার দিকে যাচ্ছে তারা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে ছয় বার। শেষ বার ২০২০ সালে। এই রকম একটা বিশ্বের অন্যতম সেরা দলকে নিজেদের মাঠে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বিরাট অঘটন ঘটিয়ে দিয়েছে স্পেনের ভিলারিয়াল। মঙ্গলবার সেই অঘটনের জবাব দেওয়ার পালা এবার বায়ার্ন মিউনিখ। গত বুধবার কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ভিলারিয়াল নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল বায়ার্নকে। ভাগ্য তাদের একটু বেশি সাহায্য করলে তারা ম্যাচটা আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত। বায়ার্নের নিজের মাঠে ১-০ ব্যবধানটা একটু কম হয়ে গেছে। বায়ার্ন নিজেদের মাঠে বুন্দেশলিগার ম্যাচে গত পাঁচটি খেলায় সতেরোটি গোল করেছে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত চারটি ম্যাচে করেছে কুড়িটা গোল। এক গোলে পিছিয়ে থেকেও মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে বায়ার্ন তাই ফেভারিট।
তবে ভিলারিয়ালের কোচ উনাই এমেরি বলে দিয়েছেন,” মঙ্গলবার আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটা খেলতে যাচ্ছি। আমরা সবাই জানি বায়ার্ন খুবই ভাল টিম। কিন্তু ওদেরকেও যে হারানো যায় তা তো আমরা দেখিয়ে দিয়েছে। আরও একবার সেটা হলে অসুবিধে কী আছে?” ভিলারিয়াল গত বছর ইউরোপা লিগ জিতেছিল ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে। এ বছর লা লিগায় তারা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবং রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হারেনি। ২০০৬ সালে তারা শেষ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলেছিল। মঙ্গলবার বায়ার্নকে হারালে তারা আবার সেই সম্মান লাভ করবে।
ভিলারিয়ালের এক নম্বর ফরোয়ার্ড জেরার্ড মোরেনো বলেছেন, ” আমরা মিউনিখে বেড়াতে যাচ্ছি না। সেটা মাঠে নেমেই আমরা প্রমাণ করব।” বায়ার্ন মিউনিখের এই টিমে গোল করার এত প্লেয়ার আছে যে তারা কখন গোল পাবে সেটাই প্রশ্ন। রবার্ত লেওনডস্কি এবং টমাস মুলারের মতো বিধ্বংসী স্ট্রাইকারের পাশাপাশি সার্জ নাব্রি, লেরয় সানে, কিংসলে কোমান কিংবা জসুয়া কিমিচ আছেন যাঁরা গোল করতে পারেন। তাই তাদের কোচ জুলিয়েন নাগলসম্যান বলতেই পারেন, “গত ম্যাচে আমরা হেরেছি আমাদের দোষে। আমরা কিছুই খেলতে পারিনি। আশা করি একই ভুল প্লেয়াররা প্রতিদিন করবে না।”
মঙ্গলবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের অন্য ম্যাচে তেরো বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের মাঠে খেলবে গত বারের চ্যাম্পিয়ন চেলসির বিরুদ্ধে। প্রথম লেগে রিয়াল ৩-১ গোলে জিতে এসেছে চেলসির বিরুদ্ধে। হ্যাটট্রিক করেছিলেন করিম বেঞ্জামা। তাই নিজেদের মাঠে রিয়াল যে ফেভারিট হিসেবে নামবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চেলসি কি পারবে দু গোলের ব্যবধান ঘুচিয়ে ম্যাচ বের করতে? সম্ভাবনা কম। কারণ বিভিন্ন কারণে এই বছরটা চেলসির ভাল যাচ্ছে না। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগেও তারা আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে নেই। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও নিজেদের মাঠে তিন গোল খেয়ে বসে আছে রিয়ালের কাছে। তবু চেলসির জার্মান কোচ টমাস টুচেল বলেছেন, “আমরা এখনও নব্বই মিনিটের লড়াই করার জায়গায় আছি। জানি খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের ম্যাচটা খেলতে হবে। রিয়াল বরাবরের শক্তিশালী দল। তবে আমরা লড়াগি ছাড়ছি না।” রিয়ালের কোচ কার্লোস আনসোলেত্তি বলেছেন, ” আমরা কখনও ভাবছি না যে জিতে গিয়েছি। আমরা খোলা মনেই খেলব। জেতার চেষ্টাই করব। আমাদের ছেলেরাও নিজেদের মাঠে ম্যাচটা জিততে চায় নিজেদের সমর্থকদের সামনে।” রিয়ালের অধিনায়ক করিম বেঞ্জামা, যিনি চেলসির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে এসেছেন গত সপ্তাহে বলেছেন,” ম্যাচটা কিন্তু এখনও শেষ হয়নি। মঙ্গলবার যদি আমরা জিততে পারি তারপর শেষ হবে। তবে একটা কথা বলতে পারি জেতা ছাড়া আমরা কিছু ভাবছি না।” রিয়ালের লুকা মদ্রিচ, টনি ক্রূস, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, কাশেমিরো কিংবা ইস্কোর পাশাপাশি কিন্তু গ্যারেথ বেল কিংবা মাসের্লোরা আছেন যাঁরা গত ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি। তাই কোনও ভাবেই রিয়ালের শক্তিকে ছোট করা যাবে না। নিজেদের মাঠে তাই চেলসিকে না হারাতে পারলেই সেটা হবে বিরাট অঘটন। করিম বেঞ্জামারা আর অঘটন দেখতে চান না।